শুধু শোক নয়, চাই স্বচ্ছ জবাবদিহিতা
প্রকাশ:
২২ জুলাই, ২০২৫, ০৩:২৭ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
ওয়ালিউল্লাহ আজিজী গতকাল দুপুর দুইটা। রাজধানীর অদূরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে তখনও ক্লাস চলছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে একটি প্রশিক্ষণ বিমান ভেঙে পড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপর। মুহূর্তেই বিস্ফোরণ, ধোঁয়া, আতঙ্ক আর কান্নায় ছেয়ে যায় পরিবেশ। নিহত হয় (এখন পর্যন্ত খবরে প্রকাশ) ২৭ টি নিষ্পাপ শিশু, আহত শতাধিক। তারা কারা? তারা ছিল সেই সব স্বপ্নবাজ শিশু, যাদের জীবনের মানে ছিল হাসি, আনন্দ, পড়ালেখা আর আগামী দিনের এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। কিন্তু এখন তারা নেই। কাফনে মোড়ানো তাদের ছোট ছোট দেহ, জাতির বিবেককে যেন কাঁপিয়ে দিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়— আমার দেশ কি আমার সন্তানের জন্যও নিরাপদ নয়? কোথায় আমাদের নিরাপত্তা? শিশুরা যুদ্ধ করে না, তারা রাজনীতি বোঝে না, তারা খেলার মাঠে ছুটে বেড়ায় আর প্রতিদিনের হোমওয়ার্ক নিয়ে চিন্তিত থাকে। সেই শিশুদের জীবনের মূল্য কি শুধুই এক্সিডেন্টাল “দুর্ঘটনা”র দোহাই দিয়ে শেষ করে দেওয়া যায়? দায়িত্ব কার? এসব প্রশ্নের দায় সরকারের প্রতিটি সংস্থার ওপর বর্তায়। অথচ আমরা দেখি, দায় স্বীকার করার বদলে চলে ‘তদন্ত কমিটি’ আর ‘শোকবার্তা’র আনুষ্ঠানিকতা। একটি জাতির ব্যর্থতা দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে সুতরাং দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা রয়েছেন, তারা আল্লাহকে ভয় করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিন। আহত নিহতের সঠিক সংখ্যা জাতির সামনে প্রকাশ করুন। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তপূর্বক দুর্ঘটনার কারণ উল্লেখ করুন। ঘটনার সাথে কোন রাঘব বোয়ালের সম্পৃক্ততা থাকলে (হোক সেটা ব্যক্তি ,প্রতিষ্ঠান কিংবা রাষ্ট্র) সেটাও নির্ভয়ে জাতির সামনে তুলে ধরুন। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করুন। এতগুলো নিষ্পাপ শিশুর ক্ষতবিক্ষত দেহ নিয়ে রাজনীতি কিংবা অপরাজনীতি করার অধিকার কারো নেই । আত্মজিজ্ঞাসার সময় এখনই এখন সময় সাহসের সাথে দাঁড়ানোর, দাবি তোলার—আমাদের সন্তানদের জন্য নিরাপদ আকাশ, নিরাপদ আকাশপথ ও নিরাপদ শিক্ষাঙ্গন চাই। আমরা আমাদের সন্তানদের নিরাপদ জীবন চাই। এই পৃথিবীতে সবকিছুই যদি “দুর্ঘটনার” দোহাই দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়, তবে জবাবদিহিতা থাকবে কাদের কাছে? আর যদি এই দায় আমরা এড়িয়ে যাই, তবে কালকে যে আমাদের সন্তান বিপর্যস্ত হবে না-তার কি গ্যারান্টি আছে? লেখক: ফারেগ, জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়া এমএইচ/ |