রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ ।। ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ২ সফর ১৪৪৭


ফখরুলের ‘দক্ষিণপন্থীদের উত্থান’ মন্তব্যে কড়া সমালোচনা ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিবের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ শনিবার (২৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে বলেছেন, পতিত আওয়ামী লীগের ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠার জন্য দেশকে ‘পন্থা ও পন্থী’তে বিভক্ত করে রেখেছিল। স্বাধীনতাপন্থী, পাকিস্তানপন্থী, দক্ষিণপন্থী, বামপন্থী ইত্যাদি নানাবিধি পন্থার রাজনীতি করে ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন করার চেষ্টা করেছে। পন্থাকে সামনে এনে জুলুম-নির্যাতন, হত্যা-গুমকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। জুলাই অভ্যুত্থান সেই ‘পন্থা’র রাজনীতিকে ভেঙে দিয়ে অধিকারভিত্তিক রাজনীতির নয়া জমানার সূচনা করেছে। ফলে এই সময়ে এসে পন্থাকেন্দ্রিক রাজনীতির বিকাশ হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা যথার্থ না।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, জুলাইয়ের আগে থেকেই দেশের সকল ধারার রাজনৈতিক শক্তি এক টেবিলে বসে একই সুরে কথা বলেছে। জুলাইয়ের আগের রাজনৈতিক আন্দোলনে ডানপন্থী, ইসলামপন্থী, বামপন্থী, মধ্যপন্থী সকলকে একত্রে আন্দোলন করতে দেখেছে দেশবাসী। জুলাই-২৪ এর আন্দোলনেও সকল পন্থার মানুষ কাঁধে কাঁধ রেখে ফ্যাসিবাদের বুলেটের মোকাবিলা করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরেও রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য-বিবৃতি ও সংস্কার এজেন্ডাতে পরিষ্কার যে, কেউ নির্দিষ্ট কোনো পন্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে  না। বরং সকলের প্রধান বিবেচ্য হচ্ছে সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে দেশে নতুন কোন ফ্যাসিবাদ তৈরির পথ বন্ধ করা। সেজন্যই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা এককবাবে প্রধানমন্ত্রী হাতে থাকবে না কোন যৌথ কমিটির হাতে থাকবে তা নিয়ে তর্ক হচ্ছে। একই ব্যক্তি দল ও সরকার প্রধান হওয়া না হওয়ার বিষয়ে তর্ক হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি এখন পন্থাভিত্তিক না; বরং অধিকারভিত্তিক। এমন সুবর্ণ সময়ের রাজনীতিতে ‘দক্ষিণপন্থার উত্থান’কে বড় আকারে উপস্থাপন করা এবং তার ভিত্তিতে ভীতি ছড়ানো কোনোভাবেই কাম্য না।

অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেন, আজকে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব ‘দক্ষিণপন্থীদের উত্থান’ সম্পর্কিত এক প্রশ্নে যেভাবে উত্তর দিয়েছেন তা জনমনে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভুল বার্তা দেবে। তিনি দেশের রাজনীতিতে এমন দলের উত্থান দেখে উদ্বিগ্ন হয়েছেন ‘যারা গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না। পরিষ্কার ঘোষণা দিয়ে করে না। আবার তারা নিজেরা জোর করে চাপিয়ে দিতে চায় মতবাদকে, এটা নিঃসন্দেহে এলার্মিং সিচুয়েশন। কিছু কিছু দলের মধ্যে এমনও কথা আছে যে মহিলাদের তারা কিছুতেই সামনে আনতে চায় না। মহিলাদের তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা তো দূরের কথা, তারা সামাজিক ক্ষমতায়নও করতে চায় না।’ 

ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, আমরাও বাংলাদেশে রাজনীতি করছি। আমরা তো এমন কোনো শক্তির উত্থান দেখছি না। তিনি যদি এমন কোনো শক্তির উত্থান দেখেন তাহলে তা পরিষ্কার করে বলা উচিত। কিন্তু তা না করে অনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে এমন নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করাকে আমরা অশুভকর বলে মনে করছি। তার এই বয়ান পতিত ফ্যাসিবাদের বয়ানকে সমর্থন করে। পতিত ফ্যাসিবাদ তাদের ফ্যাসিজমকে বৈধতা দিতে তাদের অবর্তমানে এমন কোনো শক্তির উত্থানের আশংকাকে বড় করে দেখাতো। এখন জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এমন শক্তির উত্থান হয়েছে বলে উদ্বিগ্ন হন তাহলে আওয়ামী লীগের বক্তব্যই সঠিক বলে প্রমাণিত হয়। অথচ এটা সত্য নয়।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ