ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত
প্রকাশ: ০৭ জুন, ২০২৫, ১০:৪২ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের বৃহত্তম ঈদগাহ মাঠ হিসেবে খ্যাত কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত। শনিবার (৭ জুন) সকাল ৯টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এবারের ঈদের জামাতে ইমামতি করেন কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। দীর্ঘ একযুগ পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হারানো ইমামতির দায়িত্বে ফিরে আসেন তিনি।

দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের যাতায়াত সহজ করতে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ময়মনসিংহ ও ভৈরব রুটে চলাচল করে দুটি বিশেষ ট্রেন।

নামাজ শেষে মোনাজাতে ইমাম ফিলিস্তিনের মুসলিমদের ওপর চলমান নির্যাতনের অবসান এবং বাংলাদেশের শান্তি-সমৃদ্ধির জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। তিনি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ কামনাও করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদুল ফিতরের তুলনায় এবার ঈদুল আজহার জামাতে মুসল্লির সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। কোরবানির প্রস্তুতির ব্যস্ততা এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

ঈদের জামাতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও অংশ নেন। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মোহা. কাজেম উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন শোলাকিয়ার ঈদগাহে।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয় চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। মাঠ ও এর বাইরে ছিল র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও এপিবিএনের প্রায় ১২০০ সদস্য। স্থাপন করা হয় ৪টি ওয়াচ টাওয়ার, ব্যবহৃত হয় সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোন। গোয়েন্দা নজরদারিও ছিল সর্বোচ্চ সতর্কতায়।

মাঠে প্রবেশের জন্য ২৩টি গেটের মধ্যে ৫টি গেট ব্যবহার উপযোগী রাখা হয়। প্রতিটি প্রবেশপথে আর্চওয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা তল্লাশি করা হয়। মুসল্লিদের তিন দফায় মেটাল ডিটেক্টরে স্ক্যান করে জায়নামাজ ব্যতীত অন্য কিছু নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এরশাদ মিয়া জানান, “শান্তিপূর্ণভাবে ১৯৮তম ঈদুল আজহার জামাত সম্পন্ন হয়েছে। মুসল্লিদের সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল।”

প্রতি বছর এই ঈদগাহে লাখো মানুষ সমবেত হন। বড় জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলতের কারণে এই মাঠের প্রতি মুসল্লিদের রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। ঈদুল আজহার দিনও সেই ধারাবাহিকতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

এসএকে/