মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত করা হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ নারী নীতিমালা নিয়ে জাতীয় সেমিনারে শীর্ষ আলেম-রাজনীতিকরা ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ শান্তি বয়ে আনতে পারে না: আমীরে জামায়াত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

‘তিনি আর কোনো দিন ফোন দিয়ে দীর্ঘ সময় কথা বলবেন না!’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জহির উদ্দিন বাবর।।

যে কজন প্রবীণ আলেম লেখকের স্মৃতি জীবনের বড় অর্জন বলে মনে করি তাদের একজন মাওলানা ইসহাক ওবায়দী। প্রায় ১৫ বছর আগে মাসিক যমযম সূত্রে পরিচয়। এরপর থেকে অগণিত ঘনিষ্ঠ স্মৃতি রয়েছে তাঁর সঙ্গে। আমি যখন দারুর রাশাদে ছিলাম, সেখানে তাঁর বড় ছেলে আব্দুল্লাহ ভাইও শিক্ষকতা করেছেন কিছু দিন। ছেলে থাকা অবস্থায়ও যে কয়বার গেছেন, প্রতিবারই আমাকে ফোন করে মেহমান হতেন। খুবই মিশুক প্রকৃতির একজন মানুষ ছিলেন। জানাশোনা আর অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ জীবনের নানা গল্প অনর্গল করতেন। আমরা মুগ্ধ হয়ে সেই গুল্প শুনতাম।

মাঝে বেশ কয়েক বছর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে লেখকপত্রের সাক্ষাৎকারের জন্য ছুটে গেলাম তাঁর গ্রামের বাড়িতে। সেই নোয়াখালীর সেনবাগের মজদিপুর গ্রামে। সঙ্গে ছিলেন হেলাল উদ্দিন ও মিযানুর রহমান জামীল। দুই-তিন ঘণ্টা মুগ্ধ হয়ে আমরা শুনলাম তাঁর জীবনের গল্প। তখন বয়স ৭২ বছর। কিন্তু তাঁর স্মৃতিশক্তি, জানাশোনা আর অভিজ্ঞতার কথা শুনে নতুন করে মুগ্ধতা সৃষ্টি হয়। লেখকপত্রে সেই সাক্ষাৎকারের একটি অংশ ছাপা হয়। বাকিটা আলেম লেখকদের আত্মজৈবনিক সাক্ষাৎকারের ওপর প্রকাশিতব্য বইয়ে থাকবে।

মূলত তিনি অনেকটা দৃষ্টির আড়ালেই চলে গিয়েছিলেন। আমরা লেখকপত্রে সাক্ষাৎকার ছাপার পর অনেকেই তাঁকে নতুন করে আবিষ্কার করেন। তিনিও যেন হারিয়ে যাওয়া অনেককে নতুন করে আবিষ্কার করেন। ইসলামী লেখক ফোরামের কয়েকটি স্মারক তাঁকে হাদিয়া দেওয়া হয়। সেই স্মারকে থাকা লেখকদের ফোন নাম্বার পেয়ে অনেক তরুণ লেখকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন, তাদেরকে নানাভাবে উৎসাহিত করেন।

এক কথায় একজন অমায়িক মানুষ ছিলেন। অনেক বিশিষ্টজনের সান্নিধ্য পেয়েছেন। হাফেজ্জী হুজুর রহ.-এর প্রেস সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেছেন কিছু দিন। তাঁর অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ লিখনিগুলো মাসিক পত্রিকার শ্রী বাড়াতো প্রতি মাসে। দীর্ঘকাল ঢাকায় কাটিয়ে জীবনের শেষ সময়টা কাটিয়েছেন সেই অজপাড়াগাঁয়ে। একদম নীরবে-নিভৃতে। কিন্তু দেশ-কাল-জাতি নিয়ে তাঁর ভাবনার কোনো অন্ত ছিল না। মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে নানা বিষয়ে কথা বলতেন। বিস্মিত হতাম, তিনি গ্রামে অবস্থান করেও কীভাবে এতো খোঁজখবর রাখেন।

মাত্র সে দিন তাঁর সঙ্গে কথা হলো। দীর্ঘ আলাপ। যেন ফোন ছাড়তেই চান না! সেই মানুষটি আর কোনো দিন ফোন দেবেন না, লম্বা সময় কথা বলবেন না। মোবাইলে সেভ করা দুটি নাম্বারই হয়ত ডিলিট করে দিতে হবে- এটা ভেবে কষ্ট লাগছে। দোয়া করি, আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করুন। আমিন।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম।

এনটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ