বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক (ইবনে শাইখুর হাদিস) বলেছেন, ঈমানদাররা রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম হয়। নামাজ কায়েম হয়। জাকাত বাস্তবায়ন হয়। এগুলো বাস্তবায়নের নির্দেশ সরাসরি আল্লাহ কোরআনের মাধ্যমে দিয়েছেন। যারা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়, তাদের মধ্যে সেকুলারিজম কাজ করে। অর্থাৎ ধর্ম এবং রাষ্ট্রকে আলাদাভাবে পরিচালনা করাই হচ্ছে সেকুলারিজম।
রোববার (৩০ নভেম্বর) রাতে চাঁদপুর শহরের হাসান আলী হাই স্কুল মাঠে জেলা কওমি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সিরাতুন্নবী (সা.) মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের মানুষ সেক্যুলারিজম গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু যদি কোনো মুসলমান ঈমান এবং ইসলাম হৃদয়ে লালন করে, তার দ্বারা সেকুলারিজম সরকার গঠন করা সম্ভব না।
ইবনে শাইখুল হাদিস বলেন, ইসলাম যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার কথা বলেছে, অন্য কোনো ধর্ম সেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার কথা বলে না। তার মতে, একজন মুসলিম কখনোই ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারে না। তাকে অবশ্যই কুরআন এবং সুন্নাহকে অনুসরণ করেই রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। এর ব্যতিক্রম করা তার দ্বারা সম্ভব হবে না।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা যদি ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদের ওপর ভর করে রাষ্ট্র চালাতে চান, তাহলে কোনো ইসলামি দলই আপনাদের সঙ্গে থাকবে না। যারা না বুঝে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বানাতে চায় তারা মূর্খ্য। আর যারা বুঝে শুনে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বানাতে চায়, তারা বেঈমান এবং কাফেরের দল। এরা মূর্খ্য এবং ভণ্ড। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে 'বিসমিল্লাহ' শব্দ সংযোজন করেছিলেন। সেই নেতার অনুসারীরাই এখন ধর্ম এবং রাষ্ট্রকে এক করে দেশ চালাতে চায়। তা কখনোই হতে দেওয়া হবে না।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের এক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী এবং আপনজন। বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক। ৫ আগস্টের পরে দেখলাম তাই হয়েছে। স্বামীর কাছে স্ত্রী ঠিকই চলে গেছে। তাই আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) তার কাছেই নিরাপদ। এসব লজ্জার। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বানাতে গিয়ে তোমরাও তাদের কাছে মাথা বিক্রি করে দিয়েছো। এইসব আর কাউকে করতে দেওয়া হবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনের সিপাহসালার সাইয়্যেদ হোসাইন আহমাদ মাদানী (রহ.)-এর ছোট সাহেবজাদা আওলাদে রাসুল সাইয়্যেদ আসজাদ মাদানী (দেওবন্দ, ভারত), জাফরাবাদ কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা খাজা আহমদ উল্লাহ, মুফতি সিরাজুল ইসলাম, হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের ইমাম মাওলানা কবির আহমদ, চাঁদপুর জেলা কওমি সংগঠনের সভাপতি মুফতি আবু সাঈদ প্রমুখ।
আরএইচ/