যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কিনছে বাংলাদেশ
প্রকাশ: ২৮ জুলাই, ২০২৫, ১০:১১ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিমান প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে নতুন করে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রোববার (২৭ জুলাই) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, ওয়াশিংটনের সঙ্গে শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে বিমানের বহরে নতুন প্রজন্মের ১৪টি বোয়িং উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুইটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ও চারটি বোয়িং ৭৩৭।


২০০৮ সালে প্রথম বোয়িংয়ের সঙ্গে বিমানের উড়োজাহাজ কেনার চুক্তি হয়। ২০১২ সালে প্রথম বোয়িং ৭৭৭-৩০০ বিমানের বহরে যুক্ত হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে বাকি বোয়িংগুলো যোগ হতে থাকে। সর্বশেষ বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭ যোগ হয় ২০১৭ সালে।

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট ক্যাপ্টেন মাকসুদ আহমেদ আমার দেশকে বলেন, অনেক আগেই নতুন উড়োজাহাজের দরকার ছিল। এটি অবশ্যই খুব ভালো উদ্যোগ। শুধু বোয়িং উড়োজাহাজ কিনলেই হবে না। এর জন্য প্রয়োজন নতুন রুটের পরিকল্পনা।

তিনি বলেন, এর জন্য আগে বাজার যাচাই করতে হবে যাতে বিমান যে রুটগুলো হারিয়েছে সেগুলো আবার ফিরে পায়। বিমানের মার্কেটিং প্রজেক্ট করতে হবে আউটসোর্সিং দিয়ে। সারা বিশ্বে এখন এভাবেই চলছে। কখন কোন রুটে কোন ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে এটি তারাই ঠিক করবে।

অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও এয়ার এস্টার সিও ইমরান আসিফ আমার দেশকে বলেন, বিমানের ফ্লাইট প্ল্যানিংয়ের আগে ঠিক করতে হবে। একই সঙ্গে উড়োজাহাজগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য যথার্থ জবাবদিহি থাকতে হবে।

তিনি বলেন, বিমান বহরে নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত করার সময় হয়ে গেছে। বোয়িং-৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজের বিমানের যুক্ত হওয়ার সময় প্রায় ১৫ বছর হয়ে গেছে। এটি পুরোনো হয়ে গেছে। এখন প্রয়োজন নতুন বোয়িং ৭৭৭-এক্স উড়োজাহাজ। এটি পরের ভার্সন। এছাড়া বোয়িং ৭৮৭ তো রয়েছে।

অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বোর্ডের সাবেক মেম্বার ওয়াহিদুল আলম বলেন, বিমান একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। বিমান তার সিদ্ধান্ত নিজে নেবে। বিমানের ওপর চাপিয়ে দিলে হবে না। তাদের কয়টা বোয়িং প্রয়োজন এটি তারাই পর্যালোচনা করে বের করবে।

গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বোয়িংয়ের ব্যবসা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নয়, এটি বোয়িং কোম্পানি করে। বাংলাদেশ মোট ২৫টি বোয়িংয়ের ক্রয়াদেশ দিয়েছে। অন্য দেশও এমন ক্রয়াদেশ দিয়েছে। যেমন ভারত ও ভিয়েতনাম ১০০টি করে এবং ইন্দোনেশিয়া ৫০টি বোয়িং বিমান অর্ডার দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন বোয়িং কোম্পানি তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী সরবরাহ করবে। অর্ডারের বোয়িং পেতে অনেক সময় লাগবে। যারা আগে অর্ডার দিয়েছে, তাদের আগে দেবে কিংবা প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যবসার ধরন অনুযায়ী বিমান সরবরাহ করবে। বাংলাদেশের অতিদ্রুত কিছু বোয়িং দরকার। আগামী দু-এক বছরের মধ্যে হয়তো কয়েকটি বিমান পাওয়া যাবে।’

তিনি আরো বলেন, বিমানের বহর বাড়াতে হবে। এই পরিকল্পনা সরকারের আগে থেকেই ছিল। আগে ১৪টি বোয়িংয়ের অর্ডার ছিল। রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ ইস্যুতে আরো ১১টি নতুন বোয়িং কেনার সিদ্ধান্ত নেয় হয়েছে। ফলে মোট ২৫টি উড়োজাহাজ অর্ডার করা হয়েছে।

মাহবুবুর রহমান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময় চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) অফিস আগামী ২৯ ও ৩০ জুলাই সরাসরি বৈঠকের জন্য সময় দিয়েছে। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও বাণিজ্য সচিব উপস্থিত থাকবেন।

এনএইচ/