অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান থেকে নিয়ে সকল উপদেষ্টা বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সংযত হওয়া দরকার। তাদের অসংযত বক্তব্য, বিবৃতির কারণে নতুন নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে এ সরকারের প্রতি জনগণের আস্থার ঘাটতির দ্বার উন্মোচিত হতে চলছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। শুরুতেই তো একজন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টাকে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার জন্য তার মন্ত্রণালয়ও পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। তিনি মিডিয়ার সম্মুখে খুব বেশী ‘ফরফর’ করেছেন। তাকে এখন আর তেমন একটা ‘বরবর’ করতে দেখা যায় না। আইনের প্রোফেসর উপদেষ্টারও ‘বকবকানি’ কম ছিল না। অদৃশ্যের ‘কলকাঠি’ নাড়ান নিয়ে তার সম্পর্কে স্যোশাল মিডিয়ার পর্দায় বেশ কিছু অভিযোগও ভেসে বেড়ায়।
নির্বাচন, বিচার এবং সংস্কার বিতর্ক জিয়ে রাখছে কোনো কোনো উপদেষ্টা। রাজনৈতিক দলগুলোর এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজেস্ব কর্মকৌশল রয়েছে। সে বিবেচনায় কেউ নির্বাচন দাবি করবে, কেউবা আগে বিচার পরে নির্বাচন, কেউবা আমূল সংস্কার পরবর্তী নির্বাচনের দাবি করতে পারে। সরকারের এ বিতর্কে না জড়িয়ে সকল রাজনৈতিক দলকে আস্থার জায়গায় অটুট রাখা দরকার ছিল। সরকারের বক্তব্য অনেকটা দলীয় সরকারের মতো হয়ে যায়। কোনো দলকে প্রতিপক্ষ কোনো দলকে স্বপক্ষ বানিয়ে ফেলছে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পর পরস্পরের প্রতি সন্দেহের নজরও আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেতে চলছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড.ইউনুস জাপান সফরে মাত্র একটি দল নির্বাচন দাবি করছে বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বিলকুল সঠিক নয়। তার এ ধরনের অবাস্তব বক্তব্য জনমনে হতাশা সৃষ্টি করছে। অশনি সংকেত বলে মনে করছে। তাকেই তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হবে। তার কোনো বক্তব্য, বিবৃতি তাকে বিতর্কিত করবে, জনগণ এখন তা প্রত্যাশা করে না। যতদিন যাচ্ছে ততোই যেন তিনি এবং তার উপদেষ্টারা বিতর্কের জায়াগায় অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে যাচ্ছেন। মাঈনুদ্দীন, ফখরুদ্দীন মার্কা কোনো নির্বাচন এ দেশের জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় কিনা, সে শংকার কথাও কারো কারো মূখ থেকে শুনা যায়।
প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের চিন্তার কথা সদ্য জন্ম নেয়া রাজনৈতিক দলের প্রধানের মাধ্যমে দেশবাসী জানতে পারে। এ বিষয়টি নিয়ে নানাজনের নানা মন্তব্য শুনা যায়। এ মুহূর্তে দেশবাসীর নিকট তার পদত্যাগ কাম্য নয়। কোনো কারণে পদত্যাগের ভাবনা তার অন্তরে তৈরি হলে তিনি সকল রাজনৈতিক দলকে তার দরবারে ডেকে জানাতে পারতেন। কারণ তিনি অধিকাংশ দলের পছন্দের জায়গায় থেকে প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত হয়েছেন।
কথিত মানবিক করিডোর, বন্দর বিষয়ে সরকারের ভূমিকা খাল কেটে কুমির আনার মতোই বলছেন বিজ্ঞজনরা। সাম্রাজ্যবাদের দখলদারিত্বের পথ খুলে দেওয়া হচ্ছে বলে অনেকে মন্তব্য করছেন। সাময়িক সরকারের এসব জটিল ব্যাপারে নিজেকে না জড়ানোই মঙ্গলজনক ছিল। করিডোরে, বন্দর কে অজুহাত বানিয়ে সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির এ দেশে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মতো জেঁকে বসার শংকা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এনএইচ/