বিজয় ও সাফল্যে সিজদার মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় 
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:৫৯ সকাল
নিউজ ডেস্ক

বিজয় ও সাফল্য আল্লাহ তায়ালার বিশেষ দান। তিনি যাকে ইচ্ছা বিজয় দান করেন, আবার যার কাছ থেকে ইচ্ছা তা ছিনিয়ে নেন। পৃথিবীর স্বাভাবিক নিয়মেই জয়-পরাজয় পরিবর্তিত হতে থাকে। কোনো জাতি বা দল স্থায়ীভাবে বিজয়ের মুকুট পরে থাকতে পারে না। 

একসময় একদল বিজয়ী হয়, আবার অন্য সময়ে অন্য দল জয় লাভ করে। তবে যারা বিজয়ের পর বিনয়ী হয় এবং আল্লাহকে স্মরণ করে, আল্লাহ তায়ালা তাদের জয়কে স্ম্মানজনক করেন।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে “তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ করব। আর তোমরা আমার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় কর, অকৃতজ্ঞতা করো না।” (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫২)

অর্থাৎ বিজয়ের মূল শিক্ষা হলো শুকরিয়া আদায় করা, আল্লাহর সামনে সেজদাবনত হওয়া এবং বিনয়ী থাকা, অহংকারে আত্মমগ্ন না হওয়া।

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, “আর রহমানের বান্দারা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে; আর যখন অজ্ঞ লোকেরা তাদের সম্বোধন করে, তখন তারা বলে ‘সালাম’।” (সুরা আল-ফুরকান, আয়াত : ৬৩)

অতএব, আল্লাহর রহমতে বিজয়ী বান্দারা গর্বিত বা উদ্ধত হয়ে চলে না; বরং তারা ভদ্র, মার্জিত ও বিনয়ী আচরণ করে।

হাদিসে শুকরিয়ার সেজদা

রাসুলুল্লাহ (সা.) বিজয় ও সুখবর পাওয়ার পর আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যখন তোমরা কোনো নিদর্শন দেখবে, তখন সেজদা করবে।” (আবু দাউদ : ১১৯৯)

হজরত আবু বকরা (রা.) বর্ণনা করেন, “যখনই নবীজি (সা.)-এর কাছে কোনো সুখবর আসত বা এমন কিছু ঘটত যা তাঁকে সন্তুষ্ট করত, তখন তিনি আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে সেজদায় পড়ে যেতেন।” (আবু দাউদ : ২৭৭৬)

শুকরিয়ার নামাজ

শুকরিয়ার সেজদা দুইভাবে আদায় করা যায়:

সেজদায়ে শুকর (শুকরিয়ার সেজদা): শুধু সিজদায় পড়ে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।

সালাতুশ শুকর (শুকরিয়ার নামাজ): দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা।

শুকরিয়ার নামাজের রাকাতের নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই, তবে দুই রাকাতের কম নয়। এটি অন্যান্য নফল নামাজের মতো করেই আদায় করতে হয়।

সুতরাং, বিজয় কিংবা সাফল্যের প্রকৃত প্রকাশ হলো আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা, অহংকার ত্যাগ করে বিনয়ী হওয়া এবং মানুষের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করা। এভাবেই একজন মুমিন আল্লাহর অনুগ্রহের যোগ্য হয়ে ওঠে।

এমএইচ/