|| মুফতী আবদুল কাদের মাহমুদ কাসেমী ||
আজ ১৫ আগস্ট—ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস। ১৯৪৭ সালের এই দিনেই ভারত মুক্তি পায় সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনের করাল গ্রাস থেকে। সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত এই দিনটি স্বাধীনতার আনন্দ, আত্মত্যাগের স্মৃতি ও দেশপ্রেমের অঙ্গীকার নিয়ে ফিরে আসে।
ভোর থেকেই সারা ভারতে বইতে থাকে আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের বন্যা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় শোভাযাত্রা, সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেই উচ্ছ্বাসের স্রোতে শামিল হয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রাণকেন্দ্র—দারুল উলুম দেওবন্দ।
জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সূচনা হয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম , সম্মানিত উস্তাদগণ এবং সকল স্তরের ছাত্রবৃন্দ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে মাদরাসার মহাপরিচালক মুফতী আবুল কাসেম নোমানী স্বাধীনতার প্রকৃত তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন- ‘স্বাধীনতা শুধু রাজনৈতিক মুক্তি নয়; বরং আত্মামর্যাদা, ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ রক্ষার অঙ্গীকার। আমাদের আকাবিররা সেই উদ্দ্যেশ অর্জনের লক্ষ্যে লড়াই করেছেন, শহীদ হয়েছেন দেশের জন্য।’
তিনি মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে ছাত্রসমাজের মধ্যে দেশপ্রেম, সেবা ও নৈতিকতার চেতনা জাগ্রত রাখার আহ্বান জানান।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান দারুল ইক্বামা মুফতী আশরাফ আব্বাস কাসেমী ও অন্য শিক্ষকগণ তাদের বক্তব্যে মাদরাসা ও মুসলিম সমাজের স্বাধীনতা আন্দোলনে অবদানের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরে বলেন –‘ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে দারুল উলুম দেওবন্দের অবদান অনস্বীকার্য। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ থেকে শুরু করে অসংখ্য আলেম-ওলামা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করেছেন।’ তারা উলামায়ে দেওবন্দের ত্যাগ-তিতিক্ষার বিভিন্ন গল্প ছাত্রদের সামনে উপস্থাপন করেন।
পতাকা উত্তোলন শেষে ছাত্ররা পরিবেশন করে দেশপ্রেমমুখর নাশিদ, যা অনুষ্ঠানের আবহকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। সমাপনী মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের জন্য আন্তরিক দোয়া করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
লেখক: শিক্ষার্থী, দারুল উলুম দেওবন্দ, ইউ. পি. ইন্ডিয়া।
এসএকে/