জামায়াতে ইসলামীসহ বৃহৎ ইসলামি জোট বা সমঝোতা গড়ে তুলতে তৎপর পীর সাহেব চরমোনাইয়ের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন। তবে এর পাশাপাশি দলটি দেশের ৩০০ আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। ইতোমধ্যে তিন দফায় ইসলামী আন্দোলনের প্রাথমিক বাছাইকৃত প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
সোমবার (১১ আগস্ট) দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, কুমিল্লা, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে তৃণমূল দায়িত্বশীলদের থেকে যেসব সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম এসেছে তাদের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মিলিত হন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা। আসনের সম্ভাবনা, সংকট ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে একজনকে নির্ধারণ করা হয়।
ইতোমধ্যেই আরো দুই দফা সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটা তৃতীয় দফা সাক্ষাৎকার। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দ্রুতই আনুষ্ঠানিকভাবে তিনশ আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে। একই সাথে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিআর পদ্ধতিতে উভয় কক্ষে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সবধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
তৃতীয় ও শেষ ধাপের প্রার্থী বাছাই আয়োজনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার প্রধান ক্ষেত্র হলো নির্বাচন। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাত, হানাহানি ও সহিংসতা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পরে। শতশত মানুষ এই রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণ হারায়। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে আমরা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি, নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রত্যাশা করেছিলাম। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করেছিলাম। কিন্তু দুঃখজনক সত্য হলো, পরিস্থিতির আদতে কোন উন্নতি হয় নাই। বরং আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি কোন কোন ক্ষেত্রে আরো খারাপ হয়েছে। বিগত এক বছরের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের তথ্য তাই বলে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থাকে সুস্থির ও সাবলীল করতে উভয়কক্ষে আমরাসহ দেশের অনেক রাজনৈতিক সংগঠন ও বুদ্ধিজীবীরা দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার নিম্নকক্ষে পিআর নিয়ে কোন আলোচনার এজেন্ডাই রাখে নাই। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি কতটা ভংয়কর হতে পারে তার সাম্প্রতিক নজির দেখা গেছে গাজীপুরে। চাঁদাবাজীর সংবাদ করায় প্রকাশ্য কুপিয়ে ও জবাই করে সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে । নির্বাচনের সময়ে সাংবাদিকরা যে অন্যায়, ভোটচুরি ও ভোট ডাকতির তথ্য তুলে ধরবে তার সাহস কোথা থেকে পাবে সাংবাদিকগণ? আমরা মনে করছি, আসন্ন নির্বাচনে সাংবাদিক বা অন্যকেউ ভোট সংক্রান্ত অন্যায়ের তথ্য প্রকাশে ভয় তৈরি করতেই এই ধরণের হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তাই যদি হয় তাহলে এবারের নির্বাচনও আগের মতোই কলংকিত হবে। সামগ্রিকভাবে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে সরকারের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে যথেষ্ট মনে হচ্ছে না, ফলত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডও তৈরি হচ্ছে না।
এমএইচ/