শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৯ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের যেকোনো প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন অটল বাংলাদেশের  গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে করিমগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল  ইসলামের আদর্শ প্রতিষ্ঠা ছাড়া কল্যাণ রাষ্ট্র সম্ভব নয়: পীর সাহেব চরমোনাই এবার নির্বাচনের রোডম্যাপ চাইল জামায়াতে ইসলামীও ৩ কর্মসূচি ঘোষণা করলেন কবি আল্লামা মুহিব খান মার্চ ফর গাজা" সফল করুন: খেলাফত আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ ৫০ আসন টার্গেট করে এগোচ্ছে জমিয়ত বেতুয়া হাশেমিয়া দারুস সুন্নাহ মাদরাসার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন `মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করুন: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

কুরআনের মধ্যে নবিজীর চুল: একটি গুজব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আব্দুর রহমান আশরাফি।।

বহু এলাকায় গুজব শোনা যাচ্ছে, কুরআনের মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চুল পাওয়া গেছে। এ বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াতেও রীতিমত তর্কযুদ্ধ শুরু হয়েছে।

বিষয়টি বিশ্লেষণ করতঃ বোঝা যায়, এমন গুজব ও শয়তানি কথা এর আগেও না-কি আমাদের দেশে একাধিকার ছড়িয়েছিল। বিষয়টি কারো কারো ছবি চাঁদে দেখার মত জাহালাতপূর্ণ বিষয়। এতে কোন সন্দেহ নেই।

সত্যি মুসলিম হিসেবে এটি বড় পরিতাপ ও লজ্জাকর বিষয়, বর্তমানে অনেক বকধার্মিক ও হুজুগে বাঙ্গালী মুসলিম কুরআনের মধ্যে হেদায়েত ও জীবন চলার পথনির্দেশা না খুঁজে চুল খোঁজায় ব্যস্ত।

রাসূল সা: বেঁচে থাকা অবস্থায় তো রোগ-ব্যাধি থেকে বাঁচার জন্য তার চুল ভিজিয়ে পানি খেতে বলেছেন বলে প্রমাণ নেই। তিনি রোগ-ব্যাধি হলে মধু, কালোজিরা, জমজম পানি, হিজামা (কাপিং), আগুনের ছ্যাঁক দেওয়া, দুআ, রুকিয়া (ঝাড়-ফুঁক) ইত্যাদি নানা উপায় বাতলে দিয়েছেন এবং বিভিন্ন ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ করতে উৎসাহিত করেছেন। কিন্তু তার চুল ভিজিয়ে পানি পান করতে নির্দেশ দেননি।

আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর পূর্বে যে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুনিয়া থেকে চিরবিদায় গ্রহণ করেছেন তার চুলগুলো সব দেশ বাদ দিয়ে কেবল বাংলাদেশের কুরআন গুলোতে নতুন করে উদ্ভাবিত হওয়া কিভাবে সম্ভব হতে পারে।

এটি দ্বীন-ইসলামকে হাসি-তামাশার বস্তুতে পরিণত করা, মানুষকে কুরআন-হাদিসের নির্দেশনা থেকে দূরে সরানো এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর মিথ্যাচার এর অন্তর্ভুক্ত। ইসলামের দৃষ্টিতে সবগুলোই মারাত্মক অপরাধ।

বাস্তবতা হল, কোন কোন কুরআনের মধ্যে দু-চারটা চুল পাওয়া অসম্ভব নয়। কারণ যারা কুরআন পড়ে তাদের মাথা থেকে অথবা চোখের পাপড়ি থেকে দু-চারটা চুল তার মধ্যে পড়তে পারে। অন্যান্য পাঠ্যবই বা বিছানায় অথবা ঘর ঝাড়ু দিলেও অনেক চুল পাওয়া অস্বাভাবিক নয়।

সুতরাং কুরআনের মধ্যে এমন দু-চারটা চুল পাওয়া গেলে তাকে নবীজির চুল বলে আখ্যায়িত করা শুধু গোমরাহি নয় বরং মূর্খতা। কেউ এমন কথায় বিশ্বাস করলে বা প্রচার করে থাকলে তার উচিৎ, আল্লাহর নিকট তওবা করা।

যাই হোক, এ বিশ্বাসটি একটি মারাত্মক বাতিল ও কুসংস্কারপূর্ণ বিশ্বাস তাতে কোন সন্দেহ নাই। হয়ত কোন ইসলাম বিদ্বেষী চক্র মুসলিমদের বিশ্বাস নিয়ে হাসাহাসি ও তামাশার উদ্দেশ্যে এমন একটি গুজব সর্বত্র ছড়িয়ে দিচ্ছে।

সুতরাং আমাদের কর্তব্য হবে, বিশুদ্ধ উৎস থেকে দ্বীন-ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা, অর্থহীন ও অজ্ঞতা সুলভ আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা এবং মুসলিম হিসেবে দ্বীনের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা। আল্লাহ আমাদেরকে অজ্ঞতা, কুসংস্কার, বিভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতা থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ