মুসলিম ভূখণ্ডে ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল
প্রকাশ:
২৭ জুন, ২০২৫, ০৮:৩০ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
সম্প্রতি দখলদার রাষ্ট্র ইসরাইল ইরানের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় সরাসরি হামলা চালিয়ে নতুন করে আগ্রাসনের সূচনা করেছে। ইরান আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে সাহসিকতার সঙ্গে জবাব দিয়ে ইসরাইলকে ১২ দিনব্যাপী সংঘর্ষে চরম ক্ষতির মুখে ফেলে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরাইল শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য হয়। এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এবং ইরানের প্রতিরোধের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে, একইসাথে ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার (২৭ জুন) রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর: উত্তাল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তর সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইন রাজী এবং সঞ্চালনায় ছিলেন দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রাকিবুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন— “ইসরাইল এখন শুধু ফিলিস্তিন নয়, ইরানেও সরাসরি আগ্রাসন চালিয়ে মুসলিম উম্মাহর অস্তিত্ব ও সম্মানকে চ্যালেঞ্জ করছে। ইরান সাহসিকতা ও ন্যায়ভিত্তিক প্রতিরোধের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে— অন্যায়ের জবাব একমাত্র সম্মিলিত প্রতিরোধেই সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সময়ে ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। জাতিসংঘ, ওআইসি সবই নিষ্ক্রিয়। মুসলিম দেশগুলোর সম্মিলিত কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক জোট ছাড়া আমাদের রক্ষার পথ নেই।” শাহবাগপন্থীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন— তিনি আরও বলেন, “ইসলামী শক্তিগুলোর ঐক্য এখন সময়ের দাবি। নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের ঐক্য না হলে দেশ, ইসলাম ও স্বাধীনতা তিনটিই বিপন্ন হবে।” মব জাস্টিস প্রসঙ্গে বলেন— “সরকার জনগণের ক্ষোভকে অবজ্ঞা করছে। যারা ফ্যাসিবাদী দমননীতির সহযোগী ছিল, তাদের বিচারের আওতায় আনুন।” বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমির মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন । সমাবেশ শেষে বিশাল মিছিল পল্টন হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকের মোড়ে গিয়ে সংগঠনের নায়েবে আমীর মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানীর দোয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। সিলেট মহানগর সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি শায়েখ মাওলানা ইকবাল হুসাইন, পরিচালনায় ছিলেন মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এমরান আলম। প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজতে ইসলাম সিলেট জেলার সভাপতি মাওলানা রেজাউল করিম জালালী এবং প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী। চট্টগ্রাম মহানগর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে জিইসি মোড়, দামপাড়া হয়ে শেষ হয়। সভাপতিত্ব করেন মহানগর সভাপতি মাওলানা ইমদাদুল্লাহ সোহাইল, পরিচালনায় ছিলেন মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রিদওয়ানুল ওয়াহেদ। বক্তব্য রাখেন মাওলানা এনায়েতুল্লাহ, মাওলানা মাহবুব, মাওলানা এরশাদুল আলম মাসুদসহ যুব ও ছাত্র মজলিস নেতৃবৃন্দ। গাজীপুর মহানগর চান্দনা চৌরাস্তা কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সভাপতিত্ব করেন মহানগর সহসভাপতি মাওলানা ফারুক আহমদ নোমানী, পরিচালনায় ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মোরশেদ কামাল চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান। বক্তব্য রাখেন মহানগর সাধারণ সম্পাদক হাফেজ কাজী নিজাম উদ্দিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিদ্দিক আহমেদ শেখ, মাওলানা আবু হানিফ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। অন্যান্য জেলাগুলোর উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি নারায়ণগঞ্জ মহানগর: ডিআইটি মসজিদ থেকে মিছিল শুরু হয়ে প্রেসক্লাব চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে পরিসমাপ্তি। সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মামুনুর রশীদ, পরিচালনায় ছিলেন আল-আমিন রাকিব। মৌলভীবাজার সদর: প্রেসক্লাব চত্বরে বাদ আসর সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা ইসমাইল আলী। বক্তব্য রাখেন মাওলানা ইমদাদুর রহমান, হিফজুর রহমান হেলাল, ইসলাম উদ্দীন প্রমুখ। নেত্রকোনা জেলায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় মাওলানা দেলোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে। মাদারীপুর জেলা: পুরানবাজার কমিউনিটি সেন্টারে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয় মাওলানা হাবীব আহমদের সভাপতিত্বে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা: রেলওয়ে চত্বরে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাওলানা আবুল কাশেম আজাদী, হাফেজ রায়হান, হিফজুর রহমান হেলালী প্রমুখ। এছাড়াও কর্মসূচি পালিত হয়েছে খুলনা, রংপুর,কক্সবাজার, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, ফেনী, মানিকগঞ্জ, বরগুনা, নাটোর, কুমিল্লা, মাগুরা, রাঙ্গামাটি, সুনামগঞ্জ জেলা, এবং সাভার, বাহুবল, দেবিদ্বার, কালিগঞ্জ, মুরাদনগর, মাধবপুরসহ বহু উপজেলায়। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মনে করে— ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসন, ফিলিস্তিনে গণহত্যা এবং আন্তর্জাতিক শক্তির নীরবতা— সবই মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে গভীর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। এই চক্রান্ত মোকাবেলায় মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সাহসিকতা ও সুসংগঠিত প্রতিরোধই একমাত্র পথ। এসএকে/ |