রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
পেশীশক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম বন্ধে পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন- আহমদ আবদুল কাইয়ূম জেদ্দায় হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনী নভেম্বরে আজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিস বানিয়াচং উপজেলা শাখার ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন ‘নীলনদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতেও ইসলাম নেই’ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সম্পাদক মাজহারুল ‘ইসলামি শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকুন’ গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা পিআর সিস্টেমের নির্বাচন নিরাপদ নির্বাচন, আদর্শের নির্বাচন: শায়খে চরমোনাই মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ্ব, সড়কে জুমা আদায়

ধনকুবের রাজিহির জীবনের 'এক রিয়াল'!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুনায়েদ কিয়ামপুরী, অথিতি লেখক


ছবিতে যে শুভ্র শশ্রুর লোকটিকে দেখা যাচ্ছে তার নাম রাজিহি। এক বিরাট ধনকুবের। সৌদির বাসিন্দা। তিনি হলেন সেই ব্যক্তি দুনিয়ার বুকে সবচেয়ে বড় খেজুর বাগান তার। এই বাগানে দুই লক্ষাধিক খেজুর গাছ রয়েছে। এর চেয়েও বড় বিষয় হলো শায়খ রাজিহি তার গোটা খেজুর বাগানটিই ওয়াকফ করে দিয়েছে আল্লাহর রাহে।

এই বাগান থেকে উৎপন্ন খেজুর বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজে বণ্টন করা হয়। আর পবিত্র রমজান মাসে হারামাইন শারিফাইনে সারামাস ইফতারের জন্য যত খেজুর লাগে সব এই বাগান থেকেই বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। রাজিহি তার জীবনের একটি গল্প বলেছেন। গল্পটি পড়ুন, স্বাদ অনুভব করুন এবং শিক্ষা গ্রহণ করুন।

“আমি ছিলাম নিতান্ত অসহায় গরিব। এতোটাই গরিব ছিলাম যে, একবার মাদরাসা থেকে একটি শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা করা হল। ভ্রমণের জন্য জনপ্রতি মাত্র এক রিয়াল করে ধার্য করা হয়েছিল। আমার কাছে অর্ধ রিয়ালও ছিল না। পরিবারের কাছে গিয়ে খুব কান্নাকাটি করলাম। কিন্তু পরিবার থেকেও এক রিয়ালের ব্যবস্থা হলো না। কারণ, পরিবার তখন ছিল নিঃস্ব রিক্ত।

শিক্ষা সফরের একদিন পূর্বে একজন দয়াদ্র ফিলিস্তিনি উস্তাজ আমাকে একটি রিয়াল দিলেন। আমি তো পরমানন্দে শিক্ষা সফরে শরিক হয়ে গেলাম। ওই রিয়ালটা পাবার পর থেকে নিয়ে প্রায় দুমাস পর্যন্ত আমার মনে আনন্দের জোয়ার ছিল।

এর অনেকদিন পর যখন আমি পরিণত হলাম। জীবনে এলো অনেক সুখ সমৃদ্ধি। আল্লাহ তাআলা আমাকে অঢেল সম্পদ দান করলেন তখন একদিন সেই দয়ালু শিক্ষকের কথা মনে পড়ল।

ভাবলাম, উস্তাদজি কি আমাকে টাকাটা সদকা করেছিলেন না ঋণ দিয়েছিলেন। সে সময় আনন্দের আতিশয্যে কিছুই জিজ্ঞেস করার সুযোগ হয়নি৷

কিন্তু এখন দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। দ্রুত সেই মাদরাসায় গেলাম। সেই ফিলিস্তীনি উস্তাজের কথা জিজ্ঞেস করলাম। ছাত্ররা আমাকে উস্তাজের কাছে নিয়ে গেল।

দেখলাম উস্তাদজির অবস্থা সংকটাপন্ন। আজ তিনি বড় অসহায়। চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে বহুদিন। এখন কপর্দকহীন তিনি। আমি আমার পরিচয় দিয়ে বললাম, উস্তাদজি! আমি আপনার কাছে অনেক বড় ঋণী।

বললেন, সত্যি! আমি কি সত্যিই কারো কাছে অর্থ পাই! যেন বিশ্বাস করতে চাচ্ছেন না তিনি।

বললাম, আপনার কি মনে পড়ে আজ থেকে এতো বছর পূর্বে একজন ছাত্রকে একটি রিয়াল দিয়েছিলেন?

প্রথম প্রথম মনে করতে কষ্ট হচ্ছিল তাঁর। একথা ও কথার পর মনে করতে পারলেন। তখন জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা! তুমি কি আমার ঋণ পরিশোধ করতে চাচ্ছ?

বললাম, জি উস্তাদ!

এ বলে শ্রদ্ধেয় উস্তাজকে গাড়িতে উঠালাম। নিয়ে এলাম একটি সুন্দর বাগানবাড়ির ভেতর। বললাম, উস্তাদজি! এই হলো আপনার ঋণ পরিশোধ। এই বাড়ি ও গাড়ি আপনার।

উস্তাদজি যারপরনাই আপ্লুত ও বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, মাত্র এক রিয়ালের বিনিময়ে এতো বড় বাড়ি! এতো দামি গাড়ি! কী করে সম্ভব!!

বললাম, উস্তাদজি! আপনি আমাকে যে অর্থ দিয়েছিলেন তা এর থেকেও অনেক বেশি ছিল। সেই আনন্দ এখনো আমার হৃদয়ে অনুভব করি৷”

এরপর শায়খ রাজিহি বলেন, মানুষের কষ্ট লাঘব করুন, তাকে খুশী করুন। প্রতিদান আল্লাহ দিবেন।

আরএম/

 


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ