আদর্শিক অভিযাত্রায় ইসলামী ছাত্রসমাজের সংগ্রাম ও ঐতিহ্যের ৫৬ বছর
প্রকাশ:
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০৭ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর তেসেরা সেপ্টেম্বর তাওহিদী ছাত্রজনতার জন্য এক অবিস্মরণীয় দিন। উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ইসলামী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজের প্রতিষ্ঠা দিবস এটি । স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ইসলামের শাশ্বত আদর্শের পতাকাতলে সুসংহত করার মহান অভিপ্রায়ে ১৯৬৯সালের ৩ সেপ্টেম্বর এই আদর্শবাদী ছাত্র সংগঠনের অভিযাত্রা সূচিত হয়। উপমহাদেশের প্রথিতযশা আলিম ও বিদগ্ধ রাজনীতিবিদ আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফী রহ., আল্লামা যফর আহমদ ওসমানী রহ., আল্লামা আতহার আলী রহ., খতিবে আযম আল্লামা ছিদ্দিক আহমদ রহ., আল্লামা আব্দুল মতিন খতিব রহ., আল্লামা হাজী মুহাম্মদ ইউনুছ রহ. এর মতো ঈমানী চেতনাদীপ্ত মনীষীদের হাতে স্থাপিত হয় ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের বুনিয়াদ। সর্বপ্রকার জুলুম, শোষণ, নির্যাতন, বৈষম্য, প্রবঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে কুরআন ও হাদীসের ছাঁচে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনকে ঢেলে সাজাবার এক মহৎ ও মহান লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৯৬৯ সালের উপরোল্লিখিত তারিখে নেজামে ইসলাম পার্টির তৎকালীন সদর দফতরে উপরোক্ত ইসলামী রাজনীতিবিদ ও বুযুর্গানেদ্বীনের অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত এক ঐতিহাসিক সংবাদ সম্মেলনে পার্টির সভাপতি আল্লামা যফর আহমদ ওসমানী রহ. আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামী ছাত্রসমাজ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। দেড় হাজার বছরের ঐতিহ্যসমৃদ্ধ ইসলামী আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসে ইসলামী ছাত্রসমাজ এক বলিষ্ঠ সংযোজন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠালগ্ন আহবায়কের দায়িত্ব পালন করে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন, কক্সবাজারের কৃতি সন্তান মাওলানা নুরুল হক আরমান রহ.। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ সংগঠন ঈমানদীপ্ত মশাল হাতে দেশব্যাপী তার প্রদীপ্ত বিচরণ অব্যাহত রেখেছে। ফলে ৫৬ বছর তথা অর্ধশত বছরেরও অধিক সুদীর্ঘ পথপরিক্রমায় ইসলামী ছাত্রসমাজের অবদানে গড়ে উঠেছে ইসলামী আন্দোলনের অনেক নির্ভীক সিপাহসালার, একনিষ্ঠ দাঈ, বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, সুবক্তা, প্রাজ্ঞ লেখক, সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক ও দক্ষ সংগঠক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক গণমুখী ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা, স্বতন্ত্র ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও কওমী মাদ্রাসা সনদের সরকারী স্বীকৃতি প্রদানসহ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবী আদায়ের আন্দোলনে রয়েছে ইসলামী ছাত্রসমাজের সংগ্রামী অবদান। সেই সাথে তাগুতি শক্তির মোকাবিলা, সন্ত্রাস প্রতিরোধ, ৯০ এর স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলন, আওয়ামী দুঃশাসন বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম, ফতোয়া বিরোধী হাইকোর্টের রায় বাতিলের আন্দোলন, নাস্তিক-মুরতাদ বিরোধী আন্দোলন, আওয়ামী স্বৈরতন্ত্রের পতনে নিয়মতান্ত্রিক, বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন-সংগ্রাম, ইসলামি নেজাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামসহ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইসলামি ছাত্রসমাজের বলিষ্ঠ অংশগ্রহন ও সাহসী ভূমিকা ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। নাস্তিক্যবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনসহ ২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও সংগঠনটির সাহসী ভূমিকা অনস্বীকার্য। সর্বোপরি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ঐতিহাসিক ভূমিকা ও গঠনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলশ্রুতিতে আজ ইসলামী ছাত্রসমাজ শুধু একটি নাম নয়; একটি বিপ্লব, একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্যের এক অনবদ্য স্মারক। মনীষীদের দৃষ্টিতে ইসলামী ছাত্রসমাজ খতীবে আজম আল্লামা ছিদ্দিক আহমদ রহ. আল্লামা হাজী মুহাম্মদ ইউনুছ রহ. জাতীয় খতীব আল্লামা ওবাইদুল হক রহ শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ. হযরত মাওলানা আব্দুল জাব্বার রহ. (পীর সাহেব বায়তুশ শরফ) মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. মাওলানা রেজাউল করিম ইসলামাবাদী রহ. আল্লামা মুফতি আব্দুল হালিম বোখারী রহ. আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী রহ. এমএইচ/ |