‘পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে বিশেষজ্ঞের ঘাটতি ও যথেষ্ট বরাদ্দ না থাকায় শিক্ষা খাত পিছিয়ে আছে’
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:৪১ রাত
নিউজ ডেস্ক

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেছেন, “পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে দেশে বিশেষজ্ঞের ঘাটতি রয়েছে। যথেষ্ট বরাদ্দ না থাকায় শিক্ষা খাত পিছিয়ে আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে শিক্ষা বরাদ্দ বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, সেগুনবাগিচা, ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে “বাংলাদেশ ২.০ : কেমন হবে আমাদের পাঠ্যপুস্তক?” শীর্ষক আলোচনা সভায় মোহাম্মদ আজম এসব কথা বলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম এবং সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মুইনুল ইসলাম। আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষা ও গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক ও চিন্তকরা।

আলোচনা সভায় সিনিয়র সচিব (পিআরএল), কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ড. খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, “পাঠ্যপুস্তকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বৈষম্য দূর করা এবং দায়িত্বশীলভাবে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন সময়ের দাবি।”

লেখক ও গবেষক শায়খ আবদুল জাব্বার জাহাঙ্গীর বলেন, “ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে মুসলিমদের ধর্মীয় শিক্ষাক্রম তৈরি করতে হবে।” গবেষক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, মোরশেদ আলম বলেন, “AI ও আধুনিকতার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পাঠ্যপুস্তক তৈরি করতে হবে।” 

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “নেশনবিল্ডিংয়ে পাঠ্যপুস্তকের ভূমিকা অপরিসীম, তাই শিক্ষা সংস্কার অত্যন্ত জরুরি।

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ ড. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, “বর্তমান পাঠ্যপুস্তক সংস্কৃতির সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। নতুন ও সুসংহত পাঠ্যপুস্তক তৈরি করতে হবে। ”

শিক্ষাবিদ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ শাহাদত হোসেন বলেন, “সবার ডিগ্রি আছে কিন্তু গবেষণা নাই। তাই বাস্তব জীবনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে।” 

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, “বর্তমান পাঠ্যপুস্তকে নানাবিধ সংকট রয়েছে, নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের মাধ্যমে তা সমাধান করতে হবে।”

ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক তাওহীদুল ইসলাম বলেন, “রাষ্ট্র একটি ইউনিক কারিকুলাম প্রণয়নে ব্যর্থ হয়েছে।” ইংলিশ অলিম্পিয়াডের সিইও মোহাম্মদ আমান উল্লাহ বলেন, “আমাদের পাঠ্যপুস্তকে সর্ষের মধ্যেই ভুত রয়েছে। ইংরেজি ও অংক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব বাড়াতে হবে।” আলোচকরা একবাক্যে বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার, জুলাই গণ- অভ্যুত্থানের ইতিহাস অন্তর্ভুক্তকরণ, আধুনিক প্রযুক্তি, গবেষণা এবং সাংস্কৃতিক প্রাসঙ্গিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা জরুরি।

এমএইচ/