ছুটি উদযাপন: তালিবুল ইলমের পদস্খলনের ভয়
প্রকাশ:
০৮ জুন, ২০২৫, ০৮:৩৮ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
|| মিযানুর রহমান জামীল || ছুটি আনন্দের, দোষের কিছু নয়; তবে অতি আনন্দে আত্মপরিচয় ভুলে ছুটির অপব্যবহার যেন আমাদের পতন ডেনে না আনে সে জন্য আছে বড়দের সতর্কবার্তা। মুফাক্কিরে ইসলাম সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. বলেছেন— 'তালিবুল ইলমের ছুটি নেই, এটা সাময়িক অবসর-যাপন মাত্র। তারা তো ছুটি কাটাবে কবর জগতের দীর্ঘ সফরে।' একেকটা ছুটি শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আতঙ্ক তৈরি করে, গুরুমনে অনাকাঙ্ক্ষিত হতাশার সঞ্চার করে। আমি সবসময় আমার স্নেহের ছাত্রদের বলে থাকি— প্রাতিষ্ঠানিক ছুটিকে মৃত্যুর মত ভয় করো; কারণ এ ছুটির অপব্যবহার একজন তালিবুল ইলমের জীবনকে তিলে তিলে শেষ করে দেয়, নিজের অজান্তে পরিবার ও অভিভাবকের দৃষ্টির আড়ালে ডেকে আনে অনাকাঙ্ক্ষিত পদস্খলন। কওমি মাদরাসাসহ দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে কুরবানির ছুটি শুরু হয়েছে। কেউ ঈদের দুই তিনদিন আগে আবার কেউ আজ ছুটি পেয়েছে। সে প্রেক্ষিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আপনারা (তালিবুল ইলম) একটা বিশেষ ছুটি পেয়েছেন। এটাকে বিশেষ ছুটি বলা হলেও এক সপ্তাহ বা দশদিন দীর্ঘ হওয়ায় এটা কিছুটা ভীতিরও। অনেকে তো বলেছেন— এটা বিষাক্ত ছুটি; তবে এ ছুটির ভালো-খারাপ নির্ভর করছে আপনাদের ঈমান-আমল ধরে রাখার ওপর। কারণ মাদরাসায় উস্তাদের কোমল ছায়ায় আপনাদের ভোররাতগুলো ছিল তেলাওয়াতে কুরআনের সুরে ছন্দময়। ইলমের নূরে আলোকময়। সে বরকত কি থাকবে এখন? বাড়ি ঘরে আপনাদের সেই নূরানী ছন্দ এবং আলোর বিচ্ছুরণ থাকবে এখন? স্নিগ্ধময় তালিবুল ইলম! বাড়ি-ঘরে অবস্থান করছেন আপনি— মা বাবার খুব কাছাকাছি। আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি। আপনাদের নিয়ে ভয় হয়। কারণ তালিবুল ইলমের জন্য ছুটি কোনো আনন্দ বিনোদন বা সুখের নয়; এটা ভয়-আতঙ্ক, হতাশা এবং বেদনার। এমন ছুটিতে অনেক তালিবুল ইলমকে ছিটকে পড়তে হয় নববী ইলমের সোনালি পাঠ থেকে। মনে রাখবেন, এক দিক থেকে এটা কিন্তু ছুটি নয়; ইলম-আমলশূন্য ক্ষতিকর পরিবেশের কারণ এটাকে বিপদের পূর্বাভাসও বলা যায়। তালিবুল ইলম! তালিবুল ইলম! সুতরাং বুকভরা দরদ ও সাগর সমান ব্যথা নিয়ে আপনাদের জন্য আমরা সবসময় দোয়া করি। আপনাদের এ আলোকিত ইলমী জীবনটা সুন্দর ও সুখময় হোক। সোনালি হরফের জীবন নিয়ে নতুন করে পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন দেখুন। ছুটি— অচেনা পাপের বিষাক্ত গন্তব্যে আপনাদের হারিয়ে যাওয়ার কারণ না হোক। আল্লাহ আপনাদের সহায় হোন! এমএম/ |