রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ।। ১০ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
সরকারের বোধোদয় না হলে কঠিন কর্মসূচির পথে হাঁটবে ইসলামী আন্দোলন সিম ব্যবহারে নতুন নীতিমালা: ৪ দিন পরেই বাতিল অতিরিক্ত সিমকার্ড বরিশালে নতুন ব্যাচের নূরানী মু'আল্লিম প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু ১০ নভেম্বর ভালোদের তুলে না আনলে অযোগ্যরা ওয়াজের মাঠ দখল করবেই জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: আখতার হোসেন জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সংবিধানের বাইরে না যাওয়ার আহ্বান সালাহউদ্দিনের নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ : ফাওজুল কবির ইসলামিক রিসার্চ প্রশিক্ষণ ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠান জোটবদ্ধ হয়েও দলীয় প্রতীকে ভোটে আপত্তি বিএনপির, ইসিতে চিঠি দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল সফল করার আহ্বান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের

পি আর পদ্ধতি নির্বাচন : জনগণ কীভাবে দেখছে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বর্তমান রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে বিষয়টি ঘুরেফিরে আসছে, তা হলো পি আর নির্বাচন পদ্ধতি বা Proportional Representation (অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব)। নির্বাচনকে আরও অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিনিধিত্বশীল করার লক্ষ্যে এই পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা জোরালো হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।

তবে এই পদ্ধতি কেবল রাজনৈতিক বা তাত্ত্বিক স্তরে নয়, সাধারণ মানুষের মাঝেও জাগাচ্ছে কৌতূহল, প্রশ্ন ও প্রতিক্রিয়া। এই প্রেক্ষাপটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও পেশার ১০ জন সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলাম-এর সাব-এডিটর নাজমুল হাসান।

তাঁদের মতামতের মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে এই পদ্ধতি নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা, প্রত্যাশা এবং সংশয়।

পি আর পদ্ধতি নির্বাচন কাকে বলে?

পি আর বা Proportional Representation নির্বাচন পদ্ধতি এমন এক ব্যবস্থা যেখানে সরাসরি প্রার্থী নয়, বরং দলকে ভোট দেওয়া হয়। দলটি নির্বাচনে যত শতাংশ ভোট পায়, সেই অনুপাতে তারা সংসদে আসন পায়।

এই পদ্ধতিতে একটি দল যদি ৩০% ভোট পায়, তবে তারা প্রায় ৩০% আসন পাবে সংসদে। দলগুলো নিজেদের মনোনীত তালিকা থেকে সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেয়।

এর সুবিধা হলো—ছোট দলগুলোর অংশগ্রহণ বাড়ে, এবং একক প্রভাব হ্রাস পায়। তবে সমালোচকরা বলছেন, এতে জনগণ সরাসরি যার পক্ষে ভোট দেয়, সে প্রার্থী সংসদে যাবেন কি না, সেটা নিশ্চিত থাকে না। ফলে জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিত্বের চেহারা কিছুটা ম্লান হতে পারে।

জনগণের মতামত:  পি আর পদ্ধতির পক্ষে যাঁরা

মেহেদী হাসান, চাকরিজীবী, ঢাকা:  "পি আর পদ্ধতিতে সব দলের প্রতিনিধি সংসদে যাওয়ার সুযোগ পাবে। এতে গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে।"

সালমা আক্তার, কলেজ শিক্ষিকা, নারায়ণগঞ্জ: "ছোট দলগুলোর উপস্থিতি সংসদকে প্রাণবন্ত করে। পি আর পদ্ধতিই সেটা নিশ্চিত করতে পারে।"

রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, রাজশাহী: "বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারসাম্য রক্ষার জন্য এই পদ্ধতি দরকার। একক আধিপত্য গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়।"

তামান্না ইসলাম, শিক্ষার্থী: "ভোটের সঙ্গে আসনের ন্যায্য সংযোগ থাকা উচিত। পি আর পদ্ধতি সেটা দেয়।"

রিয়াজ মাহমুদ, ব্যবসায়ী: "এই পদ্ধতিতে জাতীয় ঐকমত্য বাড়বে। দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় তৈরি হবে।"

পি আর পদ্ধতির বিপক্ষে যাঁরা

ফজলুল করিম, ঢাকা: "আমি তো ভালোভাবে বুঝিই না এই পদ্ধতি। এলাকার প্রার্থীকে চিনে ভোট দেই, এখন যদি নাম না জানা কেউ যায়, তাহলে কেমন লাগে?"

আফরোজা খাতুন, গৃহিণী: "ভোট দিচ্ছি একজনকে, অথচ সংসদে যাচ্ছে দলের তালিকাভুক্ত অন্য কেউ—এটা কীভাবে মেনে নিই?"

শহীদুল ইসলাম: "আঞ্চলিক সমস্যার কথা বলবে কে? পি আরে তো এলাকার প্রতিনিধি নেই।"

জেসমিন আক্তার, স্কুল শিক্ষিকা: "এই পদ্ধতিতে জনগণের সরাসরি মত প্রতিফলিত হয় না। গণতন্ত্রে এমন কিছু হওয়া উচিত নয়।"

সোহেল রানা, রিকশাচালক, ঢাকা: "আমার ভোটে যদি আমি যাকে চাই সে না গিয়ে দলের অন্য কেউ যায়, তাহলে আমার ভোটের মানে কী?"

পি আর পদ্ধতি নিয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টতই দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ এটিকে গণতন্ত্রের বিস্তারের পথ হিসেবে দেখছেন, কেউ আবার বলছেন এতে সরাসরি প্রতিনিধিত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পদ্ধতি যাই হোক না কেন, তার সফলতা নির্ভর করে জনগণের সচেতনতা, স্বচ্ছ প্রয়োগ ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ