জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের জেরা শেষ হয়েছে। আগামী ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর একক বিচারিক প্যানেল অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী এ দিন ধার্য করেন।

এদিন সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত এবং বিরতির পর বিকেল আড়াইটা থেকে প্রায় ৫টা পর্যন্ত মামুনকে জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। পরে প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করা হয়।

প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, তারেক আবদুল্লাহ, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ আরও অনেকে।

এর আগে, ২ সেপ্টেম্বর রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন চৌধুরী মামুন। সেদিন তাকে আংশিক জেরা করা হয়। পরে ৩ সেপ্টেম্বর স্টেট ডিফেন্সের আবেদনের ভিত্তিতে আজকের দিন ধার্য করা হয়েছিল।

জবানবন্দিতে মামুন জানান, আওয়ামী লীগ শাসনামলে পুলিশে রাজনৈতিক প্রভাব ও গ্রুপিং দৃশ্যমান ছিল। একই সঙ্গে তিনি শেখ হাসিনা ও কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চান।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় এখন পর্যন্ত চৌধুরী মামুনসহ ৩৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা সবাই জবানবন্দিতে শেখ হাসিনা, কামালসহ অন্য অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন।

আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগে তথ্যসূত্র রয়েছে দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠায়। এ মামলায় মোট ৮১ জন সাক্ষীর তালিকা রয়েছে। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।

এমএইচ/