শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫ ।। ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১১ জিলকদ ১৪৪৬


ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩২৩, আহত ৬২২ জন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: করোনার সংক্রমণ রোধে কঠোর লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও ঈদুল ফিতরে যাতায়াতে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩১৮টি দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় ৬২২ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, মালবাহী ট্রেন ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ৩২৩টি দুর্ঘটনায় ৩৩১ জন নিহত এবং তিন হাজার ৭২২ জন আহত হয়েছেন।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম হলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০২১ প্রকাশকালে এসব তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে মানুষের যাতায়াত সীমিত হলেও গণপরিহন বন্ধ থাকার সুযোগে সড়কে ব্যক্তিগতযান বিশেষ করে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা-ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ট্রাক-পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানে গাদাগাদি করে যাতায়াতের কারণে এবারের ঈদে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি দুটোই বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৭ মে থেকে ঈদ শেষে কমস্থলে ফেরা ২১ মে পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত ও ৬২২ জন আহত হয়েছেন। উল্লেখিত সময়ে রেলপথে দুই ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। নৌ-পথে তিন দুর্ঘটনার ছয়জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৪৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৩৯ জন নিহত, ১৯৯ জন আহত হয়েছেন। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, নিহতের ৪৩ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং আহতের ৩১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এ সময় সড়কে দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫১ জন চালক, ৮০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৯ জন পথচারী, ৬৩ জন নারী ৪৫ জন শিশু, ১৫ জন শিক্ষার্থী ১২ জন সাংবাদিক, ১০ জুন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, নয় জন শিক্ষক, আট জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, চার জন চিকিৎসক, দু’জন আইনজীবী এবং এক জন প্রকৌশলীর পরিচয় পাওয়া গেছে।

এর মধ্যে নিহত হয়েছেন একজন পুলিশ সদস্য, দু’জন র‌্যাব সদস্য, একজন সেনাবাহিনীর সদস্য, দু’জন বিজিবি সদস্য, ৩৫ জন নারী, তিন জন চিকিৎসক, ২২ জন শিশু, ১৩ জন শিক্ষার্থী, সাতজন শিক্ষক, ১৬ জন চালক, ৩১ জন পরিবহন শ্রমিক একজন প্রকৌশলী, ৬৯ জন পথচারী, দুইজন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ৩৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২ দশমকি ৩৭ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রাইভেটকার, মাইক্রো-চিল, ৭ দশমকি ৫৩ শতাংশ নছিমন-করিমন ট্রাক্টর-লেগুনা মাহিন্দ্রা ৭ দশমিক ০৭ শতাংশ অটোরিকশা, ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত অটো রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল, ও ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

দুর্ঘটনার কারণ ব্যাখা করে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দুরপাল্লার বাস বন্ধ থাকার ফলে মহাসড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন যেমন প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা-ব্যাটারিচালিত ট্রাক-পিকআপ ও কাভার্ড ভ্যানের বেপরোয়া গতিতে যাতায়াত, জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মাকিং, সড়কবাতি না থাকায় ঈদে যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো, জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকরা এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা এবং উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ করে তিনি বলেন, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতে অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ত্রুটি সারানোর উদ্যোগ গ্রহণ, ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্ম ঘণ্টা সুনিশ্চিত করা, সড়কে রোড সাইন, রোড মাকিং স্থাপন করা, সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে বাস্তবায়ন করা। ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ রোধ করা এবং গণপরিবহন বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করে সক্ষমতা বাড়ানো।

-এএ


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ