সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
সাদপন্থীদের আমির ওয়াসিফুল ইসলাম, শুরায়ি নেজামের বার্তা কোনো মুসলমান সেকুলারিজম সরকার গঠন করতে পারে না: ইবনে শাইখুল হাদিস পশ্চিম তীরে ৪ বিদেশির ওপর ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলা বিশ্ববাজারে আফগানিস্তানের সাফল্য: হেরাতের রপ্তানি তিনগুণ প্লট বরাদ্দে জালিয়াতি : হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের রায় আজ প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা নেতানিয়াহুর, ইসরায়েলে তীব্র বিক্ষোভ  স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশের সঙ্গে সেলফি ৫০ কোটির বেশি মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে : এফএও ঐশ্বরিয়াকে ইসলামে দীক্ষিত করে বিয়ের ঘোষণা পাকিস্তানি মুফতির ‘আগামীতে সংসদ-সচিবালয় সব চলবে কোরআন দিয়ে’

প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা নেতানিয়াহুর, ইসরায়েলে তীব্র বিক্ষোভ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে চলমান দুর্নীতির মামলাগুলো থেকে অব্যাহতি চেয়ে প্রেসিডেন্ট ইসাক হেরজগের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। রোববার এক ভিডিওবার্তায় তিনি নিজেই জানিয়েছেন যে তাঁর আইনজীবীরা ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে ক্ষমার চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন। নেতানিয়াহুর দাবি, “যারা দেশের মঙ্গল চান, তারা আমার পদক্ষেপকে সমর্থন করবেন।”

প্রেসিডেন্টের দপ্তর চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে একে “বিস্ময়কর অনুরোধ” হিসেবে বর্ণনা করেছে। প্রেসিডেন্ট হেরজগ জানিয়েছেন, বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও তথ্য সংগ্রহের পরই তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।

নেতানিয়াহুর ভিডিওবার্তা প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তেল আবিবসহ বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনেও মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ–সমাবেশ করে। বিক্ষোভে অংশ নেন ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের বিরোধীদলীয় এমপিরাও। বিরোধীদলীয় এমপি নামা লাজিমি বলেন, “যদি প্রেসিডেন্ট ক্ষমা মঞ্জুর করেন, তবে ইসরায়েল বানানা রিপাবলিকে পরিণত হবে।”

বিক্ষোভকারীরা “ক্ষমা মানে বানানা রিপাবলিক” স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে তুলেন। অনেকেই নেতানিয়াহুর ব্যঙ্গচিত্র বা কুশপুতুল নিয়েও বিক্ষোভে যোগ দেন। মানবাধিকারকর্মী শিকমা ব্রেসলার বলেন, “নেতানিয়াহু দেশকে গভীর সংকটে ফেলেছেন। এখন কোনো দায় না নিয়েই তিনি বিচার থেকে রেহাই চান—এটা জনগণ কখনো মেনে নেবে না।”

প্রধান বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদও নেতানিয়াহুর ক্ষমা প্রার্থনার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “তিনি কখনো নিজের অপরাধ স্বীকার করেননি, কোনো অনুতাপও নেই। তাঁর উচিত রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া; ক্ষমা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”


নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জেরুজালেম জেলা আদালতে তিনটি দুর্নীতির মামলা চলছে। ২০১৯ সালে দায়ের হওয়া এসব মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ও তাঁর স্ত্রী ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অলঙ্কার, দামী মদ ও সিগার উপহার হিসেবে নিয়েছিলেন—যার মূল্য প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার। আরেক মামলায় অভিযোগ, গণমাধ্যমে ইতিবাচক প্রচার পেতে তিনি মিডিয়া মালিকদের অবৈধ রাষ্ট্রীয় সুবিধা দিয়েছেন। তৃতীয় মামলায় বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান বেজেককে নানান সুবিধা পাইয়ে দিতে ঘুষ গ্রহণ করেছিলেন তিনি।

প্রথম দফায় ২০১৯ সালে নিজে প্রধানমন্ত্রী থাকায় নেতানিয়াহু বিচারিক প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে সক্ষম হন। তবে ২০২১ সালে বিরোধী দলে যাওয়ার পর মামলাগুলো আবার সক্রিয় হয়। গত ৭ অক্টোবর হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধের পর বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন এসব মামলার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও সম্প্রতি যুদ্ধবিরতির পর বিচারকাজ আবার শুরু হয়েছে। ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় প্রধানমন্ত্রী থাকা নেতানিয়াহুই দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে। যদিও তিনি শুরু থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ