আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: প্রধান নির্বাচন কমিশন কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, 'আমরা যদি ক্ষমতায় যেতে পারি' কথাটা রাজনীতিবিদরা প্রায়ই বলে থাকেন। আমি অনেক রাজনীতিবিদকে বলেছিলাম, কথাটা এভাবে না বলে আপনি তো এভাবে বলতে পারেন যে 'আমরা যদি সরকারের দায়িত্বে যেতে পারি'। আগের কথাটার মধ্যে একটা অহংবোধ আছে- ক্ষমতা গিয়ে আমরা দেখাবো বা দেশ চালাবো। ক্ষমতা নয়, এটা দায়িত্ব।
ক্ষমতা বলে কোনো কিছু নেই। আমরা যদি ক্ষমতাকে দায়িত্বের অর্থে বুঝতে ও পালন করতে পারি তাহলে আমাদের দায়িত্ববোধ ও সাংস্কৃতিক মনস্তত্ত্ব আরো উজ্জীবিত হবে।
আজ শুক্রবার (২০ মে) সকাল ১০টায় সাভার উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
উদ্বোধনী আয়োজন করে ঢাকা সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিস ও সাভার উপজেলা প্রশাসন। এর আগে আলোচনা সভায় তিনি ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, অচিরেই বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাবো সংলাপে বা আলোচনায় বসার জন্য। ঠিক করে বলতে পারছি না, হয়ত দুই-এক মাসের মধ্যেই আমরা আলোচনায় বসতে পারি।
তিনি আরও বলেন, ইভিএমের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইভিএমের সক্ষমতা কতটুকু দরকার, আরো কী কী করা যায়, তা নিয়ে আমরা আরো কিছু সভা করবো। এরপরে আমরা ইভিএমের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করবো। আমি একা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না। ৩০০ আসনে সক্ষমতা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন বলা সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দেওয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমরা নতুন একটি কমশিন। আমাদের আন্তরিক প্রত্যাশা যে, একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। গণতন্ত্র বিকশিত হোক। ভোটের মাধ্যমে একটা দায়িত্বশীল পার্লামেন্ট গঠিত হোক। পার্লামেন্টে তর্ক-বির্তকের মাধ্যমে জনগণের অধিকার সংরক্ষিত হোক।
এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। তিনি বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ আজকে শুরু হয়েছে যা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ম্যান্ডেট। ভোটার তালিকা প্রণয়ন এটি অন্যতম মূল কাজ। ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্য আমরা তিন ধরনের তথ্য গ্রহণ করছি। ভোটার তালিকা প্রণয়ন হবে ২০২৩ সালের ২ মার্চ। এই ভোটার তালিকা দিয়েই কিন্তু আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই এই ভোটার তালিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের এক্সিকিউটিভ যারা আছেন, তারা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে বাধ্য। আপনারা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ করবেন। ট্রান্সজেন্ডার ও নিষিদ্ধ পল্লীর মা-বোনদেরও কিন্তু এই তালিকায় আনার জন্য আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। কীভাবে নিয়ে আসবেন সে বিষয়ে আমরা প্রশিক্ষণও দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, সাভারে প্রায় ৩৮০ জন তথ্যসংগ্রহকারী, ৭৬ জন সুপারভাইজার, সরকারি কর্মকর্তা ও রেজিস্ট্রেশন অফিসার আছেন। সংবিধানে বলা আছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। আমরা মনে করি, এই কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে এবং আমরা জাতিকে একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন ভোটার তালিকা উপহার দিতে পারবো।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার, ঢাকা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন, সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব, সাভার পৌর মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল গণি, সাভারের ইউএনও মাজহারুল ইসলাম ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
এনটি