রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ চাপে থাকায় মালয়েশিয়ার ‘উদ্বেগ’
প্রকাশ: ১২ আগস্ট, ২০২৫, ০৬:৪৩ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

মায়ানমারের রাখাইনে হত্যা ও নিপীড়নের মুখে পালিয়ে আসা বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছে তা নিয়ে মালয়েশিয়া উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) পুত্রাজায়ায় এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। 

আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘আঞ্চলিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের ওপর যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, আমরা অবশ্যই তাতে উদ্বিগ্ন।’

তিনি বলেন, ‘মায়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অবশ্যই একটা বড় বিষয়। একই সঙ্গে দুর্ভোগে থাকা শরণার্থী ও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তাও প্রয়োজন।’

তিনি নিউইয়র্ক, কলকাতা ও মালয়েশিয়ায় বহুপাক্ষিক ফোরামে উদ্যোগ নেওয়ায় বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন।

তিনি জানান, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে একটি দল গঠন করে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মায়ানমার সফর করবেন। এর উদ্দেশ্য হলো, সেখানে শান্তি নিশ্চিত করা এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর যে নৃশংসতা চলছে, তার একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করা।

মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক নিয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখে। কারণ বাংলাদেশের কর্মীরা এখানে একসঙ্গে কাজ করে মালয়েশিয়ার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।’

এ কারণেই মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মানবসম্পদ মন্ত্রী বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করতে সম্মত হয়েছেন, যাতে বাংলাদেশের কর্মীরা তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারে এবং কর্মস্থলে নিরাপদ বোধ করে, বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন এবং সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে আটকাপড়া কর্মীদের সহায়তার জন্য।’

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পেট্রোনাসের সঙ্গে জ্বালানি খাতে এবং আজিয়াটার সঙ্গে টেলিযোগাযোগ খাতে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি এখন আমরা এই সহযোগিতাকে হালাল, এসটিইএম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত), গবেষণা এবং সেমিকন্ডাক্টর খাতে জোরদার করতে চাই।’

অধ্যাপক ইউনূসকে মালয়েশিয়ার একজন মহান বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘বাংলাদেশের এই ক্রান্তিলগ্নে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অধ্যাপক ইউনূস অসাধারণ অগ্রগতি এনেছেন। এখন তিনি মালয়েশিয়ার সঙ্গে বিনিয়োগ, বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও শিক্ষাক্ষেত্রে সম্পর্ক আরো উন্নয়নে কাজ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূসকে এই দেশের মানুষ চিনে তার অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য। যা দরিদ্র ও অসহায়দের জন্য সুযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে মাইক্রোক্রেডিট এবং কেদাহর আলবুখারি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা সৃষ্টি করা।’

এমএইচ/