আমাদের জাতীয় দৈনিক: হতাশা ও স্বপ্নের কথা
প্রকাশ:
২৯ জুলাই, ২০২৫, ১১:৫২ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
||মিযানুর রহমান জামীল|| সাপ্তাহিক `যরবে মুমিন’ এর পাঠক বিশ লাখ। রোজানা ইসলাম, বাঁচ্চু কা ইসলাম, খাওয়াতিন কা ইসলাম, দ্য ইন্টারন্যাশনাল তো নিয়মিত বিপ্লব। খুশির কোনো কারণ নেই— এটা আমাদের দেশের কোনো ইতিহাস নয়। এ দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররাও জানতো না তাদের সাহিত্য কাফেলা, মাসিক-ত্রৈমাসিক পত্রিকা, স্মরণিকা বা দেয়ালিকার নাম কী? তবে মন খারাপেরও কারণ নেই, আশার কথা হলো- এখন সেই ঘোর কাটতে শুরু করেছে। ঘোর কাটার শুরু অধ্যায়ে লুকিয়ে আছে অনেকের ত্যাগ বিসর্জন এবং হাল না ছাড়া তথা লেগে থাকার করুণ ঘটনা। আমরা তাদের মূল্যায়ন করতে জানি না। কারণ সময় থাকতে বুঝি না বরং সময় হারিয়ে গেলে বুঝি আমরা। সুতরাং সামনে স্বপ্ন দেখার সবচেয়ে বড় ঘটনা হবে জাতীয় দৈনিক বা চ্যানেল। ছিন্নমূল শিশু বা নূরানীর ছাত্রদের পড়ানোকে খাটো করে দেখা যেসব বড়গণ হাদিসের মসনদকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন- তারা হয়তো বার্ষিক, ত্রৈমাসিক, মাসিক, পাক্ষিকের মতো মিনিগুলো ধরে রাখার চেয়ে বড় কিছু (জাতীয় দৈনিক) করতে এবং ধরে রাখতে সক্ষম হবেন আশা করি। হিন্দুস্তান পাকিস্তানের বরেণ্য-অবরেণ্য আলেম-ওলামার দ্বারা যে কাজটা হয় সে কাজটা তো আমাদের বরেণ্যদের দ্বারাও হতে পারে ইনশাআল্লাহ। সীমিত কিছু ঢিলছোড়া আপত্তি বা অপরিণত অভিযোগ ছাড়া কাজ শুরু করলে এগিয়ে নেওয়ার মতো জনবল তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। বৃহৎ উদ্যোগে সিনিয়ররা না থাকলে জুনিয়ররা উদ্যোগ নিতে পারেন। তবে কথার বল্লম দিয়ে তাদের টুঁটি চেপে না ধরে নিজের কাজ মনে করে এ ব্যাপারে সামনে বাড়ার সৎসাহস যোগানোই হবে উদার মনের পরিচয়। মোটকথা কাজ হওয়া দরকার। আওয়ার ইসলাম নিউজপোর্টাল— হুমায়ুন আইয়ুব সম্পাদিত একটি অনলাইন মিডিয়া। এটা এখন দেশের লাখো মানুষের চেতনা ও বিশ্বাসের কণ্ঠ। পোর্টাল মানেই ঘরে বসে সেকেন্ডের মধ্যেই বিশ্বকে জানার সহজ উপায়। তবে সত্য এবং সময় দুটো জিনিস ধরে রাখার মধ্যে আওয়ার ইসলামের ধীরে ধীরে জেগে ওঠা, আর্থিক বহুমুখী সমস্যার পরও হাল না ছাড়া, অনলাইন আরও পোর্টালের সাথে টক্কর দিয়ে পথচলা, তারপর লোকবল তৈরি, এখন বৈরী পরিবেশেও দীপ্তকণ্ঠ— এক কথায় আমাদের আস্থার ঠিকানা আওয়ার ইসলাম। প্রায় জাতীয় দৈনিকগুলোর ঘটনাও এরকম। মাদরাসা মসজিদ হলো ইসলাম টিকিয়ে রাখার মহান পাঠশালা— এখানে ব্যক্তি থেকে শুরু করে দান সদকা করার মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠান থাকলেও ইসলামিক বিপ্লব বা ইসলামবিরোধীদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে আমাদের একটা জাতীয় দৈনিক নেই। এ শূন্যতা আমরা দীর্ঘদিন অনুভব করে যাচ্ছি। প্রিন্ট মিডিয়ার ফর্মুলা, লোকবল, নেতৃত্ব এমনকি আর্থিক যোগান দেওয়ার মতো ব্যক্তিরা থাকার পরও উদ্যোগ নিচ্ছে না কেউ। এক কথায় স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সাহস করে এগিয়ে আসছে না কেউ। গণমাধ্যম নির্মাণের ক্ষেত্রে আমাদের উদ্যোগ গ্রহণ বা হাল ধরায় শূন্যতা থাকতে পারে, কিন্তু কর্মক্ষেত্রের কোনো অপূর্ণতা নেই। থাকতে পারে থেমে যাওয়ার ভয় কিন্তু বুকের পাজরে জমে আছে হাল না ছাড়ার শক্তি। আটকা পড়ার সাময়িক ভীতি, নিরুৎসাহ বা হতাশা থাকতে পারে কিন্তু চালিয়ে যাওয়ার মতো বুক টান করে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন আরও একজন মাওলানা মহিউদ্দীন খান রহ.! একাডেমিক ঘাটতির অবসান হওয়া পর্যন্ত আমরা হয়তো সে আলোকিত ভোরের অপেক্ষায় থাকবো! অন্যথায় বুকের ঘুমন্ত স্পৃহা এবং জ্বলনই আনতে পারে অপেক্ষার সেই রাঙা ভোর! লেখক: সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম, সম্পাদক, কলমসৈনিক এনএইচ/ |