ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে রকেট হামলার দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। সোমবার ইসরায়েলের নাহাল ওজ এলাকায় ওই ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, গাজা নগরী থেকে ইসরায়েলে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। বর্তমানে গাজার দখল নিতে সেখানে বড় ধরনের স্থল অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলি বাহিনী।
সোমবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কিছুক্ষণ আগে গাজা থেকে নাহাল ওজ এলাকার দিকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করা হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং এর ফলাফল যাচাই করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই হামলার বিষয়ে দায় স্বীকার করেনি।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে ওই নগরীতে ব্যাপক বিমান হামলা ও স্থল অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েল।
গাজার আল-দারাজ এলাকার ২৬ বছর বয়সী বাসিন্দা সাজা আল-খারুবি ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘‘বিমান, ট্যাংক এবং ড্রোন থেকে নিরবচ্ছিন্ন গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী এই উপত্যকায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ করছে। লোকজন পালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আমরা কোথায় যাব? আমাদের কাছে টাকা নেই, এমনকি যাতায়াতের ভাড়াও নেই। সর্বত্রই পরিস্থিতি ভয়াবহ।
সোমবার এএফপির ধারণ করা ফুটেজে দেখা যায়, গাজা নগরীর আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলি উড়ছে। এ সময় অনেক ফিলিস্তিনি পরিবারকে তাদের জিনিসপত্র নিয়ে দক্ষিণ দিকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
এর আগে, রোববার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, এখন পর্যন্ত গাজা নগরী থেকে অন্তত সাড়ে ৫ লাখ মানুষ পালিয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, অবরুদ্ধ ওই উপত্যকায় আগস্টের শেষ নাগাদ প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করছিলেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা শত্রুদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করবো। আমাদের যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জন করবো। কেবল গাজায় নয়, হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল, অপহৃতদের মুক্ত এবং গাজা যেন আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয়, তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে সশস্ত্র হামলা চালায় হামাস। ওই হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন; যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। সেদিন হামলা চালিয়ে ইসরায়েল থেকে ২৫১ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যান হামাসের যোদ্ধারা। তাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনও গাজায় রয়েছেন। এছাড়া জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ২৫ জন মারা গেছেন বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের শুরু করা যুদ্ধে ফিলিস্তিনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজার ৩৪৪ জন নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। সূত্র: এএফপি।
এমএইচ/