মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুরের মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ সাঈদীর ইন্তেকাল
প্রকাশ:
০৫ জুন, ২০২৫, ১১:৩৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
ভারতের উত্তর প্রদেশের বিখ্যাত দীনি বিদ্যাপীঠ মাজাহিরুল উলুম (ওয়াকফ) সাহারানপুরের নাজিমে আলা (মুহতামিম) মাওলানা মুহাম্মদ সাঈদী ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। বুধবার (৪ জুন) দিল্লিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। মাজাহিরুল উলুম ওয়াকফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাওলানা মুহাম্মদ সাঈদী বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। বুধবার তাঁর অপারেশন চলছিল। অপারেশনের সময়ই তিনি পরপারের উদ্দেশে পাড়ি জমান। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে সাহারানপুরে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মাওলানা সাঈদীর ইন্তেকালে তাঁর ছাত্র, ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক জানিয়েছেন। তাঁর স্মৃতির কথা স্মরণ করছেন। মাওলানা মুহাম্মদ সাঈদ ২০০৩ সাল থেকে মাজাহিরুল উলুমের মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি প্রায় ২২ বছর বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর সময়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক উন্নতি ও সুনাম সাধিত হয়। দারুল উলুম দেওবন্দের কাছাকাছি সময়ে ১৮৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত মাদরাসাটি থেকে বিখ্যাত আলেম শাইখুল হাদিস জাকারিয়া কান্ধলবী, মাওলানা খলিল আহমদ সাহারানপুরী, মাওলানা জফর আহমদ উসমানীসহ বিশ্ববিখ্যাত আলেমরা ফারেগ হয়েছেন। মাওলানা সাঈদীর আগে আরও ১২ জন বিখ্যাত মনীষী মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুরের মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে মাওলানা খলিল আহমদ সাহারানপুরীর মতো বিখ্যাত মনীষীরাও রয়েছেন। মাওলানা মুহাম্মদ সাঈদীর জন্ম ১৩৮৯ হিজরিতে (১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে) । তাঁর আসল নাম ‘ফরহাত আসার’, তবে তিনি ‘মুহাম্মদ’ নামেই পরিচিতি লাভ করেন এবং তাঁর প্রপিতামহ মাওলানা মুফতি সাঈদ আহমদ আজরাড়ভীর নামানুসারে ‘সাঈদী’ উপাধি গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা পারিবারিক পরিবেশে লাভ করেন এবং কুরআন হিফজ করেন মাদরাসা মাজাহিরুল উলুমে (ওয়াকফ)। হিফজ সম্পন্ন করার পর তিনি আরবি ও ফারসি ভাষার প্রাথমিক পাঠ গ্রহণ করেন, যার বেশিরভাগই তাঁর পিতা মাওলানা আতহার হুসাইন রহ.-এর কাছ থেকে। তাঁর পিতা প্রচলিত পাঠ্যক্রমের বাইরে নিজস্ব পরিকল্পিত পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে তাঁকে শিক্ষা দেন, যার শুরু হয়েছিল নাদওয়াতুল উলামা-র কিছু গ্রন্থ থেকে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে তিনি অল্প সময়ে শিক্ষাজীবন অগ্রসর করেন এবং আরবি সাহিত্যে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি ১৪০৯ হিজরিতে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন এবং শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করার পর তিনি দারুল উলুম শাহ বেহলুল, সাহারানপুরে শিক্ষক নিযুক্ত হন। এরপর মাদরাসা আবদুর রব, দিল্লিতে শিক্ষকতা করেন। ১৪১২ হিজরিতে ফকীহুল ইসলাম মুফতি মুজাফফর হুসাইন রহ.-এর অনুরোধে মাযাহিরুল উলুম (ওয়াকফ), সাহারানপুরে প্রাথমিক আরবি শ্রেণিতে শিক্ষক নিযুক্ত হন। ৩০ জমাদিউল আউয়াল ১৪২৪ হিজরি মাদরাসার শূরা সভায় তাঁকে ‘নায়েবে নাজিম’ (উপপ্রধান) নিযুক্ত করা হয়। ২৮ রমজান ১৪২৪ হিজরি ফকীহুল ইসলাম মুফতি মুজাফফর হুসাইন রহ.-এর ইন্তেকালের পর তাঁর জানাজার পূর্বে মুহাম্মদ সাঈদীকে তাঁর উত্তরসূরি ঘোষণা করা হয় এবং ৭ শাওয়াল ১৪২৪ হিজরিতে শূরা সভায় এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। এনএইচ/ |