মুমিনের দুয়ারে ত্যাগের উৎসব
প্রকাশ:
০৬ জুন, ২০২৫, ১১:১৫ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
আগামীকাল শনিবার (৭ জুন) সারাদেশে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হবে মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আগামীকাল সকালেই ঈদগাহ ও মসজিদে গিয়ে আদায় করবেন ঈদুল আযহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ। এরপর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানির মাধ্যমে ইবরাহিমী ত্যাগ ও তাকওয়ার চেতনায় শামিল হবেন তারা। ঈদের নামাজে খতিবগণ কোরবানির গুরুত্ব, আত্মত্যাগের শিক্ষা এবং ইমানদার জীবনের মূলনীতিগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ আদায় করবেন—এই মিলনমেলায় প্রতিফলিত হবে ইসলামের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের রূপরেখা। এ উপলক্ষে জাতিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট আলেমসমাজ। জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাতের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। জামাতে অংশ নেবেন সরকারের উপদেষ্টা, প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, রাজনীতিকসহ সর্বস্তরের মুসলমানরা। নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ঈদ উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত হয়েছে। টেলিভিশন ও বেতারে সম্প্রচারিত হচ্ছে ইসলামিক অনুষ্ঠান, ঈদ বিশেষ নাটক ও হামদ-নাত। এতিমখানা, হাসপাতাল, কারাগার ও শিশু সদনে পরিবেশিত হচ্ছে উন্নত খাবার। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে ঈদুল আযহা কেবল একটি উৎসব নয়, বরং এটি একটি চেতনাবাহী অনুশীলন। হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর আদেশে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হয়ে যে ঈমানি ত্যাগের নজির স্থাপন করেছিলেন, তা আজো মুসলমানদের জীবনে অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। সেই স্মৃতি ধরে রেখেই সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য পশু কোরবানি ওয়াজিব করা হয়েছে। এদিকে, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আজ শুক্রবার ঈদুল আযহা উদযাপিত হচ্ছে। হাজিরা মিনায় অবস্থান করে পশু কোরবানি ও হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করছেন। পৃথিবীর অনেক দেশ সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে আজ ঈদ উদযাপন করছে। ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য টানা ১০ দিনের ছুটি শুরু হয়েছে। ৫ জুন বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ছুটি চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। পূর্বঘোষিত দুই শনিবার অফিস খোলা রাখা ও নির্বাহী আদেশে ১১ ও ১২ জুন ছুটি দেওয়ায় এই দীর্ঘ অবকাশ সম্ভব হয়েছে। সরকার যাত্রীসেবা ও নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। যাত্রী হয়রানি প্রতিরোধ, নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচল এবং সিএনজি-ফিলিং স্টেশন খোলা রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাকওয়া, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা নিয়ে আসা পবিত্র ঈদুল আযহার এ দিনে দেশবাসীসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রতি রইল আন্তরিক মোবারকবাদ। এসএকে/ |