পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পথে, বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন পানি চুক্তির উদ্যোগ ভারতের
প্রকাশ:
২৭ জুন, ২০২৫, ০৮:১৪ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
২০২৬ সালে মেয়াদ শেষ হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির। তার আগেই পুরনো চুক্তির ধারা বদলে ভারতের স্বার্থে নতুন কাঠামোতে চুক্তি নবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে নয়াদিল্লি। শুক্রবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে ঐতিহাসিক ইন্দুস পানি চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়ায় যাওয়ার পর এবার বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি নিয়েও নতুন করে ভাবছে ভারত। জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও নদীবন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য শুষ্ক মৌসুমে ভারতের পানির চাহিদা বেড়েছে উল্লেখ করে দেশটি বলছে, ১৯৯৬ সালের পুরনো চুক্তি বর্তমান বাস্তবতায় আর কার্যকর নয়। ভারতের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিবছর মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত তারা ফারাক্কা ব্যারাজ থেকে অতিরিক্ত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি নিতে চায়। ভারতের দাবি, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদী ব্যবস্থাপনা, সেচ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাড়তি এই পানি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, এ প্রস্তাবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ সরকারও একমত। কারণ, ফারাক্কা বাঁধ অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলাতেই। রাজ্য সরকার মনে করছে, বর্তমানে তাদের পানির চাহিদা পূরণে পুরনো চুক্তি যথেষ্ট নয়। প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরপর থেকে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে দুই দেশ নির্দিষ্ট সূত্রে গঙ্গার পানি ভাগাভাগি করে আসছে। বিশেষ করে ১১ মার্চ থেকে ১১ মে পর্যন্ত ৩৫ হাজার কিউসেক পানি বণ্টনের বিষয়টি চুক্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। ১৯৭৫ সালে ভারত ফারাক্কা ব্যারাজ চালু করে, যার মাধ্যমে গঙ্গার পানি কলকাতার হুগলি নদীতে সরিয়ে নিয়ে বন্দর সচল রাখা হয়। তবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, এই বাঁধের কারণে পদ্মা নদীতে পানিপ্রবাহ কমে গেছে, যার ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মরুকরণের প্রবণতা, কৃষির ক্ষতি, মাছের উৎপাদন কমে যাওয়া এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ইন্দুস পানি চুক্তি কার্যত বাতিলের সিদ্ধান্তের পর দক্ষিণ এশিয়ার পানিপ্রবাহ নিয়ে ভারতের এই নতুন অবস্থান পুরো অঞ্চলের জন্য উদ্বেগের। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশের জন্য এটি বড় কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে এখনো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে। এসএকে/ |