শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৪ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
বকেয়া বেতনের দাবিতে ভালুকায় শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ শিশু-কিশোর সংগঠন 'অংকুর' এর সীরাতুন্নবী সা. কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই - খুলনা ইসলামী আন্দোলন  কাতারের মধ্যস্থতায় আফগানিস্তানে কারাবন্দি ব্রিটিশ দম্পতির মুক্তি মাদকের বিরুদ্ধে মুরাদনগরে ওলামা পরিষদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পাকিস্তানে পৃথক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ১১ ইসলামি বইমেলা পরিদর্শনে জাতীয় মসজিদের খতিব প্রাথমিকে গানের নয়, ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে: শায়খে চরমোনাই পীর সাহেব চরমোনাইয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘মিট আপ’ আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটি আবারও নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

মানুষ আল্লাহ’র প্রিয়পাত্র হবে কিভাবে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

allah

মাওলানা ইমরান আনোয়ার: সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার, যিনি আমাদের ইসলামের নেয়ামতে সৌভাগ্যবান করেছেন। দরূদ ও সালাম সে মহামানবের প্রতি, যাকে প্রেরণ করা হয়েছে আমাদের সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা হিসেবে। তিনি পুরো মানব জাতির জন্যই এক জাজ্বল্যমান আলোকবর্তিকা। তাঁর পরিবার, সাথীবর্গ, এবং কেয়ামত পর্যন্ত তাঁদের অনুসারীদের প্রতি রইল শ্রদ্ধা ও শান্তি কামনা। তারপর-

একজন মুসলমানের জীবন এজন্য শ্রেষ্ঠ যে তা সবসময় সৎ কাজ ও ধর্মীয় অনুশাসনে ভরপুর থাকে। সে আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর খোদাভীরুতা তাঁকে বিরামহীন ইবাদাতে মগ্ন করে দেয়। সত্য কথা বলা, ভালো কাজ করা, এবং আল্লাহ তায়ালার প্রতি গভীর ভালবাসার সাধনায় সে নিবেদিত হয়। এই নিবেদনে কোনও দুঃখ-কষ্ট, বিরাগ অথবা অভিমান থাকে না। মোটকথা হল, একজন মুসলমানের জীবন পুরোটাই আল্লাহর ইবাদাত, আনুগত্য, এবং আল্লাহর ‘নৈকট্য লাভ করিয়ে দেয়’ এমন ভালো কাজে ব্যপ্ত হয়। যে কাজে শ্রষ্ঠার সাথে আত্মার মেলবন্ধন ঘটে, জীবনের প্রতিটি অনুভাগে সে কাজের অনুশীলন একজন মুসলিমকে আরো পরিশীলিত করে তুলে।

প্রকৃত মুসলমানের জীবন কখনো ইবাদাত থেকে বিচ্যুত হয় না। এতে করে তাঁর জন্য একটি সৃজনশীল জীবন-পদ্ধতির আবির্ভাব ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, দিনে-রাতে পাঁচবেলা নামাজ। এরমাঝে আবার সপ্তাহে একদিন জুমা’র নামাজ, পুরো বছরে একটি রোজার মাস, এর অনুগামী হয়ে শাওয়ালের ছয়টি মুস্তাহাব রোজা, প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা, মাসের তিনটি মুস্তাহাব রোজা, তারপর আসে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের ইবাদাত; এভাবে সৎ কাজ ও সুন্দর চরিত্রের বিনিময়ে একজন মুসলিম আল্লাহ’র কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে।

এখানেই শেষ নয়। আছে পবিত্র হজ ও কুরবানির সৌন্দর্য। ওমরা পালন, হজ আদায়কারী ব্যতিত অন্যদের আরাফাহ’র দিনে রোজা রাখা, পবিত্র আশুরার দিনে ও এর আগে-পরে মোট দুটি রোজা পালন, বিত্তবান ও সম্পদশালীদের জন্য যাকাতের বাধ্যবাধকতা, অসহায়দের সাহায্য করা ও মানুষের সাথে সদয় আচরণ, বেশি বেশি নফল ইবাদাত, ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ; এসবই একজন মুসলমানের জীবনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে থাকে। আর মানবতা ও ভালোবাসার ছবি প্রতিবিম্ব হয় তাঁর বিনীত অবয়বে। ফলে একজন প্রকৃত মুসলিম অবধারিতভাবে তাঁর সমাজ ও পরিবেশের জন্য হিতৈষী বনে যায়। সাথে তাঁর স্রষ্টারও ভালোবাসা লাভ করে। তবে এটা কোনও নিষ্ফল অথবা গতিহীন জীবনবোধ থেকে নয়, বরং আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যখনই অবসর পাও, কঠোর শ্রমে লেগে যাও।’ সুরা আল-শারহ, আয়াতঃ ৭

তাই ভালো কাজের অনুশীলন একজন মুসলিমকে করতেই হয়।

মুসলমানের জীবনে কিছু বাৎসরিক উৎসব ও ধর্মীয় অনুপ্রেরণা রয়েছে। সেগুলোকে বেশ গুরুত্ব ও যত্নের সাথে পালন করা উচিৎ এবং এ সময়ে অপরিমিতভাবে ভালো কাজ ও শুভ রীতিনীতির চর্চা করা জরুরি। এগুলো তাঁর বৈষয়িক জীবনকেও রাঙ্গিয়ে দেবে এবং তাঁকে একটি দৃঢ় সত্যাশ্রয়ী হৃদয়ের অধিকারী বানাবে। আল্লাহ তো বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে যে সবচেয়ে বেশি তাকওয়ার অধিকারী, আল্লাহ’র কাছে সে-ই সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান”। তাই বলা যায়, তাকওয়া ও ইবাদতের একনিষ্ঠ সংমিশ্রণে একজন মুসলিম আল্লাহ’র সবচেয়ে প্রিয়পাত্র হয়।

লেখক : শিক্ষার্থী, কাতার বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইমাম, মসজিদে শাইখ হামাদ আল-থানি, উম্মে কুরাইবাহ, কাতার।

আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ