ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বার্তা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জায়নবাদী শাসনের বিরুদ্ধে বিজয়ের ঘোষণা দেন।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ওই পোস্টে খামেনি ইসরায়েলের উদ্দেশে বলেন, "ভ্রান্ত ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন।"
এদিকে, আলজাজিরা জানিয়েছে, খুব শিগগিরই তিনি জাতির উদ্দেশে ভিডিও বার্তা দেবেন।
এর আগে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর আসে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে খামেনি তেহরানে তার নিয়মিত বাসভবনে না থেকে নিরাপদ বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন, এমনকি শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।
বিবিসি বলছে, দীর্ঘ এই যুদ্ধ ইরানের ভেতরের চিত্র বদলে দিয়েছে। ফলে যুদ্ধবিরতির পর খামেনি যখন প্রকাশ্যে আসবেন, তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত, ক্ষতবিক্ষত ও ক্ষুব্ধ এক ইরান দেখবেন।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কাতারের আমিরের মধ্যস্থতায় ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু খামেনিকে হত্যার সম্ভাবনা পুরোপুরি নাকচ করেননি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও খামেনি প্রকাশ্যে বিজয়ের দাবি করতে পারেন, বাস্তবতা হলো যুদ্ধের পর ইরানের সামরিক অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) বহু শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও দেশটি বিপর্যস্ত। বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত ইরানের অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়েছে।
অনেক ইরানি মনে করছেন, ইসরায়েল ধ্বংসের আদর্শিক নীতির কারণে এবং পরমাণু অস্ত্র অর্জনের মাধ্যমে শাসনকে অজেয় করার খামেনির প্রচেষ্টা আজ ইরানকে এই সংকটের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং স্কলার লিনা খাতিব মনে করেন, এই যুদ্ধের পর ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পতনের সূচনা হয়েছে। তিনি বলেন, "খামেনি সম্ভবত ইসলামী প্রজাতন্ত্রের শেষ 'সর্বোচ্চ নেতা' হতে যাচ্ছেন।"
এসএকে/