বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ।। ২০ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
একীভূত হওয়া ৫ ব্যাংকের অর্থ ও আমানত সুরক্ষিত থাকবে : গভর্নর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত শিক্ষার্থী ফোরামের মানববন্ধন বৈষ্যমের বিরুদ্ধে সিলেটবাসীকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করতে হবে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রনে সরকারকে ন্যাপের আহ্বান জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ব্যতীত দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন সম্ভব নয়: কামাল হোসেন ঘূর্ণিঝড় টাইফুন কালমেগি আঘাত, নিহত বেড়ে ১০০, নিখোঁজ ২৬ নড়াইল-২ এনপিপির চেয়ারম্যানকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ঢাকাস্থ বাজিতপুর-নিকলী উলামা পরিষদের মতবিনিময়, কর্মসূচি গ্রহণ মিসরে বাংলাদেশি ছাত্রদের সংগঠন ‘ইত্তিহাদ’-এর নতুন কমিটি দাওরায়ে হাদিস সনদধারীদের নিয়োগে ধর্ম উপদেষ্টার ডিও লেটার

লিভ টুগেদার : চরমভাবে ঘৃণা করে ইসলাম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সম্প্রতি দেশের এক অভিনেত্রী ‘লিভ টুগেদার’ করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তার এ অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হয়েছে। ইসলাম ও দেশীয় আইনে লিভ টুগেদার চরম নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য অপরাধ।

লিভ টুগেদার মানে কী?

লিভ টুগেদার হচ্ছে ইংরেজি শব্দ। যার বাংলা অর্থ হল একসঙ্গে থাকা। কিন্তু পারিভাষিক দিক থেকে লিভ টুগেদার শব্দটিকে একটা বিশেষ অর্থে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিয়ের আগে গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড স্বামী-স্ত্রীর মত একসঙ্গে থাকাকে লিভ টুগেদার বলে। শরয়ী পন্থায় বৈধ উপায়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগে নারী পুরুষের এমন বসবাস ইসলাম ও বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় নিষিদ্ধ।

দেশের সুস্থ সমাজ ব্যবস্থার জন্য বড় ধরনের হুমকি

পশ্চিমের দেশগুলোতে নারী-পুরুষের এমন অবৈধ সম্পর্ক অনেকটা স্বাভাবিক, বলতে গেলে কিছুটা সভ্যতারও অংশ। রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থা ও ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই এসব রুচিহীন পশ্চিমা কালচার থেকে দূরে থেকেছেন। তবে বর্তমানে কিছু কিছু ক্ষেত্র বিশেষে অনেক তরুণ-তরুণী লিভ টুগেদারের মতো পাপাচারে জড়িয়ে পড়ছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে উঠে আসছে। কেউ কেউ একে স্বাভাবিক বলেও প্রচারণা চালাচ্ছেন। পশ্চিমা অসভ্য কালচারকে স্বাভাবিক চোখে দেখা দেশের সুস্থ সমাজ ব্যবস্থার জন্য বড় ধরনের হুমকি।

বিবাহ বহির্ভূত নারী-পুরুষের শারীরিক সম্পর্ককে শরীয়তের দৃষ্টিতে সরাসরি জেনা বলা হয়েছে। এর জন্য হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া লিভ টুগেদার যেখানে তরুণ-তরুণী একে অপরকে বোঝার জন্য একসাথে থাকার কথা বলেন, তাদের অনেকের দাবি অনুযায়ী শারীরিক সম্পর্ক না করে একে অপরকে বোঝার চেষ্টা চালার তারা, শরীয়তের দৃষ্টিতে এটাও গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ কোরআন শরীফে স্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা জেনা এবং এসব কাজে উদ্বুদ্ধ করে এমন কোন কিছুর কাছেও যাবে না’।–সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত-৩২।

ইসলামে‌ জেনা হারাম হওয়ার দুটি কারণ উল্লেখ করা হয়, একটি হল জেনা অশ্লীলতার অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয় কারণ, এর মাধ্যমে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অনাচার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে যারা লিভ টুগেদার ছড়িয়ে দিতে চান তাদের অনেকেই বলেন, রক্ষণশীল সমাজের কারণে বাংলাদেশে লিভ টুগেদার খারাপ চোখে দেখা হয়, তাদের এমন দৃষ্টিভঙ্গির দিকে লক্ষ করলেই স্পষ্টভাবে বলা যায় শরীয়তে সমাজের অনাচার থেকে বাঁচতে যে জেনাকে হারাম করা হয়েছে তারা এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সেই জেনা-ব্যভিচারকে সমাজে সহজলভ্য করে তুলতে চায় এবং সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায়।

এমন মানুষদের বিষয়ে সূরা নূরে আল্লাহ তাআলা স্পষ্ট বলেছেন, ‘স্মরণ রেখ, যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার হোক এটা কামনা করে, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে আছে যন্ত্রণাময় শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না’।-সূরা আন নূর, আয়াত ১৯।

কথিত সভ্যতার দোহাই দিয়ে শরীয়তে নিষিদ্ধ কিছুকে কখনোই গ্রহণের সুযোগ নেই

যারা ইসলামকে সত্যিকার অর্থেই দ্বীনধর্ম হিসেবে মানে তাদের অবশ্যই ইসলামী বিধি-বিধান এবং ধর্মের অধীনে জীবন পরিচালনা করতে হবে। কোন ধরনের সভ্যতা ও কালচারের দোহাই দিয়ে শরীয়তে নিষিদ্ধ এমন কিছুকে কখনোই গ্রহণ করার সুযোগ নেই।

লিভ টুগেদারের খোলসে একে অপরকে বোঝার নামে যুবক-যুবতীদের এক সাথে থাকার যে প্রচলন তৈরি হতে চলেছে, ইসলাম একে কখনো সমর্থন করে না, অনুমোদন দেয় না। অনুমোদন তো দূরের কথা ইসলামে এমন কর্মকাণ্ড পুরোপুরি নিষিদ্ধ ও গর্হিত হিসেবে চিহ্নিত। তাই মুসলিম হিসেবে এসবের কল্পনা করাও উচিত নয়।

লিভ টুগেদার কোনোভাবেই জেনা থেকে মুক্ত নয়

শরীয়তে জেনা দু'ধরনের, হাকিকী ও হুকমি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, চোখের জেনা হলো দেখা, মুখের জেনা হল অশ্লীল কথাবার্তা বলা, হাতের জেনা হলো অন্যায ভাবে কোন কিছু ধরা, পায়ের জেনা হলো, খারাপ কাজের দিকে হেঁটে ধাবিত হওয়া। জেনার যে সব উপকরণ আছে এগুলোও জেনার অন্তর্ভুক্ত। তাই লিভ টুগেদার হয়তোবা সরাসরি জেনার মধ্যে পড়বে অথবা জেনার বিভিন্ন উপায় উপকরণের অন্তর্ভুক্ত হবে। কোনোভাবেই এটা জেনা থেকে মুক্ত নয়।

দেশীয় আইন

বাংলাদেশের সমাজে যেহেতু লিভ টুগেদারের প্রচলন নেই তাই এ নিয়ে আলাদা কোনো আইন নেই। তবে ১৮৬০ সালের ৪৯৭ নং ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশে জেনা-ব্যভিচারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।তবে, লিভ টুগেদার যেহেতু সরাসরি জেনা অথবা জেনার বিভিন্ন উপায় উপকরণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে। সে দিক থেকে ইসলামে নিষিদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে দেশীয় আইনেও লিভ টুগেদার অপরাধ হিসেবেই গণ্য হবে।

বাংলাদেশের আইনে ব্যভিচারের শাস্তি হলো, কারো বিষয়ে ব্যভিচার প্রমাণিত হলে তাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ