ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক চরম উত্তেজনার সময়ে পাকিস্তানের দৃঢ় ও সাহসী নেতৃত্বে মুগ্ধ হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের নেতৃত্ব খুবই শক্তিশালী। কেউ কেউ হয়তো আমার এই বক্তব্য পছন্দ করবে না, কিন্তু এটাই সত্য।”
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৫ জুন) হোয়াইট হাউসে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ–এর সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ট্রাম্প এ মন্তব্য করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, এটি ছিল ৬ মে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের পর ট্রাম্প ও মের্জের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। খবর: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
বৈঠকে বৈশ্বিক নানা ইস্যুর পাশাপাশি আলোচনায় উঠে আসে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সর্বশেষ পরিস্থিতি। উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরে এক প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। প্রমাণ ছাড়াই ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।
এর জেরে ভারত ৬৫ বছর পুরোনো সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে, বাণিজ্য বন্ধ করে এবং সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ায়। পাল্টা হিসেবে পাকিস্তানও আকাশপথে ভারতীয় উড়োজাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত করে।
উভয় দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিমান হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়, যাতে বহু মানুষ হতাহত হন। ৭ মে ভারত পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে বিমান হামলা চালায় এবং আজাদ কাশ্মীরেও আঘাত হানে। জবাবে পাকিস্তান ভারতীয় রাফায়েল যুদ্ধবিমান ও ড্রোন ভূপাতিত করে।
১০ মে ভারত পাকিস্তানের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালালে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসূস’ চালিয়ে ভারতের সামরিক স্থাপনায় পাল্টা আঘাত হানে। যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো এই সংঘাত থামাতে সক্রিয় হন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ট্রাম্প জানান, তিনি দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে গভীরভাবে কথা বলেছেন এবং পরমাণু যুদ্ধ এড়াতে চাপ প্রয়োগ করেছেন। তার ভাষায়,
“আমি বলেছিলাম, যদি তোমরা পরমাণু অস্ত্র উঁচিয়ে পরস্পরের দিকে গুলি চালাও, তাহলে আমাদের বাণিজ্য হবে না।”
এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলেই ১০ মে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়, যা পরে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা নিশ্চিত করেন।
যদিও পাকিস্তান ট্রাম্পসহ চীন ও উপসাগরীয় দেশগুলোর ভূমিকার প্রশংসা করে, ভারত এই যুদ্ধবিরতিকে নিজেদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সফলতা বলে দাবি করে।
যুদ্ধবিরতির পেছনে নিজের ভূমিকা নিয়ে ট্রাম্প বলেন,
“আমি সেই যুদ্ধ থামিয়েছি। আমি এতে খুব গর্বিত। আশা করি তারা আবার শুরু করবে না।”
যদিও তিনি উভয় পক্ষের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন, পাকিস্তানের ‘দৃঢ় নেতৃত্ব’-এর ওপর তিনি বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।
সংক্ষেপে: পাক-ভারত যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছিল, তখন ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার একটি তাৎপর্যপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়ায়।
এসএকে/