রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ ।। ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ২ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছরের পক্ষে ঐকমত্য : আলী রীয়াজ মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে মৃত্যুবরণকারীরা শহীদের মর্যাদাপ্রাপ্ত সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা’ স্থাপনের ব্যাপারে বিএনপির প্রস্তাবে একমত এবি পার্টি তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠানে ইতমিনান পাবলিকেশন্সের বই ৭ দফা দাবিতে ঢাকা আলিয়ার শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন সাঁজোয়া যানে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দুই ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা একটা নতুন সংবিধানের দাবিতে রাজপথে নেমেছি: নাহিদ ইসলাম রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: মুসলিম উম্মাহর অবস্থান স্পষ্ট থাকতে হবে  অসুস্থ মাওলানা তাফাজ্জল হক আজিজকে দেখতে হাসপাতালে ইবনে শাইখুল হাদিস স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবরে মাওলানা কিফায়তুল্লাহ শফিকের খোলা চিঠি

আমাদের হামলা জাতীয় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ : হামাস


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি : সংগৃহীত

|| জহিরুল ইসলাম ||

দখলদার ইসরায়েল বাহিনীর ওপর হামাসের অতর্কিত হামলার ব্যাপারে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। হামাসের ওপর বিভিন্ন প্রশ্নও তুলেছেন বহু মানুষ। এ নিয়ে এবার কথা বলেছেন হামাসের তুফান আল আকসার রূপকার মুহাম্মদ দইফ।

তিনি বলেন, আমাদের অতর্কিত হামলা বা তুফান আল আকসা জাতীয় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এমনিতেই আমরা এই হামলার পথ বেছে নিইনি। অনেকেই জানেন না যে, ফিলিস্তিন সমস্যা কত পুরনো।  এ কারণে তারা প্রশ্ন তুলছেন।

আকস্মিক হামলার কারণ সম্পর্কে পক্ষাঘাতগ্রস্ত এ নেতা বলেন— ফিলিস্তিন অঞ্চলটি বাইতুল মাকদিসের পাশে অবস্থিত।  এখানে ইয়াকুব নামে এক ইসরাইলী আছে। আমেরিকা থেকে তার আগমন।  ফিলিস্তিনের কুর্দি পরিবারের কাছ থেকে জোরপূর্বক একটি বাড়ি দখল করে নেয় সে। দখলের সময় সে বলেছিল, আমি তোমার বাড়ি দখল না করলেও অন্যরা দখল করে নেবে‌। তারচেয়ে বরং আমার কাছে বিক্রি করে দাও।

সারা বিশ্ব থেকে ইহুদিরা দলে দলে ফিলিস্তিনে এসে  একইভাবে স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর দখল করে নেয়। ফিলিস্তিনিরা যেসব বাড়িঘর নিজেদের হাতে বানিয়েছিল, নিজেদের টাকায় যেসব জমি কিনেছিল, সব তাদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বা ব্ল্যাকমেইল করে কেড়ে নেয় ইহুদীরা।

অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচসহ বেশ কিছু ইসরায়েলি মন্ত্রী প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর দখলের নির্মম দৃশ্যগুলো স্বচক্ষে দেখে দেখে উপভোগ করেছে!  তাদের এই উচ্ছেদ অভিযানকে বলা হত ‘ফিলিস্তিনিদের বিতাড়ন।’

উড়ে এসে জুড়ে বসা এই ইসরায়েল বাহিনী স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের ওপর এই ধরনের পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে বহুকাল ধরে। প্রতি মুহূর্তে চলছে এই উৎপীড়ন-নিপীড়ন। গ্রেফতার অভিযান, ফাঁসি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত এবং বাড়িঘর ভেঙে ফেলা— এসব এখানকার নিত্য দিনের জীবনের অনিবার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এসব ধ্বংসযজ্ঞ চলে সামরিক পৃষ্ঠপোষকতায়।

জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে শুধু ২০২৩ সালে এ পর্যন্ত ৬০০ টি হামলার কথা তুলে ধরা হয়েছে। একই প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালে ৩৯৯ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরে ৪,৯০,০০০ ইহুদি অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করেছে। এমনকি আল-আকসা মসজিদে প্রতিনিয়ত  ইহুদীরা নারীসহ হামলা চালায়।  এমন ভয়-ভীতিকর পরিবেশ অব্যাহত রয়েছে।

খ্রিস্টানদের ওপরও ইসরায়েলের এই হামলা অব্যাহত রয়েছে।  এভাবেই বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আবু আকিলা।  মৃত্যুর পরে তার জানাজার নামাজেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলা চালায়।

এই দুর্বিসহ পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে বিশ্ব কী আশা করে? বিশ্ব কি এই প্রত্যাশা করে যে,  ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি অবরোধের মুখে নির্বিকার বসে থাকবে এবং নির্মম মৃত্যুর নিয়তি মেনে নেবে?  ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সুযোগ করে দেবে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার জন্য? ফিলিস্তিনিরা কি অসহায়ের মত চিৎকার করে বলবে, আমাদের পরিবারগুলোকে আগুনে জালিয়ে দাও? ফিলিস্তিনিরা কি বলবে,  হে ইসরায়েলিরা! আল-আকসা মসজিদকে শহীদ করে দাও।


গাজার দিনলিপি:
হামাস যখন ২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়, তখন ইসরাইল অবৈধভাবে গাজা অবরোধ করে বসে। দীর্ঘ ১৭ বছরের ইসরায়েলি অবরোধের কারণে, ২৩ লাখ মানুষ মৌলিক অধিকারসমূহ থেকে বঞ্চিত হয়।

মাত্র এক বছরের অবরোধের ফলে বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের হার ৬৫ শতাংশে পৌঁছে যায়।

এই দীর্ঘ অবরোধের কারণে গাজায় মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়।  রোগীরা চিকিৎসার জন্য গাজার বাইরেও যেতে পারে না।  তাদের জন্য ওষুধ সরবরাহ করা সম্ভব হয় না।

অবরোধে গাজায় ইসরাইল বারবার আক্রমণ চালায়।  বোমা মেরে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে শহীদ করে দেয়। হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত করে দেয়।

ফিলিস্তিনিদের আজকের সংগ্রাম বেঁচে থাকার জন্য।  যারা আজ প্রশ্ন করছে চলমান যুদ্ধ কারা শুরু করেছিল? তারা ইসরায়েলের ইতিহাস সম্পর্কে অবগত নয়।  বরং তারা ইতিহাসকে মুছে ফেলতে চায়।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ