ওয়াই-ফাইয়ের রেডিয়েশন, স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?
প্রকাশ:
২৭ আগস্ট, ২০২৫, ০৮:১৯ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
আধুনিক জীবনে ইন্টারনেট এখন এক অপরিহার্য সঙ্গী। ঘরে-বাইরে, অফিস থেকে শুরু করে ক্যাফে পর্যন্ত—প্রায় সর্বত্রই ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ কিংবা স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবহার আমাদের জীবনকে সহজ করেছে বটে, তবে এর রেডিয়েশন মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর কি না—তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা চলছে। মেডিকেল কলেজ অব উইসকনসিনের রেডিয়েশন অনকোলজির অধ্যাপক জন মোল্ডারের নেতৃত্বে ২০১৩ সালে পরিচালিত একটি পর্যালোচনা গবেষণায় দেখা যায়, ওয়াই-ফাই রেডিয়েশনের প্রভাব একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। মূলত ওয়াই-ফাই রাউটার ও মোবাইল ফোন রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করে তথ্য আদান-প্রদান করে। ১৯৫০-এর দশক থেকেই মানুষের শরীরে রেডিও ওয়েভের প্রভাব নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। সে সময় শক্তিশালী রাডার ব্যবহারের কারণে নৌবাহিনীর সদস্যদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, উচ্চমাত্রার বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় রেডিয়েশন ক্যানসার বা টিউমার সৃষ্টি করতে পারে। তবে ওয়াই-ফাই রাউটার বা মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত নিম্ন-ফ্রিকোয়েন্সির তরঙ্গ তুলনামূলক কম ক্ষতিকর। সাধারণত তা ত্বকের ক্ষুদ্র সমস্যার বাইরে বড় কোনো জটিলতা তৈরি করে না। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক কেনেথ ফস্টার বলেন, “ওয়াই-ফাই রাউটার আসলে মাত্র ০.১ শতাংশ সময় তথ্য পাঠায়, বাকি সময় এটি অপেক্ষায় থাকে। তাই রাউটার থেকে যত দূরে থাকা যায়, শরীরের ওপর রেডিয়েশনের প্রভাব তত কম হয়।” তবে সবাই এতটা আশ্বস্ত নন। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জোয়েল মোস্কোভিটজ সতর্ক করে বলেন, প্রাণীর ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি নিম্নমাত্রার রেডিয়েশনও স্নায়বিক সমস্যা, প্রজনন ব্যাধি এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থা (IARC) মোবাইল ফোনকে ‘সম্ভাব্য ক্যানসার সৃষ্টিকারী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। যদিও এখনো ওয়াই-ফাই সরাসরি ক্যানসার ঘটায়—এমন পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি হতে পারে, কারণ তাদের শরীর বেড়ে উঠছে এবং এক্সপোজারও দীর্ঘমেয়াদে বাড়ছে। তাই সতর্ক থাকা জরুরি। যেমন—ডিভাইস শরীর থেকে দূরে রাখা এবং ব্যবহার না করলে ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখা। সূত্র: টাইম ম্যাগাজিন এমএইচ/ |