বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫ ।। ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১০ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী ঐক্যজোটের সংলাপ: ৭ দফা ঐকমত্য ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা: তিন দিনে ভারতীয় ১৬ ড্রোন ভূপাতিত জামায়াত নেতা আজহারের আপিলের রায় ২৭ মে মসজিদ-মাদরাসায় হামলা ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের প্রতিফলন: খেলাফত মজলিস ভারতীয় মুসলিম নেতারা হিন্দুত্ববাদী প্রকল্পের আস্থা অর্জন করতে পারবেন কি? ‘আল্লামা সুলতান যওক নদভীর স্মৃতি নতুন প্রজন্মকে আলোকিত করবে’ পাক-ভারত যুদ্ধ : ঈমানের লড়াই না ভূখণ্ডের দ্বন্দ্ব? ‘নারী কমিশন ইস্যুতে বিতর্ক জিইয়ে রাখা সরকারের উচিত হচ্ছে না’ ভারত-পাকিস্তান সংঘাত – শান্তির শেষ সুযোগ কি ইসলামাবাদের হাতে? পাকিস্তানে নয়, মোদি নিজের ওপরই হামলাটা করলেন

সিলেটের লেবু পাওয়া যাচ্ছে ইউরোপে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার মুছাই পাহাড়ি এলাকা। এখানে দুর্গম পাহাড়ি টিলা আর টিলা। মাঝে মাঝে সমতল ভূমি। টিলার ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত লেবু গাছ। জেলার নবীগঞ্জ, মাধবপুর, চুনারুঘাট ও বাহুবল উপজেলার পাহাড়ি এলাকার স্থানে স্থানে লেবু চাষ ব্যাপকভাবে হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় এর ফলন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বিষমুক্ত লেবু দেশের বাইরে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে পাঠানো হচ্ছে।

জানা যায়, এখানে লেবু গাছে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। মুছাইতে বছরজুড়ে লেবু চাষ হয়। বর্ষায় লেবু বেশি উৎপাদন হয়। তবে শুকনোকালে সেচের মাধ্যমে লেবুর ফলন বাড়ানো হয়। তাই পাহাড়ি এলাকার লোকজন পতিত জমি না ফেলে রেখে লেবু চাষ করে। কলমের চারা রোপণের বছর যেতেই গাছজুড়ে আসে ফুল ও ফল। স্বাদ ও ঘ্রাণে অতুলনীয় এ লেবুতে রয়েছে টাসা রস। এখানকার পাহাড়ি লালমাটি লেবু চাষের উপযোগী। এ কারণে দিন দিন লেবু চাষে মনযোগী হয়ে পড়েছেন এ এলাকার চাষি।

শুধু তাই নয়, লেবু গাছের ফাঁকে ফাঁকে কলা, পেঁপে, নাগা মরিচ, কাঁঠাল গাছ লাগিয়ে উৎপাদন পাওয়া যাচ্ছে। তবে কলা, পেঁপে ও নাগা মরিচ রোপণে লেবু গাছে কোনো প্রভাব পড়ে না। হবিগঞ্জ কৃষি বিভাগের হিসাবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ১৬৮ হেক্টর জমিতে ৬ হাজার ২৪৬ মেট্রিক টন লেবু উৎপাদন হয়েছে। লেবু চাষকে কেন্দ্র করে জেলার মুছাই ও মিরপুরে প্রায় ১০টি আড়ত গড়ে উঠেছে। চাষি বাগান থেকে লেবু সংগ্রহ করে এসব আড়তে নিয়ে যায়। এছাড়া অনেক চাষিই লেবু বিক্রি করতে শ্রীমঙ্গল শহরের আড়তে নিয়ে যান। আড়ত থেকে লেবু পাইকাররা ক্রয় করে দেশের নানা প্রান্তে প্রেরণ করছেন। এ লেবু দেশের বাইরে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে পাঠানো হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বাগান মালিক জেলার বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকির বাসিন্দা রায়হান মিয়া জানান, লেবু চাষে কোনো ঝুঁকি নেই। পাহাড়ি মাটিতে রোপণের বছর যেতেই লেবু ধরে। তবে গোড়া পরিষ্কার করে গরুর গোবর ও কিছু পরিমাণে সার প্রয়োগে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিনি জানান, যাদের লেবু বাগান রয়েছে, তারা গরু পালন করছেন। কারণ লেবু বাগানে প্রচুর ঘাস পাওয়া যায়। এ ঘাসে গরু পালন করা সহজ। আর গরুর গোবর লেবু গাছে প্রয়োগ করা হয় সার হিসেবে। এতে গাছে লেবু ধরার পরিমাণ বেড়ে যায়।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ ইসহাক মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, গরুর সবচেয়ে প্রিয় খাবার প্রাকৃতিক ঘাস। ঘাস খেলে গরু রোগ-জীবাণু থেকে মুক্ত থাকে। গরুর গোবরে উৎপাদিত ফসলে কোনো প্রকারের সমস্যা নেই। তিনি বলেন, হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলাকার লালমাটিতে প্রচুর পরিমাণ লেবুসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে গরুর গোবরে লেবু চাষ করতে পেরে চাষি লাভবান হচ্ছেন। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলাকায় সম্ভাবনাময় শিল্প লেবু। এর চাষ করে চাষি লাভবান হচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমরা চাষির প্রশিক্ষণসহ নানাভাবে পরামর্শ প্রদান করছি। এসব গ্রহণ করে চাষি দিন দিন লেবু চাষে এগিয়ে যাচ্ছেন।

-এজেড


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ