রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
পেশীশক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম বন্ধে পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন- আহমদ আবদুল কাইয়ূম জেদ্দায় হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনী নভেম্বরে আজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিস বানিয়াচং উপজেলা শাখার ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন ‘নীলনদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতেও ইসলাম নেই’ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সম্পাদক মাজহারুল ‘ইসলামি শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকুন’ গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা পিআর সিস্টেমের নির্বাচন নিরাপদ নির্বাচন, আদর্শের নির্বাচন: শায়খে চরমোনাই মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ্ব, সড়কে জুমা আদায়

একটি আয়াত, একটি যুদ্ধনীতি ও আজকের সৌদি আরব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুলাইমান সাদী : ‘হে মুমিনগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সা.-এর সামনে তােমরা কোনো বিষয়ে অগ্রণী হয়াে না এবং আল্লাহকে ভয় করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। -সুরা হুজুরাত : ১

সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ ও তার রাসুল সা. এর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা, আল্লাহ ও তার রাসুলের সীমা অতিক্রম না করা, দীন পালনে বাড়াবাড়ি বা সীমালঙ্ঘন না করা; প্রতিটি মুমিনের জন্যই আবশ্যকীয় কর্তব্য। এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের সে নির্দেশনাই দিয়েছেন।

তবে উপযুক্ত ব্যক্তিরা, যারা কুরআন হাদিসের গভীর জ্ঞান রাখেন কোনো বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সা.-এর পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না পাওয়া গেলে তারা সে ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহর মূলনীতির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, উপর্যুক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে ইবনে কাসিরে উল্লেখ করা নিচের হাদিসটি থেকে আমরা এবিষয়টি জানতে পারি।

নিম্নের হাদিসটি থেকে আরেকটি বিষয় যেটা জানতে পারি সেটা হলো, যুদ্ধক্ষেত্রে একজন সেনাপতি কী নীতি অনুসরণ করবেন, কিভাবে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সে বিষয়ের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাই আমরা। আর সেটা হলো, সর্ব অবস্থায় একজন সেনাপতিকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদেশ-নিষেধ মেনে চলতে হবে। এবং কোনো বিষয়ে কুরআন-হাদিসে সিদ্ধান্ত না পাওয়া গেলে গভীর ইলমের আলোকে প্রাজ্ঞ আলেমদের পরামর্শে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সা. যখন হযরত মু'আয রা.-কে ইয়েমেনে প্রেরণ করেন তখন তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘তুমি কিসের মাধ্যমে ফায়সালা করবে?’ উত্তরে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর কিতাবের মাধ্যমে।’ আবার তিনি প্রশ্ন করেন, ‘যদি আল্লাহর কিতাবে পাও?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘তাহলে সুন্নাতে রাসুল সা.-এর মাধ্যমে ফায়সালা করব।’ পুনরায় তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘যদি তাতেও না পাও?’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘তাহলে আমি চিন্তা-গবেষণা করবাে এবং তারই মাধ্যমে ফায়সালা করব।’

তখন রাসূলুল্লাহ সা. তাঁর কাধে হাত রেখে বললেন, ‘আল্লাহর জন্যেই সমস্ত প্রশংসা যিনি তাঁর রাসুল সা.-এর দূতকে এমন বিষয়ের তাওফিক দিয়েছেন যাতে তাঁর রাসুল সন্তুষ্ট।
-মুসনাদে আহমদ , সুনানে আবু দাউদ, সুনানে তিরমিযীইমাম ইবনে মাজাহ (রঃ) বর্ণনা করেছেন।

‘এখানে এ হাদীসটি আনয়নের উদ্দেশ্য আমাদের এই যে, হযরত মু'আয রা. স্বীয় ইজতিহাদকে কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতে রাসূলিল্লাহ সা.-এর পরে স্থান দিয়েছেন। সুতরাং স্বীয় মতকে কিতাব ও সুন্নাতের আগে স্থান দেয়াই হলাে আল্লাহ ও তার রাসূল সা.-এর আগে বেড়ে যাওয়া।’ -ইবনে কাসির

দুঃখের বিষয় হলো, হযরত মুআয রা. দ্বারা বিজিত সে ইয়েমেন, ইয়েমেনের মুসলমানগণ আজ মুসলমানদের হাতেই মার খাচ্ছেন। সম্প্রতি  ইয়েমেনের সঙ্গে সৌদি আরবের এ যুদ্ধংদেহী সংঘর্ষ কতটুকু কুরআন-হাদিসভিত্তিক? কেন আজ মুসলমানরা মুসলমানদের হাতে মার খাবে?

বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব-সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয় চলছে ইয়েমেনে। গত তিনবছরে ৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ৫৩ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

দেশটির ৭৫ শতাংশ মানুষের জরুরী মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। অন্তত সোয়া কোটি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা দরকার। প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষের জানা নেই, তাদের পরবর্তী বেলার খাবার জুটবে কিনা। পাঁচ বছরের নীচের ৪ লাখ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে, যা তাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে।

দেশটিতে স্বাস্থ্য সেবা ভেঙ্গে পড়েছে, কলেরা আর ডিপথেরিয়া ছড়িয়ে পড়েছে।

একটি দেশকে, দেশের সাধাণ মানুষকে মানবেতর জীবনযাপন করার পরও তাদের জন্য সবসময় হামলার আতঙ্ক সৃষ্টি করা কতটা উচিত, নতুন করে ভেবে দেখার সময় এসেছে ইসলামি বিশ্বের নের্তৃবৃন্দের।

আরো পড়ুন : রমজানে ভোগ্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ২ আলেমের পরামর্শ


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ