শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৪ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
মাদকের বিরুদ্ধে মুরাদনগরে ওলামা পরিষদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পাকিস্তানে পৃথক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ১১ ইসলামি বইমেলা পরিদর্শনে জাতীয় মসজিদের খতিব প্রাথমিকে গানের নয়, ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে: শায়খে চরমোনাই পীর সাহেব চরমোনাইয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘মিট আপ’ আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটি আবারও নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যের মায়ের ইন্তেকালে খেলাফত মজলিসের শোক মদিনায় তিন বছর ধরে আইসিইউতে থাকা এক বাংলাদেশি আলেমের করুণ কাহিনি আল্লামা আহমদ শফী রহ.: খণ্ড খণ্ড গল্প চামড়ায় দেওয়া লবণে রং মিশিয়ে তৈরি হতো বিট লবণ

ইবাদতের ঘর মসজিদে যেসব কাজ কাজ নিষিদ্ধ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

OUR ISLAM ডেস্ক

মসজিদ—আল্লাহর ঘর, ইবাদতের স্থান, কল্যাণ ও আত্মশুদ্ধির কেন্দ্র। ইসলামে মসজিদের মর্যাদা ও পবিত্রতা অপরিসীম। মুসলিম জীবনে এটি শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়, বরং তা হচ্ছে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। তবে এই পবিত্র স্থানে কিছু কাজ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ বা নাজায়েজ।

ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে মসজিদের আদব বা শিষ্টাচার মেনে চলা যেমন ফরজ নয়, তবে তা পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর কিছু কাজ রয়েছে, যেগুলো করলে গুনাহ হয়, কখনো তা হারাম, কখনো তা মাকরূহ তানজি বা তাহরিমি হয়ে দাঁড়ায়। নিচে মসজিদে নিষিদ্ধ এমন কয়েকটি কাজ তুলে ধরা হলো:

মসজিদে কেনাবেচা ও প্রচারণা চালানো: রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন:“তোমরা মসজিদে যদি কাউকে বেচাকেনা করতে দেখ, তাহলে তাকে বলো—আল্লাহ যেন তোমার বেচাকেনায় বরকত না দেন।” (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১০৭৬)

অনেকে মসজিদের ভেতরে বই বিক্রি, দাওয়াতি প্রচারণা কিংবা দান সংগ্রহের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন—যা স্পষ্টত শরিয়তবিরোধী।

উচ্চস্বরে কথা বলা ও ঝগড়াঝাঁটি করা: মসজিদে উচ্চ কণ্ঠে কথা বলা, হাসাহাসি, তর্ক-বিতর্ক করা ইসলামে নাজায়েজ। এতে অন্য মুসল্লিদের ইবাদতে বিঘ্ন ঘটে।

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন,“তোমাদের কেউ যেন মসজিদে কোরআন তিলাওয়াত করার সময় আরেককে বিরক্ত না করে।” (মুয়াত্তা মালিক)

নাপাক অবস্থায় প্রবেশ করা: হায়েজ, নেফাস কিংবা জানাবাত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করা হারাম। কুরআনে বলা হয়েছে:“...আর তোমরা মসজিদসমূহের সন্নিকটে যেয়ো না, যতক্ষণ না পবিত্র হও।” (সুরা আন-নিসা: ৪৩)

মসজিদে খাবার খাওয়া বা দুর্গন্ধযুক্ত কিছু আনা: রাসুল ﷺ বলেছেন:“যে ব্যক্তি কাঁচা পেঁয়াজ, রসুন খেয়ে ফেলে, সে যেন আমাদের মসজিদে না আসে।”(সহিহ মুসলিম)

মসজিদে খাবারের গন্ধ বা জুতা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে তা অন্য মুসল্লিদের জন্য কষ্টদায়ক হয়।

খেলাধুলা বা শিশুদের দৌড়ঝাঁপ: অনেক সময় দেখা যায়, শিশু-কিশোরেরা মসজিদের ভেতরে খেলা করে, দৌড়ায়, চিৎকার করে। তাদের শিক্ষা দেওয়া অভিভাবকের দায়িত্ব। মসজিদ খেলাঘর নয়, ইবাদতের স্থান।

রাজনীতি বা দলীয় প্রচারণা: মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করতে হলে সেখানে রাজনৈতিক তর্ক, বক্তৃতা বা দলীয় প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে দ্বীনের একতা নষ্ট হয়।

মসজিদকে পারাপারের রাস্তা বানানো:

রাসুল ﷺ বলেন:“মসজিদকে রাস্তা বানিয়ে কেবল পার হওয়া উচিত নয়।” (সহিহ ইবনে খুজাইমা)

মৃতের জন্য বিলাপ, মাতম ও উচ্চস্বরে দোয়া: মসজিদে কেউ মারা গেলে বা তার জন্য দোয়া করলে তা সংক্ষিপ্ত, পরিমিত ও বিনয়ীভাবে হওয়া উচিত। উচ্চস্বরে কান্না, বিলাপ করা ইসলামে নিষিদ্ধ।

করণীয়:

  • মসজিদে প্রবেশের সময় ডান পা দিয়ে প্রবেশ করা ও দোয়া পড়া
  • নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকারে মশগুল থাকা
  • মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা
  • মসজিদের আদব রক্ষা করা

মসজিদ শুধু ইট-পাথরের গড়া কোনো ভবন নয়—এটি ইসলামের প্রাণকেন্দ্র। একে শ্রদ্ধা ও সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা, আদব রক্ষা করা এবং নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব। আল্লাহ আমাদের সবাইকে মসজিদের আদব রক্ষা করে সঠিকভাবে ইবাদত করার তাওফিক দান করুন।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ