রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
‘নীলনদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতেও ইসলাম নেই’ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সম্পাদক মাজহারুল ইসলামি শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টিকারী বক্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা পিআর সিস্টেমের নির্বাচন নিরাপদ নির্বাচন, আদর্শের নির্বাচন: শায়খে চরমোনাই মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ্ব, সড়কে জুমা আদায় হেফাজতের চার রাহবার সিরাতে মুস্তাকিমের পথ প্রদর্শক ছিলেন: হেফাজত আমির শ্রীমঙ্গলে খেলাফত মজলিসের সিরাতুন্নবী (সা.) সম্মেলন ‘পেশীশক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম বন্ধে পিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই’ ডাকসু-জাকসুর প্রভাব জাতীয় নির্বাচনেও পড়বে, আশা জামায়াত আমিরের

ট্রাম্পের উস্কানিতে মার্কিন রাজনীতিতে যেভাবে মুসলিম জাগরণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আতাউর রহমান খসরু
আওয়ার ইসলাম

আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিমবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডে সে দেশের মুসলিম নাগরিকদের মধ্যে রাজনৈতিক জাগরণ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছে আমেরিকান গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।

গতকাল ১৫ এপ্রিল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পত্রিকাটি এমন দাবি করেছে।

প্রতিবেদনের ভাষ্য মতে, ১১ সেপ্টেম্বরের পর থেকে আমেরিকান সমাজে মুসলিম নাগরিকদের যে কোণঠাসা ভাব তৈরি হয়েছে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মুসলিম নাগরিকগণ এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে রাজনৈতিকভাবে অগ্রসর হচ্ছে। তারা ট্রাম্প বিরোধী শিবিরে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশে নিজেদের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

ইতিপূর্বে আমেরিকান রাজনীতি মুসলিম নাগরিক অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো ছিলো না। কিন্তু এখন তারা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব করছে।

আমেরিকান মুসলিমরা ভাবছেন, নিজেদের অধিকার রক্ষায় তাদের রাজনৈতিক সচেতনতার সময় হয়েছে।

কারি মুহাম্মাদ ইউসুফ; যেভাবে বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়ে ওঠলেন

প্রতিবেদনটি মূলত ফায়াজ নাওয়াবি নামক একজন রাজনৈতিকের উপর তৈরি করা হয়েছে। যিনি ট্রাম্পের হঠকারি মুসলিম বিদ্বেষী সিদ্ধান্তের পর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন।

৩১ বছর বয়স্ক তরুণ এ রাজনীতিক শান্তিয়াগো শহর কাউন্সিল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।
ফায়াজ নওয়াবের মতো প্রায় ৯০ জন মুসলিম প্রার্থী এ বছর ট্রাম্পবিরোধী ডেমোক্রেট শিবির থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। আমেরিকার ইতিহাসে বিস্ময়করও বটে।

প্রতিবেদকের ভাষায় আমেরিকান সমাজে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব ও তাদের সামাজিক অবস্থান অনুসারে এ পরিমাণটি বিস্ময়কর। এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় কোনো রাজনৈতিক প্রেরণায় তাদের উৎসাহিত করেছে।

আমেরিকায় বর্তমানে ৩.৩ মিলিয়ন মুসলিম বসবাস করে। কিন্তু ন্যাশনাল কংগ্রেসের ৫৩৫টি আসনের মাত্র দুটিতে তাদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। তরুণ প্রজন্মের মুসলিম নাগরিকরা রাজনৈতিক এ দুর্দশা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে।

ফায়াজ নওয়াবের ভাষায়, ‘যখন কোনো জনগোষ্ঠির পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায় এবং তারা এগিয়ে যেতে আগ্রহী। তখন তাদের কথার সাহস তৈরি হয়। তারা তাদের বিশ্বাসের কথা তুলে ধরে।’

শান্তিয়াগো ছাড়াও মিশিগানেও এবার কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করবে ১৩ জন মুসলিম।

মিশিগান থেকে গভর্নর পদে লড়াই করছেন আবদুল সাঈদ। তিনি আশা করছেন তিনি হবেন আমেরিকার প্রথম মুসলিম গভর্নর।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অর্ধ শতাব্দীর পূর্বে আমেরিকার কিছু সংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক ইসলাম গ্রহণ করেছিলো। কিন্তু এখন মুসলিমরা আমেরিকার সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে মর্যাদাপূর্ণ পদে চাকরি করছে।

প্রতিবেদক আমেরিকাজুড়ে মুসলিম নাগরিকদের রাজনৈতিক জাগরণের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিম বিদ্বেষকে দায়ী করেন।

তার মতে, ২০১৬ সালের নির্বাচনের পর আমেরিকার ৫৩ ভাগ মুসলিম তাদের নিজেদের ও সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে অনিরাপত্তা বোধ করছে। ফলে তারা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তা থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছে।

প্রতিবেদনে স্থানীয় পর্যায় ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে মুসলিম পদপ্রার্থীদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার ইন্সুরেন্স কমিশনার পদে আসিফ মাহমুদ (৫৬), অরিজোনার সিনেটর পদে দিদরা আব্বুদ, নিভাদার সিনেটর পদে জিসি ইসবাহ।

একটি অনন্য ইসলামী অ্যাপ- ইসলামী যিন্দেগী

শুধু পুরুষ নয়; বরং মুসলিম নারীরাও মধ্যে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস সদস্য পদে ম্যারিল্যান্ড থেকে নাদিয়া হাশেমি, ইলিনিয়া থেকে সামিনা মোস্তফা অথবা ফাইরোজ সাদ এবং মিশিগান থেকে রাশিদা তালিব।

এ বছর বেশ মুসলিম প্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ীও হয়েছেন বলে দাবি করেছেন প্রতিবেদক।
তিনি আশা করেছেন, মুসলিম তরুণদের এ রাজনৈতিক জাগরণ মুসলিম কমিউনিটি ও আমেরিকার জন্য কল্যাণকর হবে। কেননা তরুণ আমেরিকান মুসলিমরা অন্য দশজনের মতোই দেশকে ভালোবাসেন।

সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত Abigail Hauslohner এর প্রতিবেদন অবলম্বনে।

আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ