সোমবার, ০৫ মে ২০২৫ ।। ২১ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৭ জিলকদ ১৪৪৬


কুরআন-সুন্নাহর মাঝেই নিহিত রয়েছে কল্যাণ ও শান্তি: আল্লামা আহমদ শফী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্বনামধন্য অন্যতম বৃহৎ দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল-জামিআতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী চট্টগ্রামের বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলন আজ শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) জামিআর সুবিশাল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়।

জামিআর মহাপরিচালক ও আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে বার্ষিক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। দেশ ও জাতির সার্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বিশেষ দুআ করা হয়।

চলমান বিভিন্ন ইস্যূতে মুসলিম উম্মাহকে দীনি দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়। একই দিন বা’দ ইশা দস্তারবন্দী সম্মেলনে গত বছরের দাওরায়ে হাদীস উত্তীর্ণ দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের পাগড়ী সনদ প্রদান করা হয়।

বিশ্বখ্যাত দারুল উলূম হাটহাজারীর বার্ষিক মাহফিলের মূল অনুষ্ঠান বাদ ফজর থেকে আরম্ভ হয়ে এশা পর্যন্ত চলমান থাকে। বাদ এশা গত বছর দাওরায়ে হাদীস উত্তীর্ণ ছাত্রদের সম্মাননা পাগড়ী প্রদানের মাধ্যমে মাহফিলের শুভসমাপ্ত হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আযহারুল হাসান মাদানী। তিনি জুমাপূর্ব হিন্দিতে আলোচনা করেন এবং জুমার খুতবা দেন ও ইমামতি করেন।

সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে দেশ ও জাতির উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ নসিহত পেশ করেন জামিআর মহাপরিচালক ও আমীরে হেফাজতে ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সবাই দুনিয়াতে শান্তি অন্বেষণ করে। শান্তির জন্য দুনিয়ার পেছনে সবাই ছুটতে থাকে, অথচ দুনিয়ার মাঝে শান্তি নিহিত নেই। তবে কুরআন-সুন্নাহর মাঝেই নিহিত রয়েছে কল্যাণ ও শান্তি।

তিনি বলেন, শান্তি পেতে হলে তিনটি কাজ করতে হবে। প্রথমে দুনিয়া ত্যাগ করা শিখতে হবে, পার্থিব লোভ লালসা ত্যাগ করতে হবে দ্বিতীয়ত, নিজের আত্মার শুদ্ধি ও সংশোধন করতে হবে।সকল প্রকার অন্যায় ও অনৈতিক কাজ পরিহার করতে হবে। কৃত পাপ থেকে তওবা করতে হবে। আল্লাহ ইরশাদ করেছেন যে নিজের নফসকে পরিশুদ্ধ করবে,সে নিশ্চয় সে কামিয়াব হবে। তৃতীয়, সুন্নাত মুতাবেক জীবনযাপন করতে হবে।সকল প্রকার বিদয়াত পরিহার করতে হবে। এ তিনটি আমলকে যদি আমরা আকড়ে ধরি তাহলে শান্তি আপনা আপনি এসে যাবে। ঘরে বাইরে,পরিবারে,সমাজে শান্তি বিরাজ করবে।

নসীহত শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ ও নিরাপত্তার জন্য বিশেষ মুনাজাত করেন তিনি।
বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামিআর সিনিয়র মুহাদ্দিস ও সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি চলমান বিভিন্ন ইস্যূকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ আলোচনা রাখেন। ভারতের নাগরিকত্ব বিলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করেন।

এ ছাড়াও দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরাম উক্ত সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেন। বার্ষিক এ মহতি সম্মেলনের সঞ্চালনায় ছিলেন জামিআর সিনিয়র মুহাদ্দিস ও সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতী জসিমুদ্দীন, সহকারী শিক্ষাসচিব মাওলানা আনাস মাদানী ও মাওলানা নুরূল ইসলাম জাদীদ সাহেব।

দূর-দূরান্ত থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের পদচারণায় কাল থেকে জামিআ প্রাঙ্গন ছিলো মুখরিত ও ধর্মীয় গাম্ভীর্যতায় পরিপূর্ণ। জুমার নামায আদায়ে তওহীদপ্রিয় জনতার ঢল পরিলক্ষিত হয়।

মাহফিলের শেষ অধিবেশন ছিলো সমাবর্তন তথা দাওরা হাদীস (মাস্টার্স) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদেরকে সম্মাননা পাগড়ী প্রদান। শিক্ষার্থীরা আবেগঘন পরিবেশে পাগড়ী গ্রহণ করে। এ সময় মঞ্চে সিনিয়র শিক্ষক প্রায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন। পাগড়ী প্রদান শেষে আল্লামা আহমদ শফি মূল্যবান নসিহত করে মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্তি করেন।

মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী,  মাওলানা মুফতি আব্দুস সালাম, মাওলানা শেখ আহমদ, মাওলানা মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, মাওলানা হাফেজ নূরুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল বাছেত খান, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা লোকমান, মাওলানা নোমান, মাওলানা সালাহ উদ্দীন, মাওলানা মুফতি শামসুদ্দীন জিয়া, মাওলানা সলীম উল্লাহ, মাওলানা মুফতি আহমুদুল্লাহ, মাওলানা মুফতি মাহমুদুল হাসান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা আযীযুল হক আলমাদানী, মfওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা ইয়াহইয়া, মাওলানা আবু আহমদ, মুফতি হুমায়ুন কবীর, মাওলানা ফোরকান আহমদ, ড. নূরুল আবসার, মাওলানা নরুল ইসলাম ও  মাওলানা মুফতি নূরুল্লাহ প্রমুখ।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ