ইবতেদায়ির ৫ম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা প্রকাশ
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:৪৪ সকাল
নিউজ ডেস্ক

২০২৫ সালের ইবতেদায়ির ৫ম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী এ শ্রেণিতে দুই ধরনের বৃত্তি দেওয়া হবে। প্রতিটি অনুমোদিত মাদরাসা থেকে শতকরা ৪০ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের ওয়েবসাইটে ২৬ অক্টোবর এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, নীতিমালাটি ‘ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা-২০২৫’ নামে অভিহিত হবে। এ নীতিমালার আলোকে ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত মাদরাসায় অধ্যয়নরত ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ শতকরা ৪০ জন (চতুর্থ শ্রেণির সব প্রান্তিকের সামষ্টিক মূল্যায়নের ফলাফলের ভিত্তিতে) বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি সময়ে-সময়ে এ সংখ্যা পুন:নির্ধারণ করতে পারবে। একজন শিক্ষার্থী কোনো মাদরাসা থেকে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হওয়ার পর সে অন্য কোনো মাদরাসা থেকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।
কোনো সরকারি বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংশ্লিষ্ট মাদরাসার ক্যাচমেন্ট এলাকায় বদলি হলে এবং প্রচলিত নিয়মানুযায়ী পরীক্ষার্থী ৫ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে থাকলে তাকে দাখিল ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে অনুমতি দেয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের আগে শিক্ষার্থীকে তার পূর্বতন মাদরাসা থেকে প্রাপ্ত ছাড়পত্র ও অভিভাবকের বদলি সংক্রান্ত আদেশের কপিসহ সংশ্লিষ্ট মাদরাসা প্রধান বরাবর আবেদন করতে হবে।
বহিরাগত ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষায় অংশ নেয়ার বিষয়ে কোনো প্রকার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট মাদরাসা প্রধানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর ফল বাতিল করা হবে।
প্রতিটি বিষয়ে পূর্ণমান হবে ১০০ এবং পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে পূর্ণমান হবে (৫০+৫০)=১০০, পরীক্ষার সময় হবে (১ ঘন্টা ১৫ মিনিট + ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট)=২ ঘন্টা ৩০ মিনিট। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে একই দিনে ভিন্ন ভিন্ন কোডে পরীক্ষা হবে এবং উত্তরপত্রও আলাদা হবে। গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে পূর্ণমান হবে (৬০+৪০)=১০০, পরীক্ষার সময় হবে (১ ঘন্টা ৩০ মিনিট+১ ঘন্টা)= ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট। গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে একই দিনে ভিন্ন ভিন্ন কোডে পরীক্ষা হবে এবং উত্তরপত্রও আলাদা হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত প্রশ্নকাঠামো অনুসারে ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বৃত্তি পাওয়ার জন্য প্রতি বিষয়ে ন্যূনতম শতকরা ৪০ নম্বর পেতে হবে। সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মেধা ও কোটাভিত্তিক বৃত্তি দেয়া হবে।
‘ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষায় দুই ধরনের বৃত্তি দেয়া হবে : ক. ট্যালেন্টপুল ও খ. সাধারণ বৃত্তি। সব ধরনের বৃত্তির ৫০ শতাংশ ছাত্রদের এবং ৫০ শতাংশ ছাত্রীদের জন্য নির্ধারিত থাকবে। তবে নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে ছাত্রের বৃত্তি ছাত্রী দ্বারা এবং ছাত্রীর বৃত্তি ছাত্র দ্বারা পূরণ করা হবে।
‘ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি প্রদানের নিয়মাবলিতে বলা হয়েছে, ট্যালেন্টপুল বৃত্তি দেয়া হবে উপজেলা ওয়ারি (উপজেলা পর্যায়ে) এবং ওয়ার্ড ওয়ারি (সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে)। প্রতিটি উপজেলায় বা ওয়ার্ডে পূর্বনির্ধারিত সংখ্যক ট্যালেন্টপুল বৃত্তি উপজেলায় বা ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ছাত্র ও ছাত্রীদের মেধার ক্রমানুসারে সমান হারে বণ্টন করা হবে।
বিজোড় সংখ্যা ট্যালেন্টপুল বৃত্তি দেয়ার ক্ষেত্রে সর্বশেষটি ছাত্র বা ছাত্রী বিবেচনা না করে অধিক নম্বর বিবেচনায় নির্বাচন করা হবে। কোনো উপজেলায় বা ওয়ার্ডে ট্যালেন্টপুল কোটায় শিক্ষার্থী পাওয়া না গেলে তা জেলা কোটা অর্থাৎ একই জেলার মেধার ক্রমানুসারে পরবর্তী যোগ্য শিক্ষার্থী দ্বারা পূরণ করা হবে এবং তা সম্পূরক তালিকায় প্রকাশিত হবে।
সাধারণ বৃত্তি প্রদানের নিয়মাবলিতে বলা হয়েছে, সাধারণ বৃত্তি দেয়া হবে উপজেলা ওয়ারি (উপজেলা পর্যায়ে) এবং ওয়ার্ড ওয়ারি (সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে)। প্রতিটি উপজেলা বা ওয়ার্ডে নির্ধারিত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে সাধারণ বৃত্তি দেয়া হবে। কোনো উপজেলা বা ওয়ার্ডে যোগ্য ছাত্র পাওয়া না গেলে ওই ছাত্রের বৃত্তি ছাত্রী দ্বারা এবং যোগ্য ছাত্রী পাওয়া না গেলে ওই বৃত্তি যোগ্য ছাত্রর মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এভাবে যদি কোনো উপজেলা বা ওয়ার্ডের বৃত্তি উপজেলা বা ওয়ার্ডের ছাত্র বা ছাত্রী দিয়ে পূরণ করা হয় তা হলে সেটিকে সাধারণ বৃত্তি হিসেবেই বিবেচনা করা হবে এবং ওই সংখ্যা মূল তালিকায় প্রকাশিত হবে (সম্পূরক তালিকায় প্রকাশিত হবে না)। সম্পূরক বৃত্তির ক্ষেত্রে নিয়ম ও নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে।
কোনো উপজেলা বা ওয়ার্ডে সাধারণ কোটায় শিক্ষার্থী পাওয়া না গেলে তা জেলা কোটা অর্থাৎ একই জেলার মেধার ক্রমানুসারে পরবর্তী যোগ্য শিক্ষার্থী দ্বারা পূরণ করা হবে এবং তা সম্পূরক তালিকায় প্রকাশিত হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, একাধিক শিক্ষার্থী প্রাপ্ত সর্বমোট নম্বর একই হলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে যথাক্রমে প্রথমে কুরআন মাজিদ, আরবি (১ম ও ২য় পত্র), বাংলা ও ইংরেজি এবং গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে বেশি নম্বরপ্রাপ্ত প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যদি দুই বা ততোধিক প্রার্থীর সব বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর একই হয় সেক্ষেত্রে একই নম্বরধারী সবাইকে বৃত্তি দেয়া হবে।
পরীক্ষার্থী প্রতি বোর্ড ফি ৪০০ টাকা এবং পরীক্ষার্থী প্রতি কেন্দ্র ফি ২০০ টাকা। কেন্দ্র ফি থেকে সব প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনা ব্যয় ও প্রত্যবেক্ষদের সম্মানী নির্বাহ করতে হবে।

 এনএইচ/