শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২০ শাওয়াল ১৪৪৬


ভারতীয় ষড়যন্ত্রে আনন্দ শোভাযাত্রাকে মঙ্গল শোভাযাত্রায় রূপান্তর : হেফাজত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

পহেলা বৈশাখ উদযাপনে হিন্দুদের জন্মাষ্টমীর ধর্মাচার মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘সর্বজনীনতা’র নামে সবার ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান। 

আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সংগঠনটির যুগ্মসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

সংগঠনটির নেতাদের দাবি, পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রাকে পরবর্তীতে ভারতীয় ষড়যন্ত্রে মঙ্গল শোভাযাত্রায় রূপ দেওয়া হয়েছে। এজন্য তারা ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পুনর্বিবেচনা ও ভুল সংশোধনের জন্য সংস্থাটির কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় প্রতি বছরই তাদের দেবতা শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে সাড়ম্বরে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করে থাকেন। সংখ্যালঘুর যেকোনো ধর্মীয় উৎসব পালনের স্বাধীনতা ও অধিকারের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু পহেলা বৈশাখ উদযাপনে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই ধর্মাচারকে তথাকথিত ‘সর্বজনীনতা’র নামে সবার ওপর চাপিয়ে দিয়েছে ফ্যাসিস্ট সেক্যুলার বাঙালি জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। মূলত আমাদের জাতীয় চেতনা ও ঐতিহ্য থেকে মুসলিম সংস্কৃতি ও ভাবধারাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে এই সেক্যুলার সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ সেক্যুলার ফ্যাসিবাদের আঁতুড়ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।  

তারা আরো বলেন, ১৯৮৯ সালের পহেলা বৈশাখে প্রথম পালিত আনন্দ শোভাযাত্রাকে পরবর্তীতে মঙ্গল শোভাযাত্রায় রূপ দেয়াকে আমরা ভারতীয় ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখি। ঢাবির চারুকলা সবসময় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করলেও পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে জাতিসংঘের ইউনেস্কো পহেলা বৈশাখের বানোয়াট মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘অধরা সাংস্কৃতিক ঐহিত্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তাই ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পুনর্বিবেচনা ও ভুল সংশোধনের জন্য সংস্থাটির কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিতে আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার প্রতি জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

হেফাজত নেতারা বলেন, প্রাথমিক সমাধান হিসেবে ‘মঙ্গল’ শব্দ পরিবর্তন করে পহেলা বৈশাখের আদি ও আসল আনন্দ শোভাযাত্রা ফিরিয়ে আনতে ভূমিকা রাখতে পারে সরকার। আনন্দ শোভাযাত্রা অন্তত সাম্প্রদায়িক ছিল না। জাতীয় উৎসব উদযাপনে যেকোনো ধরনের মূর্তিবাদী সংস্কৃতির আমরা বিরোধিতা করি। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দেশে জাতীয় কোনো উৎসবে ইসলামের তৌহিদি চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক এমন কোনো চিহ্ন রাখা যাবে না। সেক্যুলারদের বৈশাখী মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দুদের বিভিন্ন দেবতা ও ধর্মীয় পশু-পাখির মূর্তি ও প্রতিকৃতিতে সয়লাব থাকে।

অথচ সেক্যুলার হয়েও তাদের এতে কোনো সমস্যা হয়না। কিন্তু নানাভাবে ইসলামবিদ্বেষ প্রকাশে ঠিকই তারা তৎপর। হাজার বছরের সংস্কৃতির মিথ্যা দাবিতে তারা সবসময় মঙ্গল শোভাযাত্রার দালালি করেছে। আমরা এসব বিজাতীয় সংস্কৃতি চর্চা ঠেকাতে ইসলামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান করছি।            

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর