চোখের জল ফুরিয়ে গেলে ঈদ কেমন হয়?
প্রকাশ:
০৭ জুন, ২০২৫, ০৭:৩৯ সকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
|| শাব্বির আহমাদ খান || “তোমরা তাদেরকে (অসহায়-গরিবকে) তোমাদের ঈদের আনন্দে শরিক করো।” এই ছিল প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ ﷺ–এর শিক্ষা। ঈদের মূল চেতনায় ছিল সাম্য, সহানুভূতি ও সামাজিক সুবিচার। অথচ আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত এই চেতনার বিপরীত চিত্রই দৃশ্যমান। রাজধানীর মালিবাগ রেলগেটের পাশে দেখা যায় এক শিশুকে—নাম আল আমীন। বয়স এগারো। জীবনযুদ্ধে সে একা। বাবা মারা গেছেন সড়ক দুর্ঘটনায়। মা বিয়ের পর তাকে আর ফিরিয়ে নেননি। এখন ফুটপাতই তার ঠিকানা। ছেঁড়া গেঞ্জি, মলিন প্যান্ট—পায়ে কিছু নেই। হাতের ঝুড়িতে কুড়ানো পানির বোতল। জিজ্ঞেস করতেই বলে, কিন্তু ঈদ তো ছিল সবার জন্য। রাসুল ﷺ যখন মদিনায় হিজরত করলেন, তখন সেখানকার লোকেরা দুটি খেলাধুলার দিন উদযাপন করত। তখন তিনি বলেন, এ দুটি ঈদ কেবল নামাজ আর গোশতের নয়, বরং গরিব-অসহায়কে ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্ববোধে জড়িয়ে নেওয়ার মহান উপলক্ষ। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন, “তোমরা এতিমদের প্রতি দয়ার্দ্র হও। তাদের মাথায় হাত বুলাও এবং তাদের খাওয়াও।” আজ যারা ফুটপাতে ঈদের দিন কাঁদে, তাদের কি আমরা ভুলে যাচ্ছি না? ঈদ মানে নিজের সন্তানকে জামা পরানো আর অন্যের সন্তানের দিকে তাকিয়ে না দেখা—এটা কি ইসলাম চায়? ইসলাম আমাদেরকে দায়িত্ববান সমাজ গড়ার শিক্ষা দেয়। কুরবানির ঈদ আমাদের শেখায় ত্যাগ—নিজের প্রিয় জিনিস আল্লাহর রাহে বিলিয়ে দেওয়ার শিক্ষা। সুতরাং, ঈদের দিনে যদি আমরা আল আমীনদের মতো অসহায়দের পাশে না দাঁড়াই, তবে কিসের ঈদ? কিসের তাকওয়া? হয়তো কারো পুরনো জামা, কারো একটি খাবারের প্যাকেট, কারো একটু স্নেহ—একটি শিশুর চোখে আনন্দের জল এনে দিতে পারে। রাষ্ট্রের উচিত এমন শিশুদের তালিকা করে ঈদের সময় খাদ্য, জামা ও ভালোবাসা পৌঁছে দেওয়া। সমাজের বিত্তবানদের উচিত ঈদের আগে একবার ভাবা—আল আমীনদের মুখে হাসি ফোটানো কি আমাদের দায়িত্ব নয়? যেদিন আমরা সবাই মিলে রাস্তার শিশুকে একটুখানি ভালোবাসা দেব, সেদিনই ঈদ হবে সত্যিকারের ঈদ। লেখক: শিক্ষার্থী, আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম, খিলগাঁও এসএকে/ |