মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান অধ্যাপক আখতার ফারুক রহ.-এর জীবন-কর্ম আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হেফাজতের মহাসমাবেশ সফলে সাভারে উলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত  কারাগারে পাঠানোর নির্দেশের পর জামিন পেলেন মাওলানা মাসউদুল করীম ইজতেমা মাঠের মামলায় মাওলানা মাসউদুল করীম কারাগারে নারী সংস্কার কমিশনের ত্রুটি জানানো হলো ঐকমত্য কমিশনকে ভারতের আক্রমণ মোকাবেলায় পাকিস্তানের প্রস্তুতি শাইখুল হাদীস মাওলানা সাইয়েদ মুহাম্মদ আাকিল (রহ.)-এর জীবন ও অবদান

বড়'র চোখে বড়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শরীফ মুহাম্মদ: হাফেজ্জী হুজুর রহ. ছিলেন অত্যন্ত সাদাসিধা অন্তরের মানুষ। তার বিনয় ছিল লক্ষণীয়। ছোট-বড় সকলের সঙ্গে তিনি আন্তরিক সম্পর্ক রাখতেন এবং বিনয় ও সদাচরনের মধ্য দিয়ে সকলকে মুগ্ধ করে ফেলতেন। কোনো কৃত্রিমতা ছিল না তাঁর আচরণে।

বেশ কয়েকবার তিনি ফজরের পর আজিমপুর কলোনিতে আমার ছোট্ট বাসায় বিনা ঘোষণায় তাশরীফ এনেছেন এবং কখনো কখনো এখানে নাস্তাও করে গিয়েছেন।

এসব বিষয়ে ভনিতা ও কৃত্রিমতার কোনো চিহ্নও ছিল না তাঁর মাঝে। তিনি আমাকে মহাব্বত করতেন এবং বিভিন্ন মশওয়ারা-মজলিসে হাজির হওয়ার জন্য খবর পাঠাতেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কাছে চিঠিপত্র প্রদান এবং প্রতিনিধি-দল নিয়ে তার সাথে সাক্ষাতের সময় থেকেই তিনি আমাকে গুরুত্বপূর্ণ নানান বিষয়ে ডাকতেন এবং পরামর্শ দেওয়ার নির্দেশ দিতেন। প্রায় তাঁর ওফাতের পূর্ব পর্যন্ত এই ধারাবাহিকতা বজায় ছিল।

আমি মুগ্ধ হয়ে লক্ষ্য করতাম যে বিভিন্ন পরামর্শের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার মনোভাবের এবং কখনো কখনো সম্পূর্ণ স্রোত ও পরিবেশের বিরুদ্ধেও আমি আমার মতামত যুক্তিসহ পেশ করেছি। কিন্তু তাতে তিনি বিন্দুমাত্রও মনঃক্ষুণ্ণ হননি এবং তাঁর মাঝে বিরক্তির কোনো ছাপ পড়েনি।

বরং আমার মতামতের প্রতি পূর্ণ গুরুত্ব দিতেন এবং কখনো কখনো আমার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তও গ্রহণ করতেন। তাঁর ন্যায়ানুগ মেজাজ এবং আন্তরিক মূল্যায়নের কারণে বিভিন্ন বিষয়ে আমার মতামত ও ভিন্নমত তাঁর কাছে প্রকাশ করতে আমি দ্বিধাগ্রস্ত হতাম না।

হাফেজ্জী হুজুর রহ. হযরত থানবী রহ.-এর অন্যতম খলিফা হিসেবে শাইখে তরিকত এবং উচ্চ পর্যায়ের পীর হিসেবে লক্ষাধিক লোককে বাইয়াত করেছেন এবং ইসলাহি প্রোগ্রাম চালিয়ে গেছেন।

কিন্তু তিনি একাকী পীর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবেন এই মনোভাব তাঁর মধ্যে কখনো ছিল না। এজন্য তিনি আলেম-ওলামাদের উপকারের লক্ষ্যে হযরত থানবী রহ-এর শেষ খলিফা মাওলানা আবরারুল হক ছাহেব এবং তাঁরই যোগ্য খলিফা মাওলানা হাকীম মুহাম্মদ আখতার ছাহেব-কে আশির দশকের গোড়ার দিকে কামরাঙ্গীরচর নুরিয়া মাদ্রাসায় দাওয়াত করে আনেন এবং দেশের ওলামাদেরকে তাঁদের নিকট হতে উপকৃত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।

মূলত হাফেজ্জী হুজুর রহ-এর মাধ্যমেই সর্বপ্রথম বাংলাদেশের আলেম-ওলামা এবং দ্বীনদার বিশেষ শ্রেণীর কাছে তাঁরা পরিচিত হন। আজ হাফেজ্জী হুজুর-এর বরকতে তাঁদেরও একটি বিশেষ আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডল বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে।

হযরত মাওলানা উবায়দুল হক রহ. জাতীয় মসজিদের সাবেক খতিব, ঢাকা আলিয়ার হেড মুহাদ্দিস; খলিফা, হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.
[হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ স্মারকগ্রন্থ/ তাঁকে যেমন দেখেছি || অনুলিখন: শরীফ মুহাম্মদ]

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ