আপনাদের গা জ্বলাজ্বলিতে কওমিওয়ালাদের কিছু যাবে আসবে না
প্রকাশ:
২৭ মে, ২০২৫, ০৪:১৫ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
|| সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর || প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে গত ২৫ মে ২০২৫ তারিখে বৈঠক করেছেন সমমনা ইসলামি দলগুলোর প্রধান নেতৃবৃন্দ। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নেতৃবৃন্দের ছবি মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ার পর গা-জ্বালা শুরু হয়েছে একশ্রেণির লোকের। নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক সমকামী তাসনিম খলিল প্রধান উপদেষ্টার ছবি ব্যাঙ্গ করে তাকে ‘কওমি-বাপ’ বলে উপহাস করেছেন। আলেম-উলামাদেরকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণ করতে দেখলে যাদের এই ধরনের গা-জ্বালা স্বভাব, আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, রক্ত-উত্তাল ৫ আগস্টের আগে যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, উত্তরায় নিশ্ছিদ্র ব্যারিকেড তৈরি করে ঢাকাকে অচল করে দিয়েছিল যারা, তাদের বৃহৎ অংশ ছিল এই কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ আলেম সমাজ। জুলাই বিপ্লবে শুধুমাত্র কওমি মাদরাসার শহীদ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০-এর অধিক। আহত হয়েছেন আরও আরও কয়েক শতাধিক। এই পরিসংখ্যানটা মগজে গেঁথে রাখেন। ড. ইউনূসের সংস্কার প্রস্তাবে সর্বোতভাবে সমর্থন দিয়েছেন যারা, তারা এই আলেম-উলামাদের দল এবং কওমি মাদরাসাকেন্দ্রিক সংগঠন ও ব্যক্তিরা। হাসনাত আবদুল্লাহ যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ডাক দিয়ে যমুনার সামনে ও শাহবাগে অবস্থান নিল, তখন সেই গণজোয়ারের সিংহভাগ ছিল কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে নাই। প্রশাসনের নানা কন্সপিরেসি আর ষড়যন্ত্রে যখন অন্তর্বর্তী সরকার টালমাটাল, ড. ইউনূসও পদত্যাগ করতে বদ্ধপরিকর, তখন তার পেছনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সবগুলো ইসলামি দল। এবং তারা আশ্বাস দিয়েছেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত ইউনূস সরকারের প্রতি তাদের পূর্ণ আস্থা অবিচল থাকবে। আপনারা বাম-রাম বাবু যারা সামান্য স্বার্থে আঘাত লাগলেই মা-বইন এক করে ফেলেন, কওমি মাদরাসার ইতিহাস ও চরিত্র সম্পর্কে আপনারা কিছুই জানেন না। তাদের মেন্টালিটি সম্পর্কে আপনাদের সামান্যতম ধারণা নেই। এই দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সবচে বড় স্টেকহোল্ডার এই কওমিওয়ালারা। যে কোনো অন্যায় প্রতিরোধ করতে জীবন বিলিয়ে দিতে তারা সামান্য কুণ্ঠাবোধ করেন না। মসজিদ আর মাদরাসার বাইরেও যে সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে তাদের অংশগ্রহণ জরুরি এবং এটা তাদের নাগরিক অধিকার, এই অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত রাখা হয়েছিল। আপনাদের মতো একদল এজেন্সি ও এনজিও’র খুদ-কুড়া খাওয়া লোকের অপপ্রচারে তাদের কখনো রাষ্ট্র নির্মাণে অংশ নিতে দেওয়া হয় নাই। সুতরাং, কওমিওয়ালারা এই বাংলাদেশে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিপ্লবে সামান্যতম পিছু হটবে না। এতে আপনাদের গা জ্বলাজ্বলিতে তাদের কিছু যাবে আসবে না। কবি নজরুল তাদের হয়েই বলে গেছেন- তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান! লেখক: কথাসাহিত্যিক, বহু গ্রন্থ প্রণেতা এমএইচ/ |