জুলাই–আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, “জুলাই গণহত্যার বিচারের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে—দেশে হাসিনার নিষ্ঠুর ফ্যাসিস্ট শাসনের আগমন যেন আর কখনও না ঘটে।”
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে চলমান মামলার দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের সময় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
মাহমুদুর বলেন, কোনো ফ্যাসিস্ট শাসন গণতান্ত্রিক উপায়ে স্থায়ীভাবে রোধ করা যায় না—এ ধরনের শাসনকে জনগণের সক্রিয় গণপ্রত্যাখ্যান ও বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে নির্মূল করতে হয়। তিনি উদাহরণ দিয়ে জানান, মধ্যপ্রাচ্যের বহু দেশে গণঅভ্যুত্থান ও আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরশাসন পতিত হয়েছে; ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে এরশাদের পতনও এ ধরণের আন্দোলনের ফলাফল ছিল।
তিনি আরও বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মুসোলিনি ও হিটলারের পতন হয়েছে; সেই পরবর্তী প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বে ‘নেভার অ্যাগেইন’ কথাটি উচ্চারণ করা হয়—এদেশেও মানুষ চায়, আর কখনও এমন নিষ্ঠুর শাসন ফিরে না আসুক।”
মাহমুদুর বলেন, জুলাই আন্দোলনে নিহত শহীদদের পরিবার ন্যায়বিচারের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। পাশাপাশি প্রায় ২০ হাজার আহত ‘জুলাইযোদ্ধা’ কঠোর কষ্টে দিন কাটাচ্ছে এবং তারা চান, যারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত এবং কমান্ড রেসপনসিবল—তাদের বিচার হোক। তিনি অভিযোগ করেন, মামলার অভিযুক্তরা হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতা বন্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
নিজের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পর্কে মাহমুদুর জানান, ১১ বছর ধরে তিনি ফ্যাসিবাদের উত্থান ও বিকাশ প্রত্যক্ষ করেছেন এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, লেখায় ও মিডিয়ায় জনগণকে এ বিষয়ে অবহিত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “অপরাধীরা যেন দণ্ডপ্রাপ্ত হয়—তাই আমরা চাই ন্যায়বিচার হোক, যাতে শহীদ পরিবার ও আহতদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়।”
এমএইচ/