শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫ ।। ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ১১ জিলহজ ১৪৪৬

শিরোনাম :

ইয়াওমে আরাফার রোজা, গুনাহ মাফের সুবর্ণ সুযোগ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

প্রতি বছর গুনাহ মাফ করিয়ে নেওয়ার সুবর্ণ কিছু সুযোগ আসে। এসব সুযোগ যেন অবহেলায় হারিয়ে না যায়, সে বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকা উচিত। সঠিকভাবে এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে আমরা গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি অসীম সওয়াব অর্জন করতে পারি।

এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হলো— ইয়াওমুল আরাফার রোজা। জিলহজ মাসের ৯ তারিখকে ‘ইয়াওমে আরাফা’ বলা হয়। এই দিনে রোজা রাখা সুন্নত। সহজ এই আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা বান্দার ছোট-বড় বহু গুনাহ ক্ষমা করে দেন। এ দিনটি ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ, যা গুনাহ মোচন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির এক আশাব্যঞ্জক বার্তা বহন করে।

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللَّهُ فِيهِ عَبْدًا مِنَ النَّارِ، مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ، وَإِنَّهُ لَيَدْنُو، ثُمَّ يُبَاهِي بِهِمُ الْمَلَائِكَةَ، فَيَقُولُ: مَا أَرَادَ هَؤُلَاءِ؟

অর্থাৎ, এমন কোনো দিন নেই, যেদিন আল্লাহ তায়ালা আরাফার দিনের চেয়ে বেশি সংখ্যক বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। তিনি সেদিন বান্দাদের কাছে আসেন এবং তাঁদের নিয়ে ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করেন। (সহিহ মুসলিম: ১৩৪৮; নাসাঈ: ৩০০৩)

জাবের (রা.) থেকে আরেক বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তাআলা নিকটতম আসমানে আসেন এবং পৃথিবীবাসীকে নিয়ে আসমানের অধিবাসী অর্থাৎ ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করেন। বলেন, দেখো তোমরা, আমার বান্দারা উষ্কখুষ্ক চুলে, ধুলোয় মলিন বদনে, রোদে পুড়ে দূর-দূরান্ত থেকে এখানে সমবেত হয়েছে। তারা আমার রহমতের প্রত্যাশী। অথচ তারা আমার আজাব দেখেনি। ফলে আরাফার দিনের মতো আর কোনো দিন এত বেশি পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩৮৫৩)

এদিন রোজা রাখালে গুনাহ মাফ হয়। আরাফার দিনের অন্যতম ফজিলতপূর্ণ আমল হলো নফল রোজা রাখা। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, صومُ يومِ عرفةَ، أحتسبُ على اللهِ أن يُكفِّرَ السنةَ التي قبلَه، والسنةَ التي بعدَه

অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি আল্লাহর কাছে আশা করি, আরাফার দিনের রোজা পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী বছরের গুনাহগুলো মাফ করে দেবেন। (সহিহ মুসলিম: ১১৬২; নাসাঈ: ২৮২৬)

আমরা প্রায়ই না জেনে বা ভুলে অনেক গুনাহ করে ফেলি। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সেই গুনাহগুলো মাফ করিয়ে নেওয়ার এক অপূর্ব সুযোগ হলো এই দিনটি। তাই আমাদের সবার উচিত এই ফজিলতপূর্ণ দিনকে যথাযথভাবে গুরুত্ব দেওয়া এবং জিলহজের ৯ তারিখে রোজা রাখার প্রতি সচেষ্ট থাকা।

এছাড়াও হাদিসে আরাফার দিনের দোয়াকে শ্রেষ্ঠ দোয়া বলা হয়েছে। নবীজি (সা.) বলেন, শ্রেষ্ঠ দোয়া আরাফাতের দোয়া।

দোয়া হিসেবে সর্বোত্তম হলো ওই দোয়া, যা আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীরা করেছেন। তা হলো- لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

উচ্চারণ: ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির।’

অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই, রাজত্ব একমাত্র তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তাঁর  জন্য, আর তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৮৫)

রোজা রাখার পাশাপাশি এই দোয়াটাও আমরা পড়তে পারি।


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ