মাকতাবাতুল আমজাদ—বিদেশি ইসলামি বইয়ের নির্ভরযোগ্য ঠিকানা
প্রকাশ: ০৪ জুন, ২০২৫, ০৯:৩৯ রাত
নিউজ ডেস্ক

|| মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ||

বাংলাদেশে ইসলামি উচ্চশিক্ষার পরিধি যেমন বিস্তৃত হচ্ছে, তেমনি বাড়ছে মানসম্মত ও গভীরতাসম্পন্ন বইয়ের চাহিদা। তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি গ্রন্থ বিশেষ করে তাফসির, হাদিস  ও ফিকহ শাস্ত্র, ইতিহাস, সাহিত্য ইত্যাদির মতো অনন্য, বিরল, মূল্যবান বই এবং এগুলোর ব্যাখ্যাগ্রন্থ সমুহ এক যুগ আগে দেশে পাওয়া বেশ কষ্ট সাধ্য ছিল। এই শূন্যতা পূরণে একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে মাকতাবাতুল আমজাদ।

২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত, ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বাংলাবাজারে ইসলামি টাওয়ারের বিপরীতে অবস্থিত  প্রায় ১৬০০ স্কয়ার ফিট জায়গা নিয়ে বিস্তৃত বইঘরটি এখন বিদেশি ইসলামি বইয়ের অন্যতম সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে। সম্পূর্ণ  আমদানি র্নিভর এই মাকতাবাটি একাধারে  মধ্যপ্রাচ্য্ তথা সৌদী আরব কুয়েত, বৈরত, মিশর, ইরান, তুর্কিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ভারতসহ বিশ্বের বহু দেশের খ্যাতনামা প্রকাশনী থেকে স্বনামধন্য লেখকদের বই আমদানী করে থাকে।

মাকতাবাতুল আমজাদের বৈচিত্র্যময় সংগ্রহের মধ্যে যেমন পাবেন সিহাহ সিত্তাহ কিতাব সমুহ ও আল কুরআনুল কারীমের উপর লেখা বিশ্ব-বিখ্যাত লেখকদের সুবিশাল ব্যাখ্যা গ্রন্থ সমুহ। তেমনি ভাবে পাবেন ঊলুমুল কুরআন, ঊলূমুল হাদীস, ইলমে ফিকহ ও উসুলুল ফিকহ  উর্দু, আরবি ভাষায় লিখিত বরেণ্য ইসলামিক স্কলারদের মাওয়ায়েজ ও রাসায়েল এবং ইসলামি চিন্তাধারার মৌলিক ও গবেষণাধর্মী রচনা।

মাকতাবাতুল আমজাদের বিশাল সংগ্রহশালা মাদরাসায় পড়ুয়া মাধ্যমিক স্তর থেকে নিয়ে উচ্চতর শিক্ষান্বেষী ছাত্রদের উর্দু ও আরবি ভাষায় লিখিত সহযোগী কিতাব সমুহের চহিদা পূরণ করে আসছে। একই সাথে দরসে নিজামীর মূল কিতাব সমূহ তাদের নিজস্ব্ অভিজ্ঞ সম্পাদনা পরিষদের মাধ্যমে নিখুঁত-নির্ভূল ও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় টিকা সংযোজন করে প্রকাশ করে আসছে। যা বর্তমানে সব ঘরানার ছাত্রদের কাছে অত্যন্ত সমাদৃত।  

যেহেতু প্রতিষ্ঠানের মালিক বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন হাফেজ মাওলানা খুরশীদ আলম আমজাদী” দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ কুয়েতের বৃহত্তর লাইব্রেরী “দার উন্দুলুসিয়া ও মাকতাবাতুল বুখারীর স্বত্তাধীকারী ছিলেন। এই সুবাদে সৌদী, বৈরত, মিশর, ইরান, তুর্কিস্তান, পাকিস্থানে অবাধ যাতায়াত ছিল এবং খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান সমূহের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সরাসরি বাংলাদেশে আমদানী করে থাকেন। এতে পাঠকরা বইয়ের গুণগত মান ও নির্ভরযোগ্যতার ব্যাপারে নিশ্চিন্তে নির্ভর করতে পারেন।
 
মাকতাবাতুল আমজাদ এর বিসতৃর্ণ বইঘর টি শুধু কিতাব বিক্রয়ের জন্য নয় বরং ইলম পিপাসুদের পাঠশালা। কিতাব মোতালাআ, কিতাবের সাথে পরিচিত হওয়া গবেষণার জন্য কোনো কিতাবের তথ্যসুত্র যাচাই সহ কিতাব কেন্দ্রিক বহুমাত্রিক সুযোগ বাংলাদেশে ইসলামি জ্ঞানচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। যারা ইসলামি উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী, তাদের জন্য এটি হতে পারে এক অপরিহার্য গন্তব্য। নির্ভরযোগ্য বিদেশি বইয়ের সন্ধানে যারা আছেন—তাদের জন্য মাকতাবাতুল আমজাদ হতে পারে প্রথম পছন্দ।

মাকতাবাতুল আমজাদ শুধু বিদেশি বইয়ের সমৃদ্ধ ভান্ডার নয়। প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে নিজস্ব কিছু মানসম্পন্ন প্রকাশনাও। ইতোমধ্যে মাকতাবাতুল আমজাদ থেকে প্রকাশিত হয়েছে জামাতে জালালাইন, জামাতে মিশকাত ও তাখাসসুস ফিল ফিকহের কিতাবাদি সহ ছাত্রদের প্রয়োজনীয় কিছু কিতাব। চলমান রয়েছে তাকমিল জামাতের সকল কিতাবের কাজও।

মাকতাবাতুল আমজাদ-এর দায়ীত্বশীল মাওলানা ইমরান আশরাফী বলেন, “ ৯০ এর দশকে আমরা যখন লেখাপড়া করেছি তখন এ সমস্ত কিতাবের নাম শুধু উস্তাদদের মুখে শুনেছি। অনেক চেষ্টা করেও এসব কিতাব সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। থিসিস এর রেফারেন্স দেয়ার জন্য ঢাকা আলিয়া, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পটিয়া, হাটহাজারি  ও বড় বড় বিদ্যাপিঠে যেতে হয়েছে , সেসব কিতাব এখন তালিবে ইলমের একান্তই নাগালে। এসকল কিতাব সংগ্রহের জন্য সেসময় আমাদের একান্ত নির্ভরতা ছিল বিদেশ ফেরত প্রবাসী যারা তাদের সাথে কিছু কিতাব নিয়ে এসে ছাত্রদের কাছে চড়া দামে বিক্রয় করত। এখন মাশাল্লাহ মাকতাবাতুল আমজাদসহ অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানই ছাত্রদের চাহিদা পুরণে প্রয়োজনীয় কিতাব বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করছে। এবং ছাত্রদের মাঝেও কিতাব সংগ্রহের আগ্রহ অনেক। আর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তো আছেই। যারা বিভিন্ন গবেষণার কাজে নিয়োজিত আছে। তারা সারা বছরই আমাদের এখান থেকে কিতাবাদি কিনছেন।”

অনন্যসাধারণ এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা খুরশিদ আলম আমজাদি। তিনি কুমিল্লার আমজাদিয়া হামিউস সুন্নাহ মাদ্রাসা সহ অনেক গুলো মাদরাসার পরিচালক ও পৃষ্টপোষক এবং চেতনা প্রকাশনেরও স্বত্তাধিকারী। 

যোগাযোগ : মাকতাবাতুল আমজাদ ব্রাঞ্চ-১: ইসলামী টাওয়ার (আন্ডাগ্রাউন্ড) দোকান নং-১০, বাংলাবাজার ঢাকা,

মাকতাবাতুল আমজাদ ব্রাঞ্চ-২ : পি. কে রায় রোড, ৪২ বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০ (ইসলামী টাওয়ারের বিপরীতে), ঢাকা। মোবাইল : ০১৭৪৯৬৬৯১৫৫

এমএইচ/