গণতান্ত্রিক রাজনীতি, পিআর ও নিজের নির্বাচন ভাবনা নিয়ে যা বললেন মুফতি আলী হাসান উসামা
প্রকাশ:
২১ জুলাই, ২০২৫, ১০:০১ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
আধুনিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ইসলামী মূল্যবোধ ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটানো কতটা সম্ভব—এই প্রশ্নটি আজ বারবার উঠে আসছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে, যেখানে ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠী একদিকে যেমন ন্যায়ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা প্রত্যাশা করে, অন্যদিকে রাজনৈতিক বাস্তবতা ও নির্বাচনী ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোও জরুরি হয়ে পড়ে। ঠিক এই সময়ে মুফতি আলী হাসান উসামার মতো একজন তরুণ আলেম ও চিন্তাবিদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া নতুন একটি দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করেছে। এই সাক্ষাৎকারে আওয়ার ইসলামের বিশেষ প্রতিনিধি ইনজামামুল হক একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের মাধ্যমে আলী হাসান উসামার রাজনৈতিক অবস্থান, ইসলামি ফিকহ অনুযায়ী বর্তমান ও পূর্ববর্তী কৌশলগত অবস্থান, খেলাফত মজলিসের আলেমদের সম্পৃক্ততা, নির্বাচনে অংশগ্রহণের যৌক্তিকতা, পিআর বিতর্ক, বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচনী সম্ভাবনা নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছেন। ইনজামামুল হক: একটা সময় গণতান্ত্রিক রাজনীতির ঘোর বিরোধী ছিলেন আপনি। এখন সেই গণতান্ত্রিক রাজনীতিতেই ফিরলেন। কেন মনে হলো যে এই গণতন্ত্রের মাধ্যমে দেশের মানুষের সেবা করতে পারবেন? আলী হাসান উসামা: আমরা যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য মেহনত চালাচ্ছি তারা গণতান্ত্রিক রাজনীতির বিরোধী আগেও ছিলাম এখনো আছি চিরকাল থাকবো ইনশাআল্লাহ। গণতন্ত্রের মূল মন্ত্রকে আমরা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে করি। গণতন্ত্রের মূল কথাই হলো সকল ক্ষমতার মালিক এবং উৎস জনগণকে মনে করা। আর আমাদের রাজনীতির প্রথম কথাই হলো সার্বভৌমত্বের মালিক, সকল ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা'আলাকে মনে করা। বাকি এটা নিয়ে কথা হতে পারে যে আপনি তো আগে প্রচলিত এই ধারার রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। এখন কেন জড়িত হয়েছেন? এটার জবাব হলো আগের ধারাটাও সঠিক ছিল। এখন যেই ধারায় আছি সেটাও সঠিক। এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে উভয়টা সঠিক হয় কিভাবে হয়? উভয়টা তো সাংঘর্ষিক। এর জবাব হলো ইসলামী ফিকহের মূলনীতিতে দুটো শব্দ আছে। একটা হল আযীমত আরেকটা হল রুখসত। আযীমত মানে হল দৃহ সংকল্প আর রুখসত মানে হলো ছাড় বা শিথিলতা গ্রহণ করা। যেমন গত রমজানে আমি আলহামদুলিল্লাহ ওমরার সফরে ছিলাম। পুরোটা সময়ই কিন্তু আমি মুসাফির ছিলাম। আমি চাইলে রমজান মাসের ফরজ রোজাগুলো না রাখতে পারতাম। কারণ সফরের সময় একজন মুসাফিরের জন্য ছাড় থাকে। চাইলে সে রোজাগুলো না রাখতে পারে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ সবগুলো রোজা আমি রেখেছি। কেন? আমি আযমত গ্রহণ করেছি। রুখসত আমি গ্রহণ করিনি। জান বাঁচানোর জন্য কুফরি কথা বলা পর্যন্ত জায়েজ আছে। তো আমরা পূর্বে যে অবস্থানে ছিলাম সেটা হলো আযিমতের অবস্থান। এখনের যে অবস্থান সেটা হলো রুখসত বা ছাড়ের অবস্থান। যতদিন পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ ছিল শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ছিল ততদিন পর্যন্ত চূড়ান্ত চাপ নিয়েও- মামলায় ছিলাম, এক বছর জেল খেটেছি- তারপরও আমি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়াইনি। কিন্তু যখন আমরা দেখলাম যে, আলহামদুলিল্লাহ একটা পরিবেশ এবং একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সকলের কথা হলো যে একটা বিপ্লব একটা গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তো সেই গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে জনগণের মধ্যে আমরা যদি ব্যাপকভাবে ইসলামী জাগরণের বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাই আর জনমতকে প্রভাবিত করতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের দাওয়াতের প্রতিটা সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। মূলত এখন প্রচলিত ধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া ও নির্বাচনে আসা, এই সবগুলো হলো জনমতকে ইসলামের ব্যাপারে প্রভাবিত করার জন্য এবং গণ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য। তাই আমার আগের অবস্থানকে আমি ভুল মনে করি না, এখনের অবস্থানকেও ভুল মনে করি না। যেমন হাফেজ্জী হুজুর রহ. সহ আমাদের বহু আকাবিরের জীবনে আমরা এমন দেখি যারা জীবনের বড় একটা অংশ এই ধারার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকা দূরের কথা অনেকে এটাকে পছন্দই করতেন না। কিন্তু শেষ জীবনে যখন তারা দেখেছেন পরিস্থিতিগত কারণে যে এভাবেও একটা বড় খেদমত করা সম্ভব তারা তখন নেমে পড়েছেন। ব্যক্তিস্বার্থ এখানে মুখ্য না। তো আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলতে পারি এখানে আমার নূনতম কোন ব্যক্তিস্বার্থ নেই। ইনজামামুল হক: প্রচলিত ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো যে ধারায় কাজ করছে সেভাবে কি বাংলাদেশের মত একটি রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব? আলী হাসান উসামা: প্রচলিত ধারায় যে দলগুলো কাজ করছে তাদের জন্য দীর্ঘ একটা পথ পাড়ি দিতে হবে। যদি এমন হয় আগামী নির্বাচনে ১০ জন ২০ জন এমপি হয়ে যাচ্ছে আর অটোমেটিক ইসলাম কায়েম হয়ে যাবে বিষয়টা এমন না। প্রতিটা দল যেমন- আমাদের খেলাফত মজলিসের স্লোগানই হলো খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণআন্দোলন গড়ে তুলুন। বাস্তবতা এটাই। মাওলানা আব্দুর রহিম সাহেব একসময় জামায়াতের আমির ছিলেন। পরবর্তীতে জামায়াত থেকে সরে গিয়ে অনেক বইপত্রও লিখেছেন। তার একটা বই আছে এই নামে যে, একটা পূর্ণাঙ্গ বিপ্লব ছাড়া এই জাতির কোন মুক্তি নাই। তো বাস্তবতা এটাই একটা গণবিপ্লব বা গণ আন্দোলন লাগবে। এই যে ফ্যাসিবাদ উৎখাত হয়েছে। গণতন্ত্র দিয়ে বা গণতান্ত্রিক তরিকা দিয়ে তাকে উৎখাত করা সম্ভব হয় নাই। বরং রাজপথে বুলেটের সামনে নিজের বুক পেতে দিতে হয়েছে। তো আমাদেরকে এই দেশের অধিকাংশ মানুষকে এমনভাবে উজ্জীবিত করতে হবে যে, গণ আন্দোলন করার জন্য তারা প্রস্তুত হবে। এখন যারা নির্বাচনে যাবে বা বিভিন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিগুলো নিচ্ছে এটা মূলত ওই দাওয়াতটাকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই মূলত মেহনত। পাশাপাশি আমরা এখন মাইকের সামনে কথা বলা বা আমরা মিডিয়ার সামনে কথা বলা সংসদে দাঁড়িয়ে ইসলামের পক্ষে একটা আওয়াজ তোলা দুইটা সমান না। দুইটার মধ্যে পার্থক্য আছে। ইনজামামুল হক: আপনি খেলাফত মজলিসে যুক্ত রয়েছেন এবং এ দলে আলেমদের অভাব রয়েছে বলে একটি কথা বাজারে প্রচলিত। সেই সংকট নিরসনে আপনি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন কি? আলী হাসান উসামা: খেলাফত মজলিসে আলেমদের অভাব বিষয়টা একটা অবাস্তব কথা। বাস্তবতা হলো, খেলাফত মজলিস শুধুমাত্র আলেমদের সংগঠন না। বাংলাদেশে কিছু সংগঠন আছে শুধু আলেমদেরকে নিয়ে। সেখানে আলেমরাই হল মুখ্য- দুই চারজন সাধারণ জনগণ হয়তো কদাচিৎ সম্পৃক্ত হয়ে আছে। কিন্তু খেলাফত মজলিস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কেন? যে সময় খেলাফত মজলিস প্রতিষ্ঠিত হয় ওই সময় কিন্তু আরো অনেক দল বাংলাদেশে ছিল। তারপরও কেন হয়েছিল? অবিভক্ত খেলাফত মজলিস যখন প্রতিষ্ঠা হয় তখন শুরুর লক্ষ্যই ছিল তিন ধারার মানুষকে নিয়ে আমরা কাজ করব। যার মধ্যে ওলামায়ে কেরামও থাকবেন জনসাধারণও থাকবেন। বাংলাদেশে আলেমের চাইতে সাধারণ জনগণের সংখ্যা কিন্তু অনেক বেশি। ওই তুলনায় মানে পারস্পরিক তুলনা করলে মনে হতে পারে আলেমের সংখ্যা কম। কিন্তু আমি যদি আমার সিলেট বিভাগের কথা বলি। সবচাইতে বেশি আমাদের সংগঠন শক্তিশালী সিলেট বিভাগে। সিলেট বিভাগের যতগুলো কমিটি আছে একদম জেলা, থানা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বলেন আমি যতটুকু দেখেছি অধিকাংশ কমিটির নেতৃত্ব আলেমরাই দিচ্ছেন। তাহলে ঢালাওভাবে যদি বলা হয় যে খেলাফত মজলিসে আলেম কম তাহলে কথাটা ভুল। কিন্তু যদি এই বিবেচনায় বলা হয় যে মোট কর্মী আর সদস্যদের মধ্যে আলেমের চাইতে জনসাধারণ বেশি তাহলে কথা সত্য এবং সেটা যৌক্তিকতা স্পষ্ট কারণ পুরা দেশেই তো আলেম কম জনগণ সেই তুলনায় বেশি। হ্যাঁ এখন বাকি যেটা শেষে বলেছেন যে, এই ব্যাপারে আমার কি ফিকির। আমি বিশেষ করে ওলামা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে এই ফিকির করে যাচ্ছি এবং আলহামদুলিল্লাহ হয়তো দেখেছেন ইতিমধ্যে বাংলাদেশে কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি যারা কেউ মাঠে ময়দানে ওয়াজ করেন, কেউ ইলমের ময়দানে বড় ভূমিকা রাখেন। আমার মাধ্যমে আলহামদুলিল্লাহ সংগঠনে এসেছেন। আগামীতে আরো আসবেন ইনশাআল্লাহ। ইনজামামুল হক: বর্তমান সরকারে একজন আলেম উপদেষ্টা রয়েছেন তার বিভিন্ন কার্যক্রম এবং পদক্ষেপের কারণে দেশে একটি কল্যাণকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। আপনি কি মনে করেন যে নির্বাচনের মাধ্যমে যদি আরো আলেম পার্লামেন্টে যদি যায় তাহলে এটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে? আলী হাসান উসামা: অবশ্যই মঙ্গলজনক হবে। এখন ধর্ম উপদেষ্টা হিসেবে যিনি আছেন- একে তো পুরো উপদেষ্টা পরিষদে একমাত্র আলেম তিনি, দ্বিতীয় আর কোন উপদেষ্টা আলেম না। এমনকি মাদ্রাসায় পড়েছে কিনা সেটাও আমার অজানা। কিন্তু আবার তার মধ্যে তিনি যে সমস্ত সচিব এবং কর্মকর্তাদেরকে নিয়ে কাজ করছেন তারাও যে আলেম বিষয়টা এমন না। তো মাত্র একজন ব্যক্তি আলহামদুলিল্লাহ যতটুকুই পেরেছেন যদিও একটা সিস্টেম দীর্ঘদিন থেকে একভাবে চলে আসছে। আর একটা ক্ষুদ্র মন্ত্রণালয় চাইলেই তিনি সব করে ফেলতে পারবেন এমন না। কিন্তু যতটুকু তিনি করেছেন তার জায়গায় যদি ৫ থাকতেন ১০ জন থাকতেন অবশ্যই কাজটা বেশি হতো। পার্লামেন্ট মেম্বারদেরকে বলা হয় আইন প্রনেতা। তার মানে তাদের মূল কাজ রাস্তাঘাট বানানো না মূল কাজ হলো আইন প্রণয়ন করা। তো সেখানে যদি ইসলামের পক্ষের কণ্ঠস্বর ওলামায়ে কেরাম থাকেন তাহলে আইনগুলো অবশ্যই কোরআন সুন্নাহকে অনুকূলে রেখে এর সমর্থনেই প্রণীত হবে। আর যদি সেখানে সেক্যুলার বেশি থাকে নাস্তিক বেশি থাকে তাহলে কোরআন সুন্নাহ বিরোধী আইনে বাড়বে। আমি তো মনে করি আগামী যে জাতীয় নির্বাচনে আসছে অন্ততপক্ষে হলেও ৫০ জন আলেম সংসদে যাওয়া দরকার। তো যখন এত মানুষ ইসলামের পক্ষে থাকবে তখন এককন নাস্তিকও যদি দাঁড়ায় সে কথা বলার আগে ১০ বার ভাববে যে, আমাকে কাউন্টার দেওয়ার জন্য আরেকজন আলেম এখানে বসে আছে আর আলেমদেরকে আল্লাহ যে জবান দিয়েছেন সুবহানাল্লাহ একবার কাউন্টার দিলে দ্বিতীয়বার কথা বলার আগে ১০ বার ভাববে ইনশাআল্লাহ। ইনজামামুল হক: যেহেতু নির্বাচন একেবারেই নাকের ডকা চলে এসেছে এবং মনে করা হচ্ছিল যে নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো একত্রিত হয়ে নির্বাচন করবেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে পিআর নিয়ে একটি আলোচনা শুরু হয়ে গেল। আপনার দলও পিআরের পক্ষেই আছে। তো এই বিষয়টি নিয়ে কি বলবেন? আলী হাসান উসামা: পিআরের আলোচনা যারা তুলেছেন তারাও যে আলোচনাটা নতুন তুলেছেন তা না। যেমন ইসলামী আন্দোলন আলোচনা করছে। আমার জানামতে তারা আরো এক যুগের অধিক সময় আগ থেকে এটি কথা বলে আসছে। সুতরাং আলোচনাটা নতুন না। আলোচনা পুরনো তবে মিডিয়ায় একটু বেশি হাইলাইট ইদানি হয়েছে। আপনি একটা বিষয় বললেন যে আমাদের সংগঠনও পিআরের পক্ষে আছে। তথ্যটা সঠিক না। আমরা দলগতভাবে এখনো পিআরের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন অফিশিয়াল মতামত দেই নাই। এখনো পর্যন্ত এটা আমাদের বিভিন্ন ব্যক্তিগত মতের পর্যায়ে রয়ে গেছে এবং আমাদের কেন্দ্রীয় যে সমস্ত দায়িত্বশীলগণ আছেন এর বড় একটা অংশই পিআরের পক্ষে এখনো পর্যন্ত ঢালাওভাবে কথা বলেননি। যদি আগামী সংসদে দুই কক্ষ বিশিষ্ট হয়। স্বাভাবিকভাবে আমাদের দেশে তো এক কক্ষ চলছিল যদি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ হয় তাহলে উচ্চকক্ষ যেটা হবে সেখানে পিআর থাকার ব্যাপারে অনেকে মতামত দিয়েছেন। এটা নিয়ে আমাদের দ্বিমত নেই। কিন্তু নিম্নকক্ষ বা সাধারণ যে কক্ষটা আছে সেখানে পিআরটাকে আমরা এখনো পর্যন্ত উপযুক্ত মনে করতে পারছি না এবং বাস্তবতা হলো এই দেশের অধিকাংশ মানুষও এখনো এটার ব্যাপারে একমত না। আর একমত হবে কিভাবে? মানুষ তো পিআর কি আইসক্রিমের নাম নাকি এটা কোন চকলেটের নাম? এটাও তো সাধারণ মানুষ জানে না। তো আগে তো মানুষ জানবে বুঝবে। এরপর একটা মত দিবে। এখন এর মধ্যে কিছু লাভও আছে, কিছু ক্ষতিও আছে। আমি মনে করি যেহেতু এখন ইসলামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন নিয়ে কথা হচ্ছে। এই মুহূর্তে পিআরটাকে আপাতত আলোচনায় না আনাটাই ভালো হবে। সরকার বা ঐক্যমত কমিশন তারা কিন্তু এখনো পিআ নিয়ে আমার জানামতে একটা শব্দও করছে না। পাত্তাই দিচ্ছে না ইস্যুটা। এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না কেন? এই যেমন জাতিসংঘের ইস্যুটা নিয়ে আমরা আন্দোলন করলাম। ইসলামপন্থীরা আন্দোলন করল, কিন্তু তারা ঠিকই খুলে দিয়েছে। কেন? ইসলামপন্থীদের এই কথাকে তারা পাত্তাই দিচ্ছে না। তাহলে পিআরের ক্ষেত্রে আমরা ধরতে পারি এটিওও এই সরকার পাত্তা নাও দিতে পারে। ইনজামামুল হক: ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেক সিদ্ধান্ত বিতর্ক সৃষ্টি করছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর অনুমোদন এবং এর আগে নারী সংস্কার কমিশন নিয়েও বিতর্ক উঠেছিল। সরকারের এসব কার্যক্রমকে আপনারা কিভাবে দেখেন?
আলী হাসান উসামা: নির্বাচনের বিজয়ের ব্যাপারে ইনশাআল্লাহ আমরা ১০০% আশাবাদী। এত পরে আমরা যে মাঠে নেমেছি ইতিমধ্যে কোন কোন প্রার্থী কেউ দুই মাস, কেউ চার মাস, কেউ ছয় মাস মাঠে কাজ করছেন। আমরা এত পরে নেমেছি। কেন? আমরা এগুলো হিসাব-নিকাশ করেই মাঠে নেমেছি। গায়ে যখন কাদা লাগাবো, বিজয় নিয়েই ঘরে ফিরবো। গায়ে কাদা লাগাবো কিনা এটা নিয়ে আগে সময় নেওয়া যায়। কিন্তু ময়দানে একবার যখন নেমে গিয়েছি, বিজয়ী হওয়া ছাড়া আমরা ফিরবো না ইনশাআল্লাহ। এখন আমাদের সামনে নির্বাচনের কিছু অস্পষ্টতা আছে। এক নম্বরে হলো নির্বাচনটা আদৌ তাড়াতাড়ি হবে কিনা? সরকার যে ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের কথায় আলোচনায় আসছে এটা হবে কিনা এখনো কিন্তু অস্পষ্টতা এবং ধোঁয়াশা আছে। যতদিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হবে এই ধোঁয়াশা থাকবে। ইসলামপন্থীদের ঐক্যটাও এখনো স্পষ্ট হচ্ছে না এই জটিলতার কারণেই। আমি মনে করি যদি নির্বাচন যথাসময়ে হয় এবং ইসলামপন্থীরা ঐক্যের ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত নীতিগতভাবে যে একমত আছেন এটা বজায় রাখতে পারে এবং আমার আসনের যে অবস্থা সেখানেও আমরা এগুলো ফিল্ড জরিপ করে দেখেছি। যদি ইসলামপন্থের ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে পারে ইনশাআল্লাহ সুম্মা ইনশআল্লাহ কেউ নাই যে আমাদের বিজয় রুখে দেবে। তবে আমরাই যদি পারস্পরিক কামড়ামড়িতে লিপ্ত হই এবং এক আলেমের মোকাবেলায় এক সাধারণকে দাঁড় করি তাহলে আবার সমস্যা। তবে আমরা সবকিছুর পর আশাবাদী ইনশাআল্লাহ ঐক্য বজায় থাকবে এবং চূড়ান্ত বিজয় আসবে ইনশাআল্লাহ। সবচাইতে বড় প্লাস পয়েন্ট হলো এই সিলেট-৪ আসন। আমার নির্বাচনী আসন যেটা এখানে অধিকাংশ মানুষ ধর্মপ্রাণ। তারা ইসলামের জন্য নিবেদিত প্রাণ এবং ওলামায়ে কেরামকে তারা নিজের প্রাণের চাইতেও বেশি ভালোবাসেন এবং এবার আলেমদেরকে দেখার একটা স্বপ্ন দেখেন আর আলহামদুলিল্লাহ আমরা আমাদের পরিকল্পনাও হয়তো দেখেছেন। ইতিমধ্যে জনগণের সামনে উপস্থাপন করেছি আমরা কি চাই কেন চাই কিভাবে চাই আমি এই যে একটা পরিকল্পনা ২২ দফা আমি ঘোষণা দিয়েছি। আমার আগ পর্যন্ত একজন প্রার্থীও এরকম গোছালো পরিকল্পনা উপস্থাপন করে নাই।তারাশুধু আমারে ভোট দাও ভোট দাও ভোট দাও বলছে। কিন্তু এই যে আমরা জনগণকে বোঝাচ্ছি যে এভাবে এভাবে ভ এই পয়েন্টে কাজ করলে পরিবর্তন সম্ভব। আমরা দেখতে পাচ্ছি জনগণের মধ্যে অতি অল্প সময়ে মাত্র দুই তিন দিনের মধ্যে যে সাড়া দেখেছি ইনশাআল্লাহ সুম্মা ইনশাআল্লাহ আমরা বিজয় নিয়ে ঘরে ফিরব। ইনজামামুল হক: আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ আলী হাসান উসামা: আপনাকেও ধন্যবাদ |