সোমবার, ০৫ মে ২০২৫ ।। ২২ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৭ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
মাওলানা গুলাম মুহাম্মাদ ওস্তানভী রহ. যেনো একটি প্রতিষ্ঠান শাপলা গণহত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে হাইআতুল উলয়ার প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ লাল কেল্লার মালিকানা চেয়ে মোগল সম্রাটের ‘বংশধরের’ দাবি খারিজ ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সেনানীদের ভীত-সন্ত্রস্ত করার হীন অপচেষ্টা রুখে দিতে হবে’ শাপলায় শহীদদের স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশের দাবি ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক আজ ৫ই মে ঐতিহাসিক গণহত্যা দিবস: আমাদের চোখ খুলবে কবে? স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ ‘২৫ মার্চের কালরাতকেও হার মানিয়েছে শাপলা চত্বরের গণহত্যা’

বাংলাদেশে ‘আলেম প্রতিভার’ অপমৃত্যু; নেপথ্যে যেসব কারণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মহিউদ্দীন ফারুকী

আমাদের দেশে প্রতিভাবানরা দ্রুত হারিয়ে যায়। চোখের পলকে ঘটে 'প্রতিভাবানদের অপমৃত্যু'। এর প্রধান কারণ এদেশে প্রতিভার কদর কম। বরং নেই। প্রতিভাবানদের কোন পৃষ্ঠপোষকও নেই। তবে আছে কিছু অর্বাচীন, যারা বিভিন্নভাবে মেধাবী, প্রতিভাবানদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয়। বিভিন্ন ছুতো-নাতা আর দোষ ধরে এগিয়ে যেতে নয় বরং হারিয়ে যেতে সাহায্য করে।

গতকাল একটি পোষ্টে দেখেছি পটিয়ার এক তালিবুল ইলম ভাই দেওবন্দের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমস্থান অধিকার করেছেন। অভিনন্দন তাকে এবং যারা দেওবন্দসহ পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবছর অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছেন তাদের।

প্রতিবছরই এধরনের সংবাদ আমরা পাই। অনেককে সরাসরি চিনি। যারা দেওবন্দে, করাচিতে, মদিনাতে প্রথমস্থান, দ্বিতীয়স্থানসহ মেধা তালিকায় থাকেন। কিন্তু কিছুকাল পর, এমনকি সমাবর্তনের পর সেই 'প্রথমদের' আর দেখা মিলেনা। কালের গর্ভে তারা হারিয়ে যায়। উদিয়ে যায়। পুতিয়ে যায়। অন্যদিকে পরের সিরিয়ালে ভিন্ন দেশের যারা থাকে তারা দ্বীন-দুনিয়া সবদিক থেকেই এগিয়ে যায়। ছাড়িয়ে যায় অনেক 'প্রথমদের'। নিজে আলোকিত হয়। অন্যদের মাঝে আলো ছড়ায়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তাদের প্রতিভার দূতী ছড়ায় বিশ্বময়।

শুনেছি তাকি উছমানী সাহেবের সাথে তাদের ক্লাশে প্রথম ছিল নোয়াখালির এক বাংলাদেশী। আশরাফুল হেদায়ার জামীল সাহেবদের ক্লাশেও প্রথম ছিল এক বাংলাদেশী। কিন্তু সেই প্রথমরা কোথায়? আর যাদের নাম লিখলাম তারা কোথায়? শুধু তারাই নয়, প্রতিবছরের এক, দুই আর তিন বাংলাদেশীরা কোথায়?

এদের অনেকেই এসে, বরং বলবো দু একজন এসে দেশে কাজ করতে শুরু করেন। মৌলিক কিছু না লিখলেও কিছু অনুবাদের কাজ তারা করেন। অনেকেই গঠনমূলক অনেক কাজ করতে শুরু করেন। দেশে নেই কিংবা আছে তবে আরও সুন্দর হওয়া প্রয়োজন এমন উদ্যোগ গ্রহন করেন। কিন্তু একাজগুলোরও যতটুকু গতি হতে পারতো তা হয়না। কিছুদিন পর সে কাজ থেমে যায়। উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়। কাজ করার এই 'কারিগরদের' আর পাওয়া যায়না।

আচ্ছা, বলুতো কেন এমন হয়?

আমার যা মনে হয়- এক. এধরনের অনেকেই অর্থিকভাবে অসচ্ছল। সংসারেে ঘানী টানতে গিয়ে কাজের কাজ কিছুই করতে পারে না।

দুই. তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার মত কেউ থাকে না।

তিন. গঠনমূলক কাজ যতটুকু করে, তার সঠিক সম্মানী পায় না।

চার. কাজের প্রশংসার তুলনায় সমালোচনার শিকার হতে হয় ঢের বেশি।

পাঁচ. মুনাসিব এবং যথাযথ কাজের পরিবেশের অভাব।

ছয়. অনেকেই তারুণ্যময় বাঁধ ভাঙা জীবন চারাতে গিয়ে কারো দিকনির্দেশনা নেয়া প্রয়োজন মনে করেনা। যা ইচ্ছে তাই করে। কখনো গড়ে, কখনো ভাঙে। কখনে ধরে, কখনো ছাড়ে।

ছয়. হিংসা আমাদের একটু বেশি। তাই কেউ এগিয়ে যেতে চাইলে আমরা পাঞ্জাবি টেনে ধরি। আমরা কাউকে এগিয়ে দেই না। নিজেও আগাই না।

সাত. মুরুব্বিরা মুরুব্বি সেজে প্রতিভাবানদের থেকে কাজ নেন। হালাক হওয়ার ভয় দেখিয়ে বা শুনিয়ে অনেক গঠনমূলক কাজ করতে দেন না। কখনো অজানা ভয়ে তাকে সামনে এগুতে দেন না।

আট. প্রতিভা বা মেধা আছে, তবে তার আখলাক ও চারিত্রিক দোষের কারণে এবং লেনদেনে অসচ্ছতার কারণে অনোকেই তাকে সঙ্গ দিতে চায় না। তখন নিঃসঙ্গতার কষ্টে সে তার অবস্থান থেকে পিছু হটে।

নয়. কোন ক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করলেই তাকে নিজেদের মনে করেনা। বিভিন্নভাবে তাকে দূরে ঠেলে দেয়।

দশ. সবজান্তা ভাব অথবা সবকাজ একা করার মানসিতা অনেকসময় অনেককে পিছিয়ে দেয়। অনেকের অহংকার তার পতনের মূল।

এছাড়াও আরও অনেক কারণথাকতে পারে। তবে মূল বিষয় হলো, আমরা আমাদের আশে পাশে প্রতিনিয়ত দেখতে পাই 'প্রতিভার অপমৃত্যু'।

লেখক, পরিচালক: মারকাযুল লুগাতিল আরাবিয়্যা বাংলাদেশ

এটিও পড়ুন: সৌদির প্রাসাদ অভ্যুত্থান; সব কিছুর পেছনে যে জন

আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ