রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
সিলেটে ১ মাস ধরে নিখোঁজ আবিদুল মিয়া সিলেট মহানগরীর ২০নং ওয়ার্ড যুব জমিয়তের আহবায়ক কমিটি গঠন সম্পন্ন পেশীশক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম বন্ধে পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন- আহমদ আবদুল কাইয়ূম জেদ্দায় হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনী নভেম্বরে আজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিস বানিয়াচং উপজেলা শাখার ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন ‘নীলনদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতেও ইসলাম নেই’ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সম্পাদক মাজহারুল ‘ইসলামি শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকুন’ গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা

হিজাব ডে: ইসলামবিদ্বেষ বনাম নারীর অধিকার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ত্বরিকুল ইসলাম
রাজনৈতিক বিশ্লেষক

আসন্ন ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক বা বিশ্ব হিজাব দিবস পালিত হতে যাচ্ছে।

মডার্ন দুনিয়ায় মুসলমানদের জন্য কয়েকটি দিবস পালনের বৈশ্বিক রাজনৈতিক গুরুত্ব ও আবেদন আছে। যেমন, আল কুদস দিবস ও নাকবা দিবস।

তেমনি সর্বসাম্প্রতিক আরেকটা দিবস ইসলামবিদ্বেষ ও ইসলামভীতি প্রতিরোধে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে- বিশ্ব হিজাব দিবস বা আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস!

ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, ফ্রান্স ও জার্মানিসহ ইউরোপের প্রায় ১০টি শীর্ষ উন্নত দেশে হিজাব ও বোরকা নিষিদ্ধ করে আইন আছে (আইন লঙ্ঘন করলে জরিমানার বিধানও আছে)। এমনকি ইউরোপের কয়েকটি দেশে প্রায়ই হিজাবধারী বা বুরকাধারীদের আক্রমণের শিকার হতে হয়।

এমনকি অস্ট্রেলিয়া, কানাডার একটি প্রদেশ এবং মুসলিমপ্রধান দেশ হয়েও তাজিকিস্তানেও হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এসব দেশে হিজাব ও বোরকা নিষিদ্ধ করার উদ্দেশ্য একটাই: সেকুলার মূল্যবোধ সংরক্ষণ করা। সন্দেহ নেই, তাদের ক্রমবর্ধমান ইসলামাতঙ্ক ও ইসলামবিদ্বেষই এর পেছনে মূল অনুঘটক হিসেবে ক্রিয়াশীল। কেননা হিজাব ও বুরকা ইসলামী মূল্যবোধের একটি প্রভাবশালী সিম্বল। তাই তাদের মডার্ন, সেকুলার ও লিবারেল মূল্যবোধের বিপরীতে হিজাব ও বুরকাকে তারা একটি অ্যাপালিং চ্যালেঞ্জ হিসেবে ভেবে ফোবিয়ায় ভুগে।

সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশেও প্রায়ই একশ্রেণির ঘৃণাজীবী আধুনিক প্রগতিশীল সেকুলারমনারা হিজাব ও বুরকাকে ‘মধ্যযুগীয়’ আখ্যা দিয়ে তাদের ইসলামবিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।

মজার ব্যাপার হলো, মি-টু আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এসব মহান আধুনিক প্রগতিশীল অনেকের আবার উগ্র কামুক বা ধর্ষক-চরিত্র উন্মোচিত হয়! তখন কিন্তু সেকুলার প্রগতিশীল মূল্যবোধের সমালোচনা দেখা যায় না। আর পান থেকে চুন খসলেই সব দোষ তারা ইসলামের ওপর দেয়।

তাছাড়া মিতা হকরা ঘোমটা, হিজাব বা বুরকাধারী আমাদের মা-বোনদের ‘বাঙালি’ মনে করেন না, বরং শুধু মুসলমানই মনে করেন। যেন মুসলমানি মূল্যবোধ ধারণ করলেই বাঙালিয়ানার সতীত্ব নষ্ট হয়ে যায়, তাই কি?!

তারা এখানে আইডেন্টিটি ক্রাইসিস খুঁজে পেলেও আমাদের আল্ট্রা-মডার্ন মেয়েরা পাশ্চাত্য কালচার অনুসারে চুলের বব কাট করলে আর জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট পরলে তখন আর আইডেন্টিটি ক্রাইসিস তাদের চোখে পড়ে না। কি সেলুকাস!

এছাড়া ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি, হিজাব পরিধান করার কারণে বিভিন্ন সময়ে ক্লাসরুম থেকে অনেক ছাত্রীকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি নিকট অতীতে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের হিজাব বা বোরকা পরে না আসতে নোটিশ দেয়ারও নজির দেখা গিয়েছিল।

সুতরাং, এমতাবস্থায় বিশ্ব হিজাব দিবস পালনের বৈশ্বিক রাজনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করে এটি আমাদের দেশেও গুরুত্বে সাথে নেয়া উচিত। সাম্প্রতিককালে বিশেষ করে এই হিজাব বা বোরকাই পাশ্চাত্য সেকুলার মূল্যবোধকে আদর্শিক ও সাংস্কৃতিকভাবে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

সাধারণত একটি সভ্য সেকুলার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকের স্বাধীনভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান পালনের অধিকার স্বীকৃত। সে অনুসারে হিজাব ও বোরকা পরাও একজন মুসলিম নারীর অধিকার। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করার কোনো নৈতিক সুযোগ নেই।

কিন্তু ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত ইউরোপের উপরোক্ত দেশগুলো হিজাব ও বোরকার বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হওয়ায় তাদের সেকুলার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধেরও নৈতিক পরাজয় ঘটেছে। তাই ইসলামভীতি ও ইসলামবিদ্বেষ প্রতিরোধে বিশ্ব হিজাব দিবস রাজনৈতিকভাবেই মুসলমানদের গুরুত্ব দেয়া জরুরি।

আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ