‘ইসলামপন্থীদের ঐক্য ও দায়িত্বশীল ভূমিকা সময়ের দাবি’
প্রকাশ:
১৩ জুন, ২০২৫, ০৯:০০ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল প্রবাসী বাংলাদেশিদের হৃদয় ছোঁয়া এক ব্যতিক্রমী আয়োজন—বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস রিয়াদ মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে এ ঈদ পুনর্মিলনী ও সংবর্ধনা সমাবেশ। ১২ জুন ( শুক্রবার ) স্থানীয় এক কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রিয়াদ মহানগর শাখার সভাপতি ও দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা হুসাইন হাবীবুর রহমান। পরিচালনা করেন রিয়াদ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ হাদী, ঢাকা জেলা উত্তরের সহসভাপতি মাওলানা নূর মোহাম্মদ এবং সৌদি আরবস্থ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলবৃন্দ। পবিত্র হজ পালনের অংশ হিসেবে মক্কা ও মদিনা সফরকালে এই সমাবেশে অংশ নেন নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ সমমনা ইসলামী দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি প্রবাসীদের মাঝে এক অনন্য ঐক্যের চিত্র ফুটিয়ে তোলে। আমীরে মজলিস মাওলানা মামুনুল হক বলেন, রিয়াদে আজকের এই সমাবেশ যেন প্রবাসে এক খণ্ড বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে। এই মিলনমেলা আমাদের প্রমাণ করে দেয়, বাংলাদেশি মুসলমানরা চেতনাগতভাবে এখনও ঐক্যবদ্ধ। ইসলামী শক্তির মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহনশীলতা ও সহযোগিতার পরিবেশ বজায় থাকলে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রাম সফল হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে মতভিন্নতা থাকবে, কিন্তু তা যেন সংঘাতে রূপ না নেয়। ইসলামী দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি ও সংঘর্ষ দেশের স্বাধীনতা, ঈমানি পরিচয় ও মানুষের ভোটাধিকারের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশে আবারও যেন কোন একদলীয় দুঃশাসনের ছায়া ঘনিয়ে না আসে —এই জন্য ইসলামপন্থীদের ঐক্য এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা সময়ের দাবি। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্ব মুসলিম আজ ফিলিস্তিন থেকে কাশ্মীর, আরাকান থেকে চাদ-নাইজার পর্যন্ত নির্যাতিত ও পরাধীন। অথচ মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ঐক্যবদ্ধ নয়। বাংলাদেশ যেন অন্তত এই বিভাজনের অংশ না হয়। আমাদের পররাষ্ট্রনীতিকে হতে হবে সাহসী, ন্যায়ের পক্ষে—যেখানে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা, মসজিদে আকসার মুক্তি ও ইসলামি উম্মাহর স্বার্থ অগ্রাধিকার পায়। মাওলানা মামুনুল হক আরও বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস দেশীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক ইসলামি মূল্যবোধ-ভিত্তিক পরিবর্তন আনতে বদ্ধপরিকর। আমরা দেশে বৃহত্তর ইসলামপন্থীদের ঐক্য চাই, চাই শান্তিপূর্ণ, পরমতসহিষ্ণু এবং ইসলামী আদর্শসম্মত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। তিনি বলেন, এই রিয়াদ সমাবেশের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে নতুন প্রেরণা জেগে উঠেছে। ইনশাআল্লাহ, আগামী দিনে সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রবাস কেন্দ্রিক শহরগুলোতেও সংগঠনের সাংগঠনিক কাঠামো আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করা হবে। যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন বলেন, প্রবাসীদের হৃদয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জন্য ভালোবাসা, আস্থা ও দায়িত্ববোধ ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির জন্য আশার আলো হয়ে উঠবে—এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে ১০ জুন মক্কা মুকাররমায় হেফাজতে ইসলাম এবং ১১ জুন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মক্কা মহানগরীর উদ্যোগেও ঈদ পুনর্মিলনী আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন হয়। মাওলানা মামুনুল হক এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এমএম/ |